‘আবর্জনার মতো লাগে’ বলে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার বেলতলী এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভাজকে লাগানো অর্ধশত বকুলগাছ কেটে ফেলার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর নাম মো. আজমির হোসেন (৩৭)। তাঁর বিরুদ্ধে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ থানায় মামলা করেছে।

গতকাল শনিবার রাতে বেলতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে আজমির হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সেলিম। আজ রোববার তাঁকে কুমিল্লার আদালতে পাঠানো হবে।

আজমিরের বাড়ি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার সাওড়াতলী গ্রামে। তবে তিনি বেলতলী এলাকায় উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা ১০০ শয্যাবিশিষ্ট শিশু হাসপাতালের ফটকের পাশে থাকেন। সেখানে চা-বিস্কুট বিক্রি করেন।

গত বুধবার সরেজমিন গাছ কাটার বিষয়টির প্রমাণ পায় প্রথম আলো। এ নিয়ে শুক্রবার প্রথম আলোর ছাপা পত্রিকায় এবং শনিবার অনলাইন সংস্করণে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। পরে শনিবার রাতেই কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার পুলিশ এ ঘটনায় মামলা নিয়ে আজমির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে।

গত বুধবার সরেজমিন অভিযুক্ত আজমির হোসেন প্রথম আলোকে বলেছিলেন, বিভাজকের গাছগুলো আবর্জনার মতো লাগে, কোনো কাজে আসে না। তাই কেটে ফেলেছেন।

কেটে ফেলা বকুলগাছগুলো মহাসড়কের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য লাগানো হয়েছিল সওজের উদ্যোগে। প্রতিটি গাছের বয়স ছিল ৯ বছরের বেশি।

কুমিল্লা সওজের সড়ক ও জনপথ বিভাগের কার্যসহকারী রুহুল আমিন বাদী হয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় মামলাটি করেন। তিনি বলেন, বেলতলীতে হাসপাতালের সামনেই একসঙ্গে ১৭টি বকুলগাছ কাটা হয়েছে। অন্য গাছগুলো আশপাশে কাটা হয়েছে।

আজ রোববার সকালে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল রাতে এ ঘটনায় আমরা মামলা গ্রহণ করেছি। পরে রাতেই অভিযান চালিয়ে আজমির হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

সওজ কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা জানিয়েছেন, যেসব স্থানে গাছগুলো কাটা হয়েছে, পরে সেখানে নতুন করে গাছ রোপণ করা হবে।

মহাসড়কটি ২০১৬ সালে চার লেনে রূপান্তর করার পর সৌন্দর্য বর্ধনের পাশাপাশি এক লেনের গাড়ির হেডলাইটের আলো যাতে অন্য লেনের গাড়ির ওপর না পড়ে, সে জন্য বিভাজকের ওপর রোপণ করা হয়েছিল বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে চট্টগ্রাম সিটি গেট পর্যন্ত প্রায় ১৯২ কিলোমিটার এলাকায় মধ্যে মহাসড়কের প্রায় ১৪৩ কিলোমিটার এলাকায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো হয়েছে। তার মধ্যে আছে বকুল, কাঞ্চন, করবী, গন্ধরাজ, কুর্চি, রাধাচূড়া, হৈমন্তী, টগর, সোনালু, কৃষ্ণচূড়া, কদম, পলাশসহ নানা ফুলের গাছ। এ রকম ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে ৫০ হাজারের বেশি। এ ছাড়া সড়কের পাশে এবং বিভিন্ন স্থানে বিভাজকের ওপর লাগানো হয়েছে জলপাই, অর্জুন, কাঁঠাল, মেহগণি, শিশু, আকাশমণি, নিম, একাশিয়া, হরীতকীসহ বিভিন্ন প্রজাতির ৪০ হাজারের বেশি গাছ। কুমিল্লার বেলতলী এলাকাটি বকুলগাছে সাজানো ছিল।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর আজম র হ স ন প রথম আল এল ক য় সড়ক র ব লতল

এছাড়াও পড়ুন:

বামনা সরকারি কলেজসহ ৪ প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের তালা

কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা থাকা আওয়ামী লীগের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘিরে বরগুনার বামনা উপজেলার বামনা সরকারি কলেজসহ চারটি প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) মধ্যরাতে তারা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তালা দেয়। পুলিশ জানায়, রবিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে তালা ভেঙে ফেলা হয়েছে। এখন ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।

আরো পড়ুন:

কুমিল্লায় ছাত্রলীগের ৪৪ নেতাকর্মী আটক

গাজীপুরে গ্রামীণ ব্যাংকে ‘বোমা’ নিক্ষেপ

তালা দেওয়া অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- বামনার বুকাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়, বুকাবুনিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস এবং বুকাবুনিয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের বামনা উপজেলা শাখার সভাপতি হাসিবুর রহমান এবং বরগুনা জেলা শাখার সভাপতি রেজাউল কবির রেজা। পৃথক ফেসবুক পোস্টে তারা লিখেছেন, আওয়ামী লীগের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি সফল করার অংশ হিসেবে ছাত্রলীগ চারটি প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। 

বামনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুন অর রশিদ হাওলাদার রাইজিংবিডিকে বলেন, “ঘটনাস্থলগুলো ঘুরে দেখেছি। রাতের আঁধারে সন্ত্রাসীরা তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিল। সকালে তালা ভেঙে ফেলা হয়েছে। এখন ওইসব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় অপরাধীদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।” 

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ