নাটোরে খড় ও পাটকাঠির পালায় আগুন দেওয়ার অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতার ছেলেকে আটক করে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধর করা হয়েছে। পরে তাঁকে পুলিশে দিয়েছেন এলাকাবাসী। আজ রোববার সকালে সদর উপজেলার কাফুরিয়া ইউনিয়নের চৌগাছি মধ্যপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আটক নাজমুল হোসেন ওই গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে ও ইটভাটা ব্যবসায়ী। আবদুল খালেক ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।

সদর থানা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ১৩ নভেম্বর নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগের অনলাইনে ডাকা ‘লকডাউন’ কর্মসূচির রাত থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত গ্রামের অন্তত সাতটি স্থানে খড় ও পাটকাঠির পালায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। রাতের অন্ধকারে নির্জন স্থানে আগুন দেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত কাউকে আটক বা শনাক্ত করা যায়নি। আজ ভোরে নাজমুল হোসেন গ্রামে মোটরসাইকেল নিয়ে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করছিলেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে আটক করে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নাজমুল হোসেনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

গ্রামের বাসিন্দা আবু জাফর বলেন, ‘গ্রামে অনেক দিন ধরে আগুন–সন্ত্রাস চলছে। কিন্তু কে বা কারা আগুন দিচ্ছে, তা বোঝা যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে আমরা গতকাল থেকে রাতে পাহারার ব্যবস্থা করেছি। পাহারায় দায়িত্ব পালনকারীরাই ভোরে নাজমুল হোসেনকে আটক করেন। সে সন্দেহজনকভাবে চলাফেরা করছিল।’

তবে বেঁধে রাখা অবস্থায় নাজমুল হোসেন উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি নির্দোষ। মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে একটা কাজের জন্য বের হয়েছিলাম। আমি ইটভাটা ব্যবসায়ী। আমি কেন আগুন ধরাতে যাব?’

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুর রহমান বলেন, বেশ কয়েক দিন ধরে ওই গ্রামে রহস্যজনক আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটেছে। এলাকার লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। লোকজনের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে নাজমুলকে থানায় আনা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ যাচাই করা হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে 

নিভু নিভু আলোয় মঞ্চে উঠলেন একদল তরুণ-তরুণী। ধীরে ধীরে সুরের তালে শুরু হলো নাচ। হাতের ভঙ্গি, কোমরের বাঁক, পায়ের তাল, কী নেই এতে। মৃদঙ্গের লয়, মঞ্জিরার টিটি ধ্বনি ও তরুণীর দৃষ্টিভঙ্গি—সব মিলিয়ে স্পর্শ করল দর্শকের হৃদয়। তাই তো শেষ হতেই মিনিটখানেক হলো তাঁদের হাততালি।

সম্প্রতি চট্টগ্রাম নগরের থিয়েটার ইনস্টিটিউটে দেখা যায় এ দৃশ্য। তরুণ-তরুণীদের নাচের দলের নেতৃত্বে ছিলেন নৃত্যশিল্পী প্রিয়াঙ্কা বড়ুয়া। অবশ্য শুধু থিয়েটার ইনস্টিটিউট নয়, দেশ–বিদেশে নানা জায়গায় মনোমুগ্ধকর এ নৃত্যের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা। শিশুকাল থেকে প্রায় তিন দশক ধরেই তিনি এ চর্চা অব্যাহত রেখেছেন।

প্রিয়াঙ্কা বড়ুয়ার বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়ার করতালা গ্রামে। তাঁর বাবা নিশীত কান্তি বড়ুয়া ও মা বীণা বড়ুয়া। তিন বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। ২০০৮ সাল থেকে তিনি নৃত্য শেখার প্রতিষ্ঠান নৃত্যরূপ একাডেমি পরিচালনা করছেন। তাঁর এ প্রতিষ্ঠান থেকে নাচ শিখছেন শত শত শিক্ষার্থী।

প্রিয়াঙ্কা বড়ুয়া মূলত ওডিশি নৃত্যের জন্য খ্যাতি অর্জন করেছেন। এ নৃত্য ভারতের শাস্ত্রীয় নৃত্যধারাগুলোর মধ্যে অন্যতম। এতে শরীরের ত্রিভঙ্গ ভঙ্গি, কোমল হাতের ছন্দ ও চোখের ভাষা—একসঙ্গে একটি গল্প ফুটিয়ে তোলা হয়। খ্যাতিমান ওডিশি নৃত্যশিল্পী প্রমা অবন্তী ছিলেন প্রিয়াঙ্কার গুরু। এ ছাড়া তিনি কলকাতার নৃত্যশিল্পী দেবমিত্রা সেনগুপ্তা ও বেনজীর সালাম থেকেও প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।

এসবের বাইরে প্রিয়াঙ্কার ঝুলিতে রয়েছে বিভিন্ন একাডেমিক সনদ। চলতি বছর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর পাস করেছেন। এ ছাড়া শাশ্বত ললিতকলা একাডেমি থেকে পাঁচ বছর, জেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকে চার বছর মেয়াদি দুটি কোর্সের সনদও রয়েছে তাঁর। সব মিলিয়ে প্রায় ২২ বছর ধরে তিনি ওডিশি নৃত্যের সঙ্গে রয়েছেন।

প্রিয়াঙ্কা বড়ুয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ