দেশসেরা চিত্রনায়ক শাকিব খানের বিপরীতে ‘প্রিয়তমা’ সিনেমায় অভিনয় করে খ্যাতি কুড়ান ওপার বাংলার অভিনেত্রী ইধিকা পাল। কিছুদিন ধরে গুঞ্জন উড়ছে, শাকিবের ‘প্রিন্স: ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন ঢাকা’ সিনেমায়ও অভিনয় করবেন এই অভিনেত্রী। কিন্তু সিনেমাটির জন্য ২৮ লাখ রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৮ লাখ টাকার বেশি) দাবি করেছেন এই অভিনেত্রী। এ নিয়ে বেশ কটি গণমাধ্যমে খবরও প্রকাশিত হয়েছে। 

ইধিকা পালের পারিশ্রমিক নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ চর্চা চলছে। টাকার পরিমাণ দেখে নেটিজেনদের অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। যদিও বিষয়টি মুখ খুলেননি ইধিকা। তবে নীরবতা ভেঙেছেন ‘প্রিন্স’ সিনেমার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ক্রিয়েটিভ ল্যান্ড ফিল্মস। বিষয়টি নিয়ে প্রতিষ্ঠান একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে।  

আরো পড়ুন:

‘রাক্ষস’ ছেড়ে ‘বনলতা এক্সপ্রেস’-এ সাবিলা নূর

শাকিবের সিনেমা নিয়ে যে হাইপ তোলা হয়, তা ভুয়া: ইকবাল

এ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ক্রিয়েটিভ ল্যান্ড ফিল্মস প্রযোজিত ‘প্রিন্স: ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন ঢাকা’ সিনেমায় মেগাস্টার শাকিব খান ছাড়া অন্য আর্টিস্টদের নাম আমরা ঘোষণা করিনি। মৌখিকভাবে অনেকের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হলেও কারো সঙ্গে লিখিত চুক্তি হয়নি। তার আগেই চূড়ান্ত না হওয়া শিল্পী ও তাদের পারিশ্রমিক নিয়ে বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে সম্প্রতি প্রকাশিত নিউজ আমাদের নজরে এসেছে, যা ভিত্তিহীন। একই সাথে বিষয়টি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের জন্যেও বিব্রতকর। 

এ সিনেমার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর বিষয়টি উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “শিল্পী ও সিনেমা সম্পর্কিত সবকিছু আমরা অফিশিয়ালি জানাব। শুরু থেকে ‘প্রিন্স’ সিনেমা নিয়ে সংবাদকর্মী থেকে দর্শকদের আগ্রহ ও সমর্থন আমাদের মুগ্ধ করেছে। আপনাদের প্রত্যাশা পূরণে আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি।” 

কয়েক মাস আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুঞ্জন উঠেছিল—‘প্রিন্স’ সিনেমার জন্য ৩ কোটি টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছেন শাকিব খান। এ নিয়ে শাকিব খান ও নির্মাতা আবু হায়াত মাহমুদ নীরব থাকলে মুখ খুলেন সিনেমাটির প্রযোজক, ক্রিয়েটিভ ল্যান্ডের কর্ণধার শিরিন সুলতানা। তিনি বলেন, “এটা তার প্রাপ্য।” যদিও শাকিবের ৩ কোটি টাকা পারিশ্রমিক নেওয়ার বিষয়টি পরিষ্কার করেননি এই প্রযোজক। 

‘প্রিন্স’ দিয়ে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে অভিষেক হতে যাচ্ছে আবু হায়াত মাহমুদের। এর আগে অসংখ্য টিভি নাটক নির্মাণ করেছেন তিনি। তাছাড়া ‘প্রিন্স’ সিনেমা দিয়ে প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে ক্রিয়েটিভ ল্যান্ড। 

কলকাতার মডেল ও টিভি অভিনেত্রী ইধিকা পালের নৃত্যশিল্পী হিসেবেও খ্যাতি রয়েছে। তার অভিনীত প্রথম ধারাবাহিক নাটক ‘কপালকুণ্ডলা’। স্টার জলসায় প্রচারিত এ ধারাবাহিকে ‘পদ্মাবতী’ চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়ান।  

পরবর্তীতে ‘রিমলি’ ধারাবাহিকে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন। তা ছাড়াও দুটি জনপ্রিয় ধারাবাহিকে খলনায়িকার চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইধিকা। তবে ২০২৩ সালে ‘প্রিয়তমা’ সিনেমায় অভিনয় করে রাতারাতি তারকা বনে গিয়েছেন এই অভিনেত্রী। 

গত বছর ‘খাদান’ সিনেমার মাধ্যমে ভারতীয় বাংলা সিনেমায় অভিষেক ঘটে ইধিকার। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন টলিউড সুপারস্টার দেব। এরপর একই নায়কের বিপরীতে ‘রঘু ডাকাত’ সিনেমায় অভিনয় করেন এই অভিনেত্রী। বর্তমানে ‘প্রজাপতি টু’ ও ‘কবি’ নামে দুটো সিনেমার কাজ ইধিকার হাতে রয়েছে।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র কর ছ ন প রক শ ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে উৎসবমুখর পরিবেশে নবীন বরণ

বর্ণাঢ্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে নবীন বরণ অনুষ্ঠান।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকেই কলেজ প্রাঙ্গণ মুখর হয়ে ওঠে নবীন শিক্ষার্থীদের আগমন আর উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে। আনন্দ, উচ্ছ্বাস,ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে দিনব্যাপী এই আয়োজনে নবাগত শিক্ষার্থীদের বরণ করা হয়। 

কলেজ প্রাঙ্গণজুড়ে ছিল বর্ণিল সাজসজ্জা। প্রধান ফটক থেকে শুরু করে একাডেমিক ভবন সব জায়গায় করা হয়েছে রঙিন সাজসজ্জা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই পার করেছে এক আনন্দমুখর সময়। 

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে নবীন শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। এসময় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও গীতা পাঠ করা হয়।

আলোচনা পর্বের বক্তব্যে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, “শিক্ষাজীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হলো আজ। নিয়মিত অধ্যয়ন, নৈতিকতা ও মানবিক গুণাবলির সমন্বয়ে তোমরাই আগামী দিনের আলোকবর্তিকা।

নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ শুধু শিক্ষার নয়, শৃঙ্খলা ও মানবিক মূল্যবোধের প্রতীক। নবীনদের সক্রিয় অংশগ্রহণে এই ঐতিহ্য আরও সমৃদ্ধ হবে।”

তিনি আরও বলেন, “এই কলেজের প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন শুধু ভালো ফলই না করে, বরং সৎ, ন্যায়ের পক্ষে ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।”

দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুগ্ধতা ছড়ায় শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় নাচ, গান, আবৃত্তি, রম্য বিতর্ক ও ফ্যাশন শো যা অনুষ্ঠানকে আরও প্রানবন্ত করে তোলে।  দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী অদ্রি আবৃত্তি করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জনপ্রিয় কবিতা ‘বোঝাপড়া’।

একাদশ শ্রেণির ঊর্মি ও মাহী পরিবেশন করে দ্বৈত নৃত্য, যা উপস্থিত দর্শকদের করতালিতে মুখরিত করে তোলে সমগ্র অনুষ্ঠানস্থল।

ডিবেটিং ক্লাবের সদস্যরা পরিবেশন করেন রম্য বিতর্ক “আমার দেশে আমিই সেরা” যেখানে রসিকতা ও বুদ্ধিদীপ্ত সংলাপে হাস্যরসের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এছাড়াও ঊর্মি ও তিশার দ্বৈত নৃত্য অনুষ্ঠানে বিশেষ নজর কাড়ে। 

অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ফ্যাশন শো। এ বছরের থিম ছিল— “সমাজে প্রান্তিক বা সুবিধাবঞ্চিত নারীদের অবস্থান”। শিক্ষার্থীরা পোশাক ও উপস্থাপনার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলেন সমাজের প্রান্তিক নারীদের সংগ্রাম, আত্মমর্যাদা ও জীবনের বাস্তব চিত্র।

পোশাকের নকশা, রঙ ও ভাবনায় ফুটে ওঠে নারীর শক্তি, সাহস ও সমতার বার্তা। দর্শক ও অতিথিরা প্রশংসা করেন শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও সচেতন চিন্তাধারা।

নবীন শিক্ষার্থীরা এই আয়োজনে অংশ নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। একাদশ শ্রেণির নবীন শিক্ষার্থী সায়মা ইসলাম মালিহা বলেন, “আজকের দিনটি আমার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় দিন। কলেজের পরিবেশ, শিক্ষকদের আন্তরিকতা এবং সিনিয়রদের ভালোবাসা আমাদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। মনে হচ্ছে আমি সত্যিই নতুন জীবনের এক সুন্দর অধ্যায়ে প্রবেশ করেছি।”

আরেক নবীন শিক্ষার্থী তাবাসসুম তিথি বলেন, “আজ আমাদের কলেজে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেওয়া হলো। নতুন বন্ধুদের সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং এত সুন্দর আয়োজনের অংশ হতে পারা সত্যিই আনন্দের।”

পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন কলেজের সাংস্কৃতিক দলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করে বিএনসিসি ও গার্ল গাইডের সদস্যরা।

এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবেরা তাহমিনা, অতিথি হিসেবে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ফজলুল হক রুমন রেজা, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, রণদা প্রসাদ সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও মানবাধিকার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও প্রক্টর ড. সেলিনা আক্তার, একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আরিফুর রহমানসহ মহিলা কলেজের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ