রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষককে বরখাস্ত, পাঁচ শিক্ষার্থীকে নানা মেয়াদে শাস্তি
Published: 4th, December 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষককে বরখাস্ত, দুই শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব বাতিলসহ পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের ৫৪৪তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক অনীক কৃষ্ণ কর্মকারকে তিন বছরের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁকে আগামী ১০ বছর পরীক্ষাসংক্রান্ত সব কার্যক্রম থেকে বিরত রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক প্রভাষ কুমার কর্মকার ও ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
পাঁচ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নেওয়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দুজনের ছাত্রত্ব বাতিল, একজনকে স্থায়ী বহিষ্কার ও দুই শিক্ষার্থীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার। সিন্ডিকেট সভার তারিখ থেকেই এসব সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, ‘শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের ঘটনায় তদন্ত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সিন্ডিকেট তাঁদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা চাইছি শিক্ষার্থীদের নামগুলো গোপন থাকুক। কারণ, তাঁদের মধ্যে নারী শিক্ষার্থীও রয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সহযোগী অধ্যাপক অনীক কৃষ্ণ কর্মকারের বিরুদ্ধে নিয়োগ যোগ্যতার ফল না থাকা, শিক্ষার্থীদের হুমকিসহ নানা অভিযোগে গত অক্টোবরে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কারের পর চূড়ান্ত শাস্তি দেওয়া হলো।
অধ্যাপক প্রভাস কুমার কর্মকারের বিরুদ্ধে গত আগস্টের শুরুর দিকে এক ছাত্রীকে ব্যক্তিগত কক্ষে ডেকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে। পরে এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার চেয়ে ১৩ আগস্ট ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বিভাগের সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। এ ঘটনা জানাজানির পর ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাঁকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবিতে আন্দোলন করেন।
অন্যদিকে ১১ মে সহযোগী অধ্যাপক হেদায়েত উল্লাহকে বিভাগের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কক্ষে অনৈতিক অবস্থায় আটক করা হয়। এ ঘটনা তদন্তে একটি উচ্চতর কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী এ শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া নিল সিন্ডিকেট।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বরখ স ত সহয গ তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
আজ খোকসা মুক্ত দিবস
আজ ৪ ডিসেম্বর, কুষ্টিয়ার খোকসা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে পরাজয় ঘটে পাকিস্তানিদের। সেদিন, হাজার হাজার মানুষ মুক্ত খোকসার রাস্তায় বের হয়ে আসেন। খোকসা থানায় বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন খোকসা জানিপুর পাইলট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেন।
দিবসটি উপলক্ষ্যে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে র্যালি, আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
আজ ঠাকুরগাঁও মুক্ত দিবস
‘১৭ বছরে ৯৪ হাজার থেকে মুক্তিযোদ্ধা আড়াই লাখ করা হয়েছে’
বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ সদর উদ্দিন খান বলেন, ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর খোকসা থানা পাক হানাদার মুক্ত হয়। থানা সদরের খোকসা হাইস্কুল, শোমসপুর হাইস্কুল, গনেশপুরের গোলাবাড়ীর নিলাম কেন্দ্র, মোড়াগাছায় রাজাকার বাহিনীর শক্ত ঘাঁটি ছিল। এ জনপদে হত্যা, ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওঠে মুক্তিপাগল মুক্তিযোদ্ধাদের একটি ইউনিট।
তিনি বলেন, প্রথমে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি পুলিশের থানা দখলের পরিকল্পনা করে। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ৩ ডিসেম্বর রাত ১১ টার দিকে মুজিববাহিনী কমান্ডার আলাউদ্দিন খান, কে.এম মোদ্দাসের আলী, নুরুল ইসলাম দুলাল, সাইদুর রহমান মন্টু, রোকন উদ্দিন বাচ্চু, তরিকুল ইসলাম তরুর নেতৃত্বে ২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা থানা চারদিক থেকে আক্রমণ করেন। রাতভর গুলি বিনিময়ের পর ভোরে ১০৫ জন পুলিশ ও রাজাকার আত্মসমর্পণ করে।
সেখান থেকে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র ও আটককৃতদের নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদে ক্যাম্পে পৌছান। ৪ ডিসেম্বর পাক হানাদারদের একটি বড় দল আবার থানা দখলের চেষ্টা করে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে মিলিশিয়া ও পাকিস্তানি সেনা সদস্যদের দলটি খোকসা ত্যাগ করে। এরই মাধ্যমে খোকসা হানাদার মুক্ত হয়।
তিনি জানান, ৪ ডিসেম্বর খোকসা থানায় বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন খোকসা জানিপুর পাইলট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেন। এসময় মুক্তিকামী ছাত্রজনতা আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন।
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ