লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যে প্রায় ৪০ বছর পর প্রথম সরাসরি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় লেবাননের আন-নাকুরা শহরে যুদ্ধবিরতি মনিটরিং কমিটির বৈঠকে যোগ দেন দুই দেশের বেসামরিক প্রতিনিধিরা।

বৈরুত বলছে, এটি শান্তি আলোচনা নয়, বরং শত্রুতা কমানো ও লেবানিজ ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহার নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা। খবর আল-জাজিরার।

আরো পড়ুন:

লেবাননে ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলা, নিহত ১৩

যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে লেবাননে ইসরায়েলের হামলা, নিহত ৪

ব্লু লাইন নামে পরিচত লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠক চলে।

লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালাম জানান, বৈরুত নিরাপত্তা ইস্যুর বাইরে গিয়ে আলোচনায় আগ্রহী। তবে তিনি স্পষ্ট করেন যে এগুলো কোনো শান্তিচুক্তির বৈঠক নয় ও সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ কেবল শান্তি প্রক্রিয়ার সঙ্গেই জড়িত।

সালাম জানান, আলোচনার লক্ষ্য শুধু ‘শত্রুতা বন্ধ করা, ‘লেবাননের বন্দিদের মুক্তি’ এবং লেবাননের ভূখণ্ড থেকে ‘ইসরাইলি সেনাদের পূর্ণ প্রত্যাহার’ নিশ্চিত করা।

তিনি আরো জানান, লেবানন ২০০২ সালের আরব শান্তি উদ্যোগের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যেখানে ১৯৬৭ সালে দখলকৃত সব এলাকা থেকে ইসরায়েলের সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের বিনিময়ে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার কথা বলা আছে। ইসরায়েলের সঙ্গে বৈরুতের আলাদা কোনো শান্তিচুক্তি করার কোনো ইচ্ছা নেই বলেও তিনি জোর দিয়ে বলেন।

সালাম বলেন, বৈঠকে বেসামরিক প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ উত্তেজনা কমাতে সহায়ক হতে পারে। সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলায় পরিস্থিতি কতটা জটিল হচ্ছে তা স্পষ্ট করে দিচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে দুই পক্ষকে আলোচনার বিস্তৃতি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে আসছে। গত মাসে বৈরুত লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বিমান হামলার নতুন করে বড় ধরনের উত্তেজনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে এবং এই পরিস্থিতিতেই সর্বশেষ এই বৈঠকটি হলো। 

এদিকে ইসরায়েল সরকারের মুখপাত্র শোশ বেদরোশিয়ান বুধবার সাংবাদিকদের অনলাইন ব্রিফিংয়ে লেবাননের সঙ্গে এই বৈঠকটিকে ‘ঐতিহাসিক ঘটনা’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল ও লেবাননের সরাসরি এই বৈঠক প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টার ফল। প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এখন বিশেষ সুযোগ তৈরি হয়েছে।’

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ব নন য ক তর ষ ট র ইসর য় ল ইসর য় ল র ল ব নন র

এছাড়াও পড়ুন:

‘একটাই মাত্র ছেলে আমার, সব শেষ হয়ে গেল’

‘একটাই মাত্র ছেলে ছিল আমার। এ ছেলে নিয়ে কত স্বপ্ন ছিল। পড়ালেখা করবে, ভালো চাকরি-বাকরি করবে, পরিবারের হাল ধরবে; কিন্তু সব স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেছে। এখন আমি কীভাবে বাঁচব, কীভাবে ছেলের কথা ভুলে থাকব, আমার সব শেষ হয়ে গেল।’

কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলছিলেন রিমা আক্তার (৩৫)। সড়ক দুর্ঘটনায় গতকাল বুধবার সকালে তাঁর ছেলে সফিকুল ইসলামের (১৬) মৃত্যু হয়েছে। সে নোয়াখালীর চাটখিলের বদলকোট উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। একই ঘটনায় তার আরও দুই সহপাঠীর মৃত্যু হয়েছে। তারা সবাই একই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ও মধ্য বদলকোট গ্রামের বাসিন্দা ছিল।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নিহত ব্যক্তিরা বিদ্যালয়টির মাধ্যমিক (এসএসসি) নির্বাচনী পরীক্ষার্থী ছিলেন। সোমবার রাতে চারজনের একজন হাসিবুল ইসলাম (১৬) তার বাবার মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বের হয়। সঙ্গে সফিকুল, মো. রায়হান ও হাবিবুর রহমানকেও নেয়। পরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেলটির একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই হাসিবুল ইসলাম মারা যায়। এরপর গতকাল সফিকুল ও রায়হানেরও মৃত্যু হয়। তবে সঙ্গে থাকা আরেক সহপাঠী হাবিবুর রহমান তেমন আহত হয়নি।

ছেলের সফিকুল ইসলামকে হারিয়ে শোকে কাতর মা রিমা আক্তার। গতকাল রাতে মধ্য নোয়াখালীর চাটখিলের মধ্য বদলকোট গ্রামে

সম্পর্কিত নিবন্ধ