বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির বলেন, ‘আমাদের দেশে দুর্নীতির প্রসার হয়েছে বিভিন্ন কারণে। একটা হলো আমরা জবাবদিহি দেশ থেকে অবলুপ্ত করে দিয়েছি, নির্বাচনী ব্যবস্থা থেকে বের হয়ে এসেছি। এখন যারা সরকার গঠন করে, তাদের ভোটারের কাছে আসা লাগে না দীর্ঘদিন ধরে। আগে দুর্নীতি ছিল না, তা বলব না। তবে দুর্নীতি দূর করতে সব থেকে জবাবদিহির সংস্কৃতি চালু করা জরুরি প্রয়োজন।’

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেট নগরের মেন্দিবাগ এলাকার জালালাবাদ গ্যাস মিলনায়তনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। ‘নীতি নির্ধারণে তরুণ ভাবনা: সংলাপে খন্দকার মুক্তাদির’ শীর্ষক ব্যতিক্রমী এ আয়োজনে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে তিনি মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি তাঁদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

খন্দকার আবদুল মুক্তাদির গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে সিলেট-১ (নগর ও সদর) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এবারও তিনি এ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী। তিনি বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপি বিজয়ী হলে তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থান নিশ্চিতের পাশাপাশি তাঁদের চিন্তাভাবনা ও পরামর্শ কাজে লাগানো হবে। তাঁদের মতামতকেও রাষ্ট্র সমান গুরুত্ব দেবে।

মতবিনিময় সভায় তরুণ-তরুণীরা দেশ, রাষ্ট্র, সমাজ ও নির্বাচন নিয়ে তাঁদের বক্তব্য উপস্থাপনের পাশাপাশি নানা ধরনের পরামর্শ ও সুপারিশ দেন। তাঁদের ভাবনাগুলো অভিনব ও গ্রহণযোগ্য জানিয়ে এ সময় খন্দকার আবদুল মুক্তাদির এসব বাস্তবায়নে বিএনপি কাজ করবে বলে উল্লেখ করেন।

রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিবিদদের নিয়ে তরুণদের মনোভাব সম্পর্কে খন্দকার আবদুল মুক্তাদির বলেন, ‘তাঁদের অনেকেই মনে করেন, রাজনীতি ভালো জিনিস নয়। যাঁরা রাজনীতি করেন, তাঁরা সবাই চালাক ধরনের লোক, ধান্ধাবাজ লোক। তাঁদের কাজই হলো দুর্নীতি করা আর দেশকে ব্যবহার করে নিজের ক্ষমতা সুসংহত করা অথবা অর্থকড়ি আয় করা। এই ছিল সাধারণ মনোভাব। কিন্তু এই মনোভাব থেকে যদি আপনারা দূরে সরে থাকেন, তাহলে দেশের ভালো–মন্দের ব্যাপারে আপনাদের মনোভাব, সচেতনতা বা পাবলিক প্রেশার যদি এর সঙ্গে যুক্ত না করেন, তাহলে এর ফলাফল কি কখনো চিন্তা করেছেন?’

আবদুল মুক্তাদির বলেন, ‘আমরা ধরে নিচ্ছি, যাঁরা রাজনীতি করেন, তাঁরা খারাপ লোক। এখন আপনারা যাঁরা ভালো লোক, তাঁরাও আসবেন না রাজনীতিতে। তাহলে পরিণামটা কী দাঁড়াল? আপনি এমন ব্যবস্থায় অ্যাগ্রি (একমত) করে ফেললেন যে আপনার থেকে কম মানের, কম গুণের, কম বুদ্ধির লোকেরা আপনাকে শাসন করবে। এর লাইসেন্স কিন্তু আপনারা দিয়ে দিলেন। দিয়ে দিলেন না? তো, এই লাইসেন্স না দেওয়ার মানে হচ্ছে, আপনি রাজনীতিতে অংশ নেবেন অথবা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় আপনার একটা বলিষ্ঠ কণ্ঠ থাকবে, যেন আপনার মতামতের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দল, রাজনীতিবিদ ও রাষ্ট্র বাধ্যবাধকতায় থাকে।’

সরকারের নীতি নির্ধারণে তরুণদের পরামর্শ কাজে লাগাতে হবে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ভবিষ্যতে যে সরকারই আসুক, তারা তো বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গিয়ে, অন্যান্য কাজ পরিচালনা করতে গিয়ে সরকারকে অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রসেস আমাদের অনেকের জানা নেই। এসব জেনে তরুণদের সে ক্ষেত্রে পরামর্শ দিতে হবে।’

খন্দকার আবদুল মুক্তাদির তরুণদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজের পরিবহনসংকট থেকে শুরু করে সামাজিক উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, শিক্ষাসহ নানা বিষয়ে মতামত তুলে ধরেন। ভবিষ্যতে বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে তরুণদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে যাবতীয় সমস্যা দূর করতে আন্তরিকভাবে কাজ করবে বলেও তিনি জানান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মন ভ ব র জন ত দ র কর সরক র আপন র মত মত ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

আকিজ ভেঞ্চারের হাত ধরে দেশে স্প্যানিশ ব্র্যান্ড সিমনের যাত্রা শুরু

বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করল স্পেনের অন্যতম বৈশ্বিক ব্র্যান্ড সিমন। ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্বের নানা দেশে সুইচ, সকেট, লাইটিং ও স্মার্ট হোম সলিউশন তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে সিমন। স্প্যানিশ ব্র্যান্ডটিকে নিয়ে এসেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী আকিজ ভেঞ্চার গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান আকিজ ইলেকট্রিকস অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস লিমিটেড।

সিমন ব্র্যান্ডের যাত্রা শুরু উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সিমনের প্রিমিয়াম সুইচ, সকেট ও স্মার্ট হোম সলিউশন সিরিজের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। অনুষ্ঠানে আকিজ ভেঞ্চার গ্রুপের চেয়ারম্যান শেখ শামীম উদ্দিন এবং সিমন গ্রুপের স্ট্র্যাটেজি ডিরেক্টর কিম, সিমন এপ্যাকের বিজনেস ডিরেক্টর ডেরেক দাইসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সিমন ব্র্যান্ড ১৯১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি বর্তমানে বিশ্বের ৯০টির বেশি দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এবার আকিজ ভেঞ্চার গ্রুপের সঙ্গে অংশীদারির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশেও নিয়ে এল নান্দনিক নকশা, আধুনিক প্রযুক্তি ও স্মার্ট লাইফস্টাইলের নতুন অভিজ্ঞতা।

এ উপলক্ষে আগামীকাল শুক্রবার ও পরশু শনিবার সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সোনারগাঁও হোটেলের দ্বিতীয় তলার পদ্মা হলে অনুষ্ঠিত হবে ‘আকিজ ইলেকট্রিক্যালস সেফটি অ্যান্ড ইনোভেশন ফেস্ট’, যা সবার জন্য উন্মুক্ত। এতে প্রদর্শিত হবে স্মার্ট হোম সিস্টেম, লাইটিং, সুইচ-সকেট, হোম অ্যাপ্লায়েন্স এবং বিভিন্ন ধরনের গ্যাজেট পণ্য।

অনুষ্ঠানে আকিজ ভেঞ্চার গ্রুপের চেয়ারম্যান শেখ শামীম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে সিমনের ১০৯ বছরের অভিজ্ঞতা ও উদ্ভাবন এখন বাংলাদেশে। আমরা বিশ্বাস করি, এটি দেশের ভোক্তাদের জন্য নিরাপদ, আধুনিক ও প্রিমিয়াম ইলেকট্রিক্যাল সলিউশন নিশ্চিত করবে। ইউরোপীয় স্মার্ট প্রযুক্তি ও সর্বোচ্চ নিরাপদ মানের মাধ্যমে আমরা দেশের ইলেকট্রিক্যাল শিল্পে নতুন মানদণ্ড স্থাপন করব। আর এসব পণ্যের দাম সবার সাধ্যের মধ্যে থাকবে। মান নিয়ে আপস করায় দুর্ঘটনা ঘটে। তাই আমরা মানসম্মত পণ্য নিয়ে এসেছি।’

আকিজ ভেঞ্চার গ্রুপ জানায়, চীনের উৎপাদন কেন্দ্র থেকে সিমনের পণ্যগুলো বাংলাদেশে আসবে। এশিয়ার দেশগুলোতে চীন থেকেই পণ্য সরবরাহ করে সিমন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ