ঢাকার ৭ ফাঁকা আসন: কী চিন্তা বিএনপিতে
Published: 16th, November 2025 GMT
ঢাকার ২০টি আসনের মধ্যে ফাঁকা রাখা ৭টিতে প্রার্থিতা চূড়ান্ত করতে পারেনি বিএনপি। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এসব আসনে প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় নিতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে জোট ও যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলো অগ্রাধিকার পাচ্ছে। এ রকম দুটি দলের দুজন নেতাকে ঢাকায় আসন ছাড় দিচ্ছে বিএনপি। আরেকটি আসনে ইসলামপন্থী একটি দলের শীর্ষ নেতার কথা ভাবা হচ্ছে। বাকি চারটি আসনে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি বিএনপি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
আমানতের টাকা ফেরত পেতে চতুর্থ দিনের মতো মাদারগঞ্জ উপজেলা পরিষদ ঘেরাও
জামালপুরের মাদারগঞ্জে বিভিন্ন সমবায় সমিতি থেকে আমানতের টাকা ফেরত পেতে আবার উপজেলা পরিষদ ঘেরাও করে প্রশাসনিক সব কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। দুই দিন বিরতি দিয়ে আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে উপজেলা পরিষদ ঘেরাও করা হয়। বেলা দেড়টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের কর্মসূচি চলছিল।
শুক্র ও শনিবার বিরতি দিয়ে আজ সরকারি সব দপ্তরের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে গত মঙ্গলবার থেকে সরকারি ২৩টি দপ্তরের সব কার্যক্রম বন্ধ আছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে টাকা ফেরত পাওয়ার ন্যূনতম উদ্যোগ না থাকায় আন্দোলনকারীরা ঘেরাও কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এসব দপ্তরের সেবাগ্রহীতারা।
মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাদির শাহ প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকাল থেকে আবার পরিষদ ঘেরাও করা হয়েছে। গত সপ্তাহে টানা তিন দিন ও আজ প্রশাসনের সব দপ্তরের কার্যক্রম বন্ধ আছে। গতকাল দুপুরে থানায় আন্দোলনকারীদের নিয়ে আলোচনায় বসা হয়েছিল। সেখানে সাতটি সমিতির লোকজনও ছিলেন। আন্দোলনকারীরা পুরো টাকা না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এ জন্য কোনো সমাধান ছাড়াই আলোচনা শেষ হয়। এর চেয়ে বেশি কিছু করার ক্ষমতা তাঁর নেই। এটা নিয়ে কী হবে, সেটাও জানেন না।
‘মাদারগঞ্জে বিভিন্ন সমবায় সমিতিতে আমানতকৃত অর্থ উদ্ধারের জন্য সহায়ক কমিটি’ ব্যানারে আজ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এতে ভুক্তভোগীদের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারাও অংশ নেন। এক বছর ধরে এ ব্যানারে সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ ও একাধিকবার উপজেলা পরিষদ ঘেরাওসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কিন্তু কোনো গ্রাহকই টাকা ফেরত পাননি।
আজ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা মানুষ চতুর্থ দিনের মতো উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে জড়ো হন। তাঁরা উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে কার্যালয় ঘেরাও করেন। এতে ২৩টি দপ্তরের প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় সেখানে আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন।
আন্দোলনকারীরা বলেন, টাকা ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে তাঁরা ঘেরাও কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। ২৩টি সমবায় সমিতিতে প্রায় ৩৫ হাজার গ্রাহক টাকা জমা করেছিলেন। প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকেরা ২০২২ সালের শেষের দিকে আত্মগোপনে চলে যান। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর তুলনায় কয়েক গুণ বেশি মুনাফার লোভ তাঁরা দেখিয়েছিলেন। এভাবে জামালপুর থেকে এক থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
আমানতের অর্থ উদ্ধার কমিটির সদস্য মাহবুব আলম বলেন, আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে অবস্থান করবেন সবাই। এখান থেকে সন্ধ্যার পর মশাল মিছিল বের করা হবে। টাকা না পাওয়া পর্যন্ত তাঁদের এই আন্দোলন চলবে।
জেলা সমবায় কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সমবায় সমিতিগুলোতে গ্রাহকদের ৭৩০ কোটি টাকা জমা ছিল। অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের দাবি, ২৩টি সমিতির মধ্যে আল-আকাবা, শতদল, স্বদেশ, নবদীপ, হলিটার্গেট ও রংধনু অন্যতম। ছয়টি সমিতির কাছে জমা আছে ৭০০ কোটি টাকার বেশি। শুধু মাদারগঞ্জের ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের একটি হিসাব করে দেখা গেছে, প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা সমিতিগুলোতে আছে। এ ছাড়া ইসলামপুর, মেলান্দহ, সরিষাবাড়ী ও জামালপুর সদরে কয়েক হাজার গ্রাহক আছেন।
আমানতের অর্থ উদ্ধার কমিটির আহ্বায়ক শিবলুল বারী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ৩৫ হাজার মানুষ তাঁদের কষ্টে উপার্জিত টাকা ফেরতের দাবিতে নানা আন্দোলন করছেন। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁরা কার্যকর কোনো সহযোগিতা পাননি। যখনই আন্দোলন শুরু হয়, প্রশাসন মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে আন্দোলন দমিয়ে দেয়। এরপর প্রশাসনের কোনো ভূমিকা থাকে না। এ জন্য এবার আলোচনা ও আন্দোলন একসঙ্গে চলবে। গতকাল ছোট ছোট সমিতির লোকজন নিয়ে প্রশাসন বসেছিল। কিন্তু যাঁরা হাজার কোটি টাকা নিয়ে আত্মগোপনে, তাঁদের কেউ ছিলেন না। প্রশাসনের কথায় আন্দোলনকারীরা আশ্বস্ত হতে পারেননি।