বিশ্বজুড়ে ৪ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক চিতাবাঘ দিবস পালন করে থাকে চিতাবাঘ সংরক্ষণ কাজে নিয়োজিত চিতা কনজারভেশন ফান্ড (সিসিএফ)। ২০১০ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে আন্তর্জাতিক চিতাবাঘ দিবস পালন শুরু হয়। বিজ্ঞানীরা খায়াম নামের একটি চিতাশাবককে যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন চিড়িয়াখানা থেকে ১৯৭৭ সালে নামিবিয়ায় নিয়ে গবেষণার কাজে ব্যবহার করেন। সেই চিতাবাঘের জন্মদিন ৪ ডিসেম্বর। আর তাই সারাবিশ্বের সংরক্ষণবাদীরা ৪ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক চিতাবাঘ দিবস পালন করে থাকে।

চিতা কনজারভেশন ফান্ডের তথ্য মতে, গত ৫০ বছর ধরে আফ্রিকার বিভিন্ন বনাঞ্চলে চিতাবাঘের সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে কমে যাচ্ছে। বিশ্বের দ্রুততম স্থলজ প্রাণী চিতাবাঘ একদিন বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে চলে যেতে পারে। আর তাই চিতাবাঘকে বাঁচানোর জন্য কৃত্রিম প্রজননের প্রয়োজন হতে পারে।

গত ৩৫ বছর ধরে মার্কিন প্রাণিবিজ্ঞানী ও চিতাবাঘ বিশেষজ্ঞ লরি মার্কার নামিবিয়ায় চিতাবাঘের একটি স্পার্ম ব্যাংকে নমুনা সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করছেন। যদিও তিনি আশা করেন, বন্য প্রাণী সংরক্ষণকারীদের যেন ভবিষ্যতে এই ব্যাংক কখনো ব্যবহার করতে না হয়।

বিজ্ঞানী মার্কার জানিয়েছেন, চিতাবাঘের মাত্র ৩৩টি দল রয়েছে। আফ্রিকাজুড়ে ছোট ছোট এলাকায় ছড়িয়ে থাকা এসব দলের সদস্যসংখ্যা এক শর চেয়ে কম। চিতাবাঘের আবাস ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া মানুষ-বন্য প্রাণী সংঘাত ও অবৈধ প্রাণীর ব্যবসার কারণে বিপন্ন হচ্ছে চিতাবাঘ। দল সংকুচিত ও বিচ্ছিন্ন দলে থাকার কারণে চিতাবাঘের জিন পুল ছোট হয়ে আসছে। ছোট ছোট জনসংখ্যার মধ্যে ক্রমাগত প্রজনন ঘটছে, যার ফলে তাদের প্রজনন হারে প্রভাব পড়ছে।

গত অর্ধশতাব্দীতে বিশ্বব্যাপী চিতাবাঘের সংখ্যা ৮০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। প্রায় ৯০ শতাংশ বাসস্থান থেকে বিতাড়িত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, ১০ থেকে ১২ হাজার বছর আগে শেষ বরফযুগের শেষে চিতাবাঘ বিলুপ্তির হাত থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছিল। তখন প্রথম জিন পুলের আকার হ্রাস পায়। বিজ্ঞানী মার্কার বলেন, জেনেটিক বৈচিত্র্যের অভাব ও সেই সঙ্গে চিতাবাঘের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ অস্বাভাবিক শুক্রাণু থাকার কারণে ভবিষ্যতে তাদের রক্ষায় স্পার্ম ব্যাংকের প্রয়োজন হতে পারে।

বন্য প্রাণীর জগতে চিতাবাঘের জন্য শুক্রাণু সংরক্ষণ কোনো নতুন কৌশল নয়। এটি এমন একটি কৌশল, যা সংরক্ষণকারীরা হাতি, গন্ডার, হরিণ, বিড়াল, পাখি ও অন্যান্য প্রজাতির জন্য তৈরি করেছেন। বিজ্ঞানী মার্কার চিতাবাঘের শুক্রাণু সংগ্রহের জন্য চিতাবাঘের পেছনে ঘোরেন না। সুবিধামতো নমুনা সংগ্রহ করেন। নামিবিয়ায় চিতাবাঘের প্রধান বিপদ হলো কৃষকদের আক্রমণ। কৃষকেরা চিতাবাঘকে তাঁদের গবাদিপশুর জন্য হুমকি মনে করেন। বিজ্ঞানী মার্কারের দল আহত চিতাবাঘের চিকিৎসা করার সময় নমুনা সংগ্রহ করে। মৃত চিতাবাঘ থেকেও শুক্রাণুর নমুনা নেয় তারা। বিজ্ঞানী মার্কার বলেন, ‘প্রতিটি চিতাবাঘ আসলে খুব কমসংখ্যক জিনের একটি অনন্য মিশ্রণ। আমরা যতটা সম্ভব প্রতিটি প্রাণীর নমুনা ব্যাংকে রাখার চেষ্টা করছি।’

সূত্র: ইনডিপেনডেন্ট

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য স গ রহ

এছাড়াও পড়ুন:

হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে চিতাবাঘ

বিশ্বজুড়ে ৪ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক চিতাবাঘ দিবস পালন করে থাকে চিতাবাঘ সংরক্ষণ কাজে নিয়োজিত চিতা কনজারভেশন ফান্ড (সিসিএফ)। ২০১০ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে আন্তর্জাতিক চিতাবাঘ দিবস পালন শুরু হয়। বিজ্ঞানীরা খায়াম নামের একটি চিতাশাবককে যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন চিড়িয়াখানা থেকে ১৯৭৭ সালে নামিবিয়ায় নিয়ে গবেষণার কাজে ব্যবহার করেন। সেই চিতাবাঘের জন্মদিন ৪ ডিসেম্বর। আর তাই সারাবিশ্বের সংরক্ষণবাদীরা ৪ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক চিতাবাঘ দিবস পালন করে থাকে।

চিতা কনজারভেশন ফান্ডের তথ্য মতে, গত ৫০ বছর ধরে আফ্রিকার বিভিন্ন বনাঞ্চলে চিতাবাঘের সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে কমে যাচ্ছে। বিশ্বের দ্রুততম স্থলজ প্রাণী চিতাবাঘ একদিন বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে চলে যেতে পারে। আর তাই চিতাবাঘকে বাঁচানোর জন্য কৃত্রিম প্রজননের প্রয়োজন হতে পারে।

গত ৩৫ বছর ধরে মার্কিন প্রাণিবিজ্ঞানী ও চিতাবাঘ বিশেষজ্ঞ লরি মার্কার নামিবিয়ায় চিতাবাঘের একটি স্পার্ম ব্যাংকে নমুনা সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করছেন। যদিও তিনি আশা করেন, বন্য প্রাণী সংরক্ষণকারীদের যেন ভবিষ্যতে এই ব্যাংক কখনো ব্যবহার করতে না হয়।

বিজ্ঞানী মার্কার জানিয়েছেন, চিতাবাঘের মাত্র ৩৩টি দল রয়েছে। আফ্রিকাজুড়ে ছোট ছোট এলাকায় ছড়িয়ে থাকা এসব দলের সদস্যসংখ্যা এক শর চেয়ে কম। চিতাবাঘের আবাস ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া মানুষ-বন্য প্রাণী সংঘাত ও অবৈধ প্রাণীর ব্যবসার কারণে বিপন্ন হচ্ছে চিতাবাঘ। দল সংকুচিত ও বিচ্ছিন্ন দলে থাকার কারণে চিতাবাঘের জিন পুল ছোট হয়ে আসছে। ছোট ছোট জনসংখ্যার মধ্যে ক্রমাগত প্রজনন ঘটছে, যার ফলে তাদের প্রজনন হারে প্রভাব পড়ছে।

গত অর্ধশতাব্দীতে বিশ্বব্যাপী চিতাবাঘের সংখ্যা ৮০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। প্রায় ৯০ শতাংশ বাসস্থান থেকে বিতাড়িত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, ১০ থেকে ১২ হাজার বছর আগে শেষ বরফযুগের শেষে চিতাবাঘ বিলুপ্তির হাত থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছিল। তখন প্রথম জিন পুলের আকার হ্রাস পায়। বিজ্ঞানী মার্কার বলেন, জেনেটিক বৈচিত্র্যের অভাব ও সেই সঙ্গে চিতাবাঘের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ অস্বাভাবিক শুক্রাণু থাকার কারণে ভবিষ্যতে তাদের রক্ষায় স্পার্ম ব্যাংকের প্রয়োজন হতে পারে।

বন্য প্রাণীর জগতে চিতাবাঘের জন্য শুক্রাণু সংরক্ষণ কোনো নতুন কৌশল নয়। এটি এমন একটি কৌশল, যা সংরক্ষণকারীরা হাতি, গন্ডার, হরিণ, বিড়াল, পাখি ও অন্যান্য প্রজাতির জন্য তৈরি করেছেন। বিজ্ঞানী মার্কার চিতাবাঘের শুক্রাণু সংগ্রহের জন্য চিতাবাঘের পেছনে ঘোরেন না। সুবিধামতো নমুনা সংগ্রহ করেন। নামিবিয়ায় চিতাবাঘের প্রধান বিপদ হলো কৃষকদের আক্রমণ। কৃষকেরা চিতাবাঘকে তাঁদের গবাদিপশুর জন্য হুমকি মনে করেন। বিজ্ঞানী মার্কারের দল আহত চিতাবাঘের চিকিৎসা করার সময় নমুনা সংগ্রহ করে। মৃত চিতাবাঘ থেকেও শুক্রাণুর নমুনা নেয় তারা। বিজ্ঞানী মার্কার বলেন, ‘প্রতিটি চিতাবাঘ আসলে খুব কমসংখ্যক জিনের একটি অনন্য মিশ্রণ। আমরা যতটা সম্ভব প্রতিটি প্রাণীর নমুনা ব্যাংকে রাখার চেষ্টা করছি।’

সূত্র: ইনডিপেনডেন্ট

সম্পর্কিত নিবন্ধ