গ্রিস থেকে গ্যাস আমদানিতে সম্মত ইউক্রেন: জেলেনস্কি
Published: 16th, November 2025 GMT
রাশিয়ার ধারাবাহিক হামলায় ইউক্রেনের জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। যার ফলে দেশটির জ্বালানি অবকাঠামো, বিদ্যুৎ ও তাপ উৎপাদন ক্ষমতা শূন্যের কাছাকাছি পৌঁছেছে এবং বিভিন্ন শহরে ব্ল্যাকআউট দেখা দিয়েছে। শীত আসার সাথে সাথে এই হামলাগুলো মানবিক সংকট আরো বাড়িয়ে তুলছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় রবিবার (১৬ নভেম্বর) ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গ্রিস থেকে গ্যাস আমদানির ঘোষণা দিয়েছেন। খবর রয়টার্সের।
আরো পড়ুন:
ইউক্রেনের হামলা: নভোরো-সিয়েস্ক বন্দরের তেল রপ্তানি বন্ধ করল রাশিয়া
ইউক্রেনের আবাসিক ও জ্বালানি অবকাঠামোতে রাশিয়ার হামলা, নিহত ১১
টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে এক বিবৃতিতে জেলেনস্কি বলেন, “"আজ, আমরা ইউক্রেনের জন্য গ্যাসের বিষয়ে গ্রীসের সঙ্গে একটি চুক্তি প্রস্তুত করেছি, যা শীতের জন্য যতটা সম্ভব আমদানি নিশ্চিত করার জন্য আরেকটি গ্যাস সরবরাহ রুট হবে।”
তিনি জানান, “গ্যাস আমদানির জন্য অর্থায়নের জন্য আমাদের ইতিমধ্যেই চুক্তি রয়েছে। রাশিয়ান হামলার ফলে ইউক্রেনীয় উৎপাদনে যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ করার জন্য আমরা গ্যাস আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় ২ বিলিয়ন ইউরো (২.
রবিবার গ্রিসে সফর শুরু করার আগে এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এই ঘোষণা দেন। জেলেনস্কি গ্রিস থেকে ফ্রান্স এবং স্পেন সফর করবেন।
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের চতুর্থ বছরে রাশিয়া বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থা এবং গ্যাস উৎপাদন সুবিধার উপর হামলা জোরদার করেছে।
জেলেনস্কি বলেন, “কিয়েভ ইউরোপীয় কমিশনের গ্যারান্টির অধীনে ইউরোপীয় অংশীদার এবং ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি ইউক্রেনীয় ব্যাংকগুলো থেকে গ্যাস আমদানির জন্য তহবিল বরাদ্দ করেছে, পাশাপাশি পূর্ণ অর্থায়ন নিশ্চিত করার জন্য মার্কিন অংশীদারদের সঙ্গেও কাজ করছে।”
গ্রিস ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে ইউক্রেনের যোগদানের দাবির অন্যতম প্রধান সমর্থক। গ্রিস ১৯৯১ সালের ৩১ ডিসেম্বর ইউক্রেনকে স্বীকৃতি দেয় এবং উভয় দেশ ১৯৯২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে।
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র শ য় ইউক র ন য দ ধ ইউক র ন গ য স আমদ ন র ইউক র ন র ন র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরে সর্বনিম্ন, বিশ্ববাজারে এ বছর কমেছে ১৪%
এশিয়াসহ বিশ্বের চালের বাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এশিয়ায় চালের অন্যতম বৃহৎ সরবরাহকারী থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। মূলত বাজারে চালের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
থাইল্যান্ডসহ চালের অন্যান্য বড় উৎপাদনকারী দেশ ভারত ও মিয়ানমারে উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ববাজারেও চালের দাম কমছে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার খাদ্যসূচক অনুযায়ী, চলতি বছর চালের দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। এমনকি বিশ্ববাজার চালের দাম আগস্ট মাসে আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। খবর দ্য নেশনের
থাইল্যান্ডে চালের দামের এই নিম্নমুখী প্রবণতা একদম নতুন কিছু নয়, বেশ কয়েক মাস ধরেই এ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষিবিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘ সময় ধরে চালের দাম কম থাকায় দেশটির কৃষকেরা ধানের আবাদ কমিয়ে দিতে পারেন।
থাইল্যান্ডে গত বৃহস্পতিবার ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চালের দাম দাঁড়ায় টনপ্রতি ৩৩৫ ডলার। আগের সপ্তাহে যা ছিল ৩৩৮ ডলার। থাইল্যান্ডের কৃষি খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত ১৪ বছরে থাই সরকারের জনতুষ্টিমূলক নীতির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সরকার কৃষকদের সন্তুষ্ট করতে বিভিন্ন ধরনের নিশ্চয়তা দিয়েছে। এসব কর্মসূচিতে প্রায় ৪০ বিালিয়ন বা ৪ হাজার কোটি ডলার ব্যয় হলেও একধরনের নীতিগত ফাঁদ তৈরি হয়েছে। ফলে কৃষকেরা প্রযুক্তি উন্নয়ন, দক্ষতা বাড়ানো কিংবা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সঙ্গে খাপ খাওয়ানো থেকে নিরুৎসাহিত হয়েছেন।
সেই সঙ্গে থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা জানান, বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে বাজারে নতুন চালের সরবরাহ এসেছে। এটাও দাম কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। অন্যদিকে ভারত ও মিয়ানমারের মতো প্রতিযোগী দেশগুলো চালের গুণগত মানের উন্নতি করেছে। আধুনিকতা এনেছে উৎপাদনব্যবস্থায়। ফলে তারা কম খরচে ভালো মানের চাল রপ্তানি করতে পারছে। কিন্তু থাইল্যান্ড এখনো ভর্তুকিনির্ভর ব্যবস্থায় আটকে আছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
এফএওর সূচক কমেছেপ্রতি মাসেই খাদ্যমূল্যসূচক করে থাকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছর বিশ্ববাজারে চালের দাম কেমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক নেমে এসেছে ৯৮ দশমিক ৪–এ। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তা ছিল ১১৩ দশমিক ৬। সেই সঙ্গে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক ছিল ১২৫ দশমিক ৭। সেই হিসাবে এক বছরে চালের দাম কমেছে ২১ দশমিক ৭ শতাংশ।
চালের দামের এই পতন শুরু হয় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত ধাপে ধাপে রপ্তানি–নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে শুরু করে তখন। এ ঘটনা চালের বাজারে বড় প্রভাব ফেলে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সব ধরনের চালের মূল্যসূচক ১৩ শতাংশ কমেছে। খবর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের
অথচ ২০২৪ সালের শুরুতে এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে। তখন ভারত একের পর এক রপ্তানি সীমাবদ্ধতা জারি করলে ২০০৮ সালের পর চালের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। বিশ্বজুড়ে ভোক্তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। মানুষের মধ্যে মজুতের প্রবণতা তৈরি হয়। অন্যান্য উৎপাদক দেশেও সুরক্ষাবাদী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর পর থেকে চালের দাম কমতে শুরু করে।