জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের করা তদন্ত প্রতিবেদন ও সুপারিশের ওপর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুর ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটোরিয়ামে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

আরো পড়ুন:

শাকসুর নির্বাচন কমিশন ঘোষণা

শাকসুর রোডম্যাপের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি

অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) এবং সহযোগিতায় ছিলেন ইউএন রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটরস অফিস (ইউএনআরসিও)।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.

এএম সরওয়ার উদ্দিন চৌধুরী।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাজেদুল করিম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ইসমাইল হোসেন, রাজনৈতিক অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. সাহাবুল হক ও অধ্যাপক ড. দিলারা রহমান।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস অফিসার জাহিদুল হোসেন।

তিনি বলেন, “ইউএন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্টে আমরা বাংলাদেশ সরকারকে মোট ৪৩টি সুপারিশ করেছি। এ সুপারিশগুলো সবার পড়া উচিত। পহেলা জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যা ঘটেছে, জাতিসংঘ সেটিকে মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে চিহ্নিত করেছে।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা এই আয়োজন বিশ্ববিদ্যালয়ে করছি, কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই রাষ্ট্রের মস্তিষ্ক। রাষ্ট্র হলো শরীর, আর ছাত্ররা দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। বাংলাদেশের দুই ধরনের অপরাধ আছে— দেওয়ানী ও ফৌজদারি। ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির সংঘাত মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, কিন্তু রাষ্ট্র যখন জনগণের ওপর দমন-পীড়ন চালায়, তখনই মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটে। রাষ্ট্র যদি কোনো সিস্টেমকে দমন বা হরণ করে, তখন তা মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হয়।”

জাহিদুল হোসেন আরও বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হেলমেট বাহিনী যে সহিংসতা ঘটিয়েছে, তা ব্যক্তিকেন্দ্রিক নয়, কারণ রাষ্ট্র তাদেরকে সহযোগিতা দিয়েছে। জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্ট আকাশ থেকে পড়েনি—বাংলাদেশে যা ঘটেছে, সেটিই এখানে প্রতিফলিত হয়েছে। তাই এই রিপোর্ট সবাইকে পড়া উচিত।”

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এম. সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশে এক অদ্ভুত ধরনের সরকারের বিরুদ্ধে এই বিপ্লব হয়েছিল— আয়নাঘর সরকার, রাতের ভোটের সরকার। যারা এ সরকারের পতনে ভূমিকা রেখেছেন, তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। জুলাই চেতনা ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। শেখ হাসিনার ভুয়া ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে বেরিয়ে এসে সত্যিকার জনগণের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।”

এছাড়া অনুষ্ঠানে জুলাই বিপ্লবে শহীদ নয়া দিগন্তের সিলেট ব্যুরো প্রধান তুরাবের বড় ভাই আবদুল জাবের উপস্থিত থেকে স্মৃতিচারণ ও বক্তব্য রাখেন।

সেমিনার শেষে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্টভিত্তিক প্রকাশনা, মানবাধিকার সংক্রান্ত বই, নীতিমালা ও স্মারক টি-শার্ট বিতরণ করা হয়।

ঢাকা/ইকবাল/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ল ই গণঅভ য ত থ ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

১২৮ জুলাই যোদ্ধার গেজেট বাতিল

মিথ্যা তথ্য দিয়ে গেজেটভুক্ত হওয়া এবং একই ব্যক্তির নামে একাধিকবার নাম থাকা অভিযোগে ১২৮ জন ‘জুলাই যোদ্ধা’র গেজেট বাতিল করেছে সরকার।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতারণার মাধ্যমে গেজেটভুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

আরো পড়ুন:

সর্বাত্মক ফ্যাসিবাদ কায়েম হয় ২০১৪ সন থেকে: সলিমুল্লাহ খান

বীর মুক্তিযোদ্ধাকে নানা সাজিয়ে পুলিশে চাকরি

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তালিকায় কয়েকজন প্রকৃতপক্ষে আহত ছিলেন না বা আন্দোলনে অংশ নিয়েও আহত হননি। আবার কারো নাম একাধিকবার গেজেটে এসেছে। জেলা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ময়মনসিংহে ২১ জন, সিলেটে ২৭ জন, চট্টগ্রামে ৩৯ জন, খুলনায় নয়জন, রংপুরে তিনজন, ঢাকায় ১৪ জন, রাজশাহীতে ১৩ জন ও বরিশালে দুইজনসহ মোট ১২৮ জনের গেজেট বাতিল করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় জানায়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের ‘জুলাই শহীদ’ এবং আহতদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে সরকার স্বীকৃতি দিয়েছে। এদের জন্য এককালীন আর্থিক সহায়তা ও মাসিক ভাতার ব্যবস্থা রয়েছে।

সরকার এখন পর্যন্ত ৮৪৪ জন জুলাই শহীদের গেজেট প্রকাশ করেছে, যার মধ্যে আটজনের গেজেট পরে বাতিল হয়। এছাড়া আহতদের মধ্যে ক-শ্রেণিতে ৬০২ জন, খ-শ্রেণিতে ১ হাজার ১১৮ জন এবং গ-শ্রেণিতে ১২ হাজার ৩৮ জনের নাম প্রকাশিত হয়েছে।

ক-শ্রেণির আহতরা এককালীন ৫ লাখ টাকা ও মাসিক ২০ হাজার টাকা, খ-শ্রেণিররা ৩ লাখ টাকা ও মাসিক ১৫ হাজার টাকা এবং গ-শ্রেণির আহতরা ১ লাখ টাকা ও মাসিক ১০ হাজার টাকা ভাতা পাচ্ছেন।

মন্ত্রণালয় জানায়, প্রতারণার মাধ্যমে তালিকাভুক্ত হয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাৎকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা/এএএম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১২৮ জুলাই যোদ্ধার গেজেট বাতিল