ইস্তাম্বুলে পুনরায় শুরু হতে পারে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের শান্তি আলোচনা
Published: 30th, October 2025 GMT
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে ইস্তাম্বুলে শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছেন।
২০২১ সালে কাবুলে তালেবান ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে সীমান্তে ভয়াবহ সহিংসতায় সম্প্রতি কয়েক ডজন লোক নিহত হয়। এর পর দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশীদের মধ্যে স্থায়ী শান্তি অর্জনের লক্ষ্যে চলতি সপ্তাহে তুরস্কে শান্তি আলোচনার আয়োজন করা হয়েছিল। তবে মঙ্গলবার কোনো সমাধান ছাড়াই সেই আলোচনা শেষ হয়।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছে, আলোচনা ভেঙে গেলেও যুদ্ধবিরতি মূলত বহাল রয়েছে এবং চলতি সপ্তাহে নতুন কোনও সীমান্ত সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি। তবে, উভয় দেশই প্রধান ক্রসিং বন্ধ রেখেছে, যার ফলে উভয় পক্ষের শত শত পণ্যবাহী ট্রাক এবং শরণার্থী আটকা পড়েছে।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ জিও নিউজ চ্যানেলকে জানিয়েছেন, কাতার ও তুরস্কের অনুরোধে পাকিস্তান শান্তিকে আরেকটি সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত রাতে দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত পাকিস্তানি প্রতিনিধিদলকে ইস্তাম্বুলে থাকতে বলা হয়েছে।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন অনুসারে, ইসলামাবাদ জানিয়েছে যে আলোচনা পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় দাবির ভিত্তিতে হবে। ইসলামাবাদের মূল দাবি হচ্ছে, আফগানিস্তান সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে স্পষ্ট, যাচাইযোগ্য এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম আরটিএ জানিয়েছে, তুরস্ক ও কাতারের মধ্যস্থতায় ইস্তাম্বুলে স্থগিত আলোচনা পুনরায় শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
ইসলামাবাদের দুইজন ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানিয়েছেন, পাকিস্তান আবারো জোর দিয়েছে যে আফগান মাটি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসবাদ’ হিসাবে ব্যবহৃত হওয়া উচিত নয়।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আফগ ন স ত ন
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুতে আরও ১৩ পদ সংযুক্তি চায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল শিক্ষার্থী সংসদসমূহের গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা, ২০২৫–এর সংশোধনী চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। গঠনতন্ত্রে আরও ১৩টি পদ সংযুক্তির দাবি জানিয়েছে তারা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ছাত্রদল জকসু গঠনবিধিতে ১০টি নতুন সম্পাদক পদ সৃষ্টির দাবি জানিয়েছে। পদগুলোর মধ্যে রয়েছে, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থী বিষয়ক সম্পাদক, শুধু নারীদের জন্য বরাদ্দকৃত ছাত্রীকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক, দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক, ধর্ম ও সম্প্রীতি বিষয়ক সম্পাদক, মিডিয়া ও যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদক এবং বিতর্ক সম্পাদক।
পাশাপাশি বর্তমান স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদকে বিভক্ত করে স্বাস্থ্য সম্পাদক ও পরিবেশ সম্পাদক এই দুটি আলাদা পদ সৃষ্টির দাবি তুলেছে ছাত্রদল। একইভাবে সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদটিকে ভেঙে সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পাদক—এই দুটি পৃথক পদ গঠনের প্রস্তাব করেছে। কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক পদ সৃষ্টিরও দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
এ ছাড়া বর্তমান সংবিধিতে উল্লিখিত সদস্যপদগুলোর সাথে আরও তিনটি নতুন সদস্যপদ যুক্ত করে ১০টি সদস্যপদ করার প্রস্তাব করেছে ছাত্রদল।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি), শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরে ২৭ অক্টোবর জকসুর সংবিধি চূড়ান্ত হয়। সংবিধিতে জকসুতে ২১টি পদ রাখা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ছাত্রদল বলেছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। সেশনজট, গবেষণা সংকট, আবাসন ও পরিবহন সমস্যা, ক্যানটিন ও লাইব্রেরির সীমাবদ্ধতার মতো ইস্যুগুলো দীর্ঘদিনের। ছাত্রদলের চাওয়া, জকসু শুধু রাজনৈতিক নয়, শিক্ষার্থীদের বাস্তব জীবনের সমস্যা সমাধানের প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠবে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর ইউজিসিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল স্মারকলিপি প্রদান করে। স্মারকলিপিতে জকসুর সংবিধিতে পদ সংযোজন করার দাবি জানানো হয়েছিল। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসনের সুযোগ না থাকায় বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বাসাবাড়িতে থাকেন। শুধু একটি ছাত্রী হল রয়েছে, সেখানে সংকট সীমাহীন। যেহেতু হল নেই, সেখানে ছাত্র সংসদ বিদ্যমান না থাকায় জকসুতে সম্পাদকীয় পদ বৃদ্ধির কথা জানানো হয়েছিল। ১৮ হাজার শিক্ষার্থীর প্রতিনিধিত্ব ও সংকট সমাধানে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সম্পাদকীয় পদ সৃষ্টি অত্যাবশ্যকীয়।
সংবাদ সম্মেলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘আমাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রশাসন কিছু পদ সংযুক্ত করেছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমাদের প্রত্যাশা ছিল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি অত্যাধুনিক, যুগোপযোগী এবং বাস্তবসম্মত জকসু নীতিমালা প্রণয়ন করবে। কিন্তু আমরা জকসু নীতিমালায় একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে প্রশাসনের ব্যাপক তাড়াহুড়ো দেখেছি, যা খুবই হতাশাজনক। আমরা আশা করছি আমাদের দাবি করা পদগুলো নীতিমালাতে সংযুক্ত করা হবে।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর প্রথমবার জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে—এটি নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আমরা আশা করি এই নির্বাচন হবে অবাধ, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক। প্রশাসন সব ছাত্রসংগঠনকে সমান সুযোগ দেবে, যাতে প্রত্যেকে গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে।’
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গত আগস্টে আনুষ্ঠানিকভাবে জকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে। রোডম্যাপ অনুযায়ী ভোটার তালিকা প্রকাশ, সংশোধন, মনোনয়নপত্র জমা ও যাচাইসহ সব ধাপ শেষে আগামী ২৭ নভেম্বর ভোট গ্রহণের কথা রয়েছে।