শাপলা আর শাপলা কলি এক নয়: ইসি সচিব
Published: 30th, October 2025 GMT
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, ‘শাপলা আর শাপলা কলির মধ্যে পার্থক্য আছে। এটা আমার মনে হয় ব্যখ্যার অবকাশ রাখে না।’ কমিশনের প্রতীক তালিকায় এটি যুক্ত করার ক্ষেত্রে কারও দাবির বিষয়টিও নাকচ করে দেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন ভবনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন ইসি সচিব। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় ও প্রাক্-প্রস্তুতিমূলক সভা শেষে এই ব্রিফিং করেন তিনি।
এর আগে বৃহস্পতিবার ইসি নতুন একটি প্রতীক তালিকা প্রকাশ করে। নতুন প্রকাশিত এ তালিকায় ‘শাপলা কলি’সহ বেশ কিছু প্রতীক সংযোজন ও বিয়োজন করা হয়।
উল্লেখ্য, ইসির প্রতীক তালিকায় না থাকায় শাপলা প্রতীক দেওয়া যাবে না বলে এত দিন বলে আসছিল ইসি। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে ইসি সচিব বলেন, নতুন যে প্রতীক তালিকা, সেখানে শাপলা কলি রাখা হয়েছে। ইলেকশন কমিশন মনে করেছে, শাপলা কলিটা রাখা যেতে পারে। এখানে কারও কোনো দাবির বিষয় তো প্রাসঙ্গিক না।
আখতার আহমেদ আরও বলেন, ‘একটা রাজনৈতিক দল যেটা এনসিপি (জাতীয় নাগরিক পার্টি), তারা শাপলা প্রতীক চেয়েছে। শাপলা আর শাপলা কলির ভেতরে পার্থক্য আছে। এটা আমার মনে হয় ব্যাখ্যার অবকাশ রাখে না।’
কিসের ভিত্তিতে শাপলা কলি প্রতীক যুক্ত করা হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘কিছু প্রতীক সম্পর্কে বিরূপ কিছু মতামত আমাদের কানে আসছে। সেই জিনিসগুলো কমিশন মনে করেছে, এটা সংশোধন করা দরকার বা করা যেতে পারে। সে বিবেচনায় এটা করেছে।’
আরও পড়ুন‘শাপলা কলি’ যুক্ত হলো ইসির প্রতীক তালিকায়২ ঘণ্টা আগেনভেম্বরে গণভোটের দাবিতে আটটি রাজনৈতিক দল আজ প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে ইসির অবস্থান তুলে ধরে সচিব বলেন, ‘ওনারা বলেছেন যে তাঁরা নভেম্বরে গণভোট চান। আমরা শুনেছি। গণভোটের বিষয় গতকাল (বুধবার) পেপারে হেডলাইন (পত্রিকার শিরোনাম) ছিল যে সরকার সিদ্ধান্ত দেবে; সরকার সিদ্ধান্ত দিক।’
বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় প্রসঙ্গে ইসি সচিব জানান, আলোচনায় নির্বাচনের আগে দেশের আইনশৃঙ্খলা উন্নতি, বিভিন্ন রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো নির্মাণ, নির্বাচনের দিন নির্বিঘ্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, ক্লাস্টার মেডিকেল টিম করা, পোস্টাল ব্যালট, এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা)–সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সময় যাতে পাবলিক পরীক্ষাগুলোর সময় নিয়ে জটিলতা না হয়, সে বিষয়গুলো উঠে আসে।
আরও পড়ুন‘শাপলা কলি’ নয়, ‘শাপলা’র প্রশ্নে আপসহীন এনসিপি৫৪ মিনিট আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে উৎসবমুখর পরিবেশে নবীন বরণ
বর্ণাঢ্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে নবীন বরণ অনুষ্ঠান।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকেই কলেজ প্রাঙ্গণ মুখর হয়ে ওঠে নবীন শিক্ষার্থীদের আগমন আর উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে। আনন্দ, উচ্ছ্বাস,ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে দিনব্যাপী এই আয়োজনে নবাগত শিক্ষার্থীদের বরণ করা হয়।
কলেজ প্রাঙ্গণজুড়ে ছিল বর্ণিল সাজসজ্জা। প্রধান ফটক থেকে শুরু করে একাডেমিক ভবন সব জায়গায় করা হয়েছে রঙিন সাজসজ্জা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই পার করেছে এক আনন্দমুখর সময়।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে নবীন শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। এসময় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও গীতা পাঠ করা হয়।
আলোচনা পর্বের বক্তব্যে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, “শিক্ষাজীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হলো আজ। নিয়মিত অধ্যয়ন, নৈতিকতা ও মানবিক গুণাবলির সমন্বয়ে তোমরাই আগামী দিনের আলোকবর্তিকা।
নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ শুধু শিক্ষার নয়, শৃঙ্খলা ও মানবিক মূল্যবোধের প্রতীক। নবীনদের সক্রিয় অংশগ্রহণে এই ঐতিহ্য আরও সমৃদ্ধ হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এই কলেজের প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন শুধু ভালো ফলই না করে, বরং সৎ, ন্যায়ের পক্ষে ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুগ্ধতা ছড়ায় শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় নাচ, গান, আবৃত্তি, রম্য বিতর্ক ও ফ্যাশন শো যা অনুষ্ঠানকে আরও প্রানবন্ত করে তোলে। দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী অদ্রি আবৃত্তি করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জনপ্রিয় কবিতা ‘বোঝাপড়া’।
একাদশ শ্রেণির ঊর্মি ও মাহী পরিবেশন করে দ্বৈত নৃত্য, যা উপস্থিত দর্শকদের করতালিতে মুখরিত করে তোলে সমগ্র অনুষ্ঠানস্থল।
ডিবেটিং ক্লাবের সদস্যরা পরিবেশন করেন রম্য বিতর্ক “আমার দেশে আমিই সেরা” যেখানে রসিকতা ও বুদ্ধিদীপ্ত সংলাপে হাস্যরসের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এছাড়াও ঊর্মি ও তিশার দ্বৈত নৃত্য অনুষ্ঠানে বিশেষ নজর কাড়ে।
অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ফ্যাশন শো। এ বছরের থিম ছিল— “সমাজে প্রান্তিক বা সুবিধাবঞ্চিত নারীদের অবস্থান”। শিক্ষার্থীরা পোশাক ও উপস্থাপনার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলেন সমাজের প্রান্তিক নারীদের সংগ্রাম, আত্মমর্যাদা ও জীবনের বাস্তব চিত্র।
পোশাকের নকশা, রঙ ও ভাবনায় ফুটে ওঠে নারীর শক্তি, সাহস ও সমতার বার্তা। দর্শক ও অতিথিরা প্রশংসা করেন শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও সচেতন চিন্তাধারা।
নবীন শিক্ষার্থীরা এই আয়োজনে অংশ নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। একাদশ শ্রেণির নবীন শিক্ষার্থী সায়মা ইসলাম মালিহা বলেন, “আজকের দিনটি আমার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় দিন। কলেজের পরিবেশ, শিক্ষকদের আন্তরিকতা এবং সিনিয়রদের ভালোবাসা আমাদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। মনে হচ্ছে আমি সত্যিই নতুন জীবনের এক সুন্দর অধ্যায়ে প্রবেশ করেছি।”
আরেক নবীন শিক্ষার্থী তাবাসসুম তিথি বলেন, “আজ আমাদের কলেজে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেওয়া হলো। নতুন বন্ধুদের সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং এত সুন্দর আয়োজনের অংশ হতে পারা সত্যিই আনন্দের।”
পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন কলেজের সাংস্কৃতিক দলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করে বিএনসিসি ও গার্ল গাইডের সদস্যরা।
এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবেরা তাহমিনা, অতিথি হিসেবে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ফজলুল হক রুমন রেজা, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, রণদা প্রসাদ সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও মানবাধিকার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও প্রক্টর ড. সেলিনা আক্তার, একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আরিফুর রহমানসহ মহিলা কলেজের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।