নেইমারের হ্যাটট্রিকে ‘অবনমন’ এড়াল সান্তোস
Published: 4th, December 2025 GMT
ব্রাজিলের ঘরোয়া লিগ ব্রাসিলেইরাঁওতে অবনমন এড়ানোর লড়াইয়ে ছিল সান্তোস। সেই সংগ্রামেই বাংলাদেশ সময় বৃস্পতিবার (০৪ ডিসেম্বর) সকালে দলটিকে কাঁধে তুলে নিলেন নেইমার। দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিকের সুবাদে জুভেনতুদেকে ৩-০ গোলে হারিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিন পয়েন্ট তুলে নিয়েছে ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবটি। পাশাপাশি রেলিগেশন তথা অবনমন অঞ্চল থেকেও উপরে উঠে এসেছে তারা। অর্থাৎ রেলিগেশন এড়িয়েছে নেইমাররা।
আগের ম্যাচের মতো যথারীতি এই ম্যাচেও হাঁটুর চোট নিয়েই খেলতে নামেন নেইমার। তবু দ্বিতীয়ার্ধে মাত্র ১৭ মিনিটের ব্যবধানে তিনটি গোল করে দলকে জয়ের পথ দেখান ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার।
আরো পড়ুন:
শেষ ম্যাচে আজারবাইজানের কাছে হারল বাংলাদেশ
বার্সার কাছে শীর্ষস্থান হারানোর পর আলোনসো: সামনের পথ এখনো লম্বা
ইএসপিএন ব্রাজিলকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৩৩ বছর বয়সী নেইমারের বাম হাঁটুর মেনিসকাস ইনজুরির জন্য মৌসুম শেষে আর্থ্রোস্কোপিক সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে। ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখতে তিনি গত দুটি ম্যাচেই কনজারভেটিভ ট্রিটমেন্ট নিয়ে খেলেছেন।
স্থানীয় সময় বুধবারের হ্যাটট্রিক নেইমারের প্রায় আড়াই বছরের মধ্যে প্রথম। এর আগে সর্বশেষ তিনি ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে প্যারিস সেন্ত-জার্মেইয়ের (পিএসজি) হয়ে ক্লারমোঁর বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন।
এদিন ম্যাচের ৫৬তম মিনিটে দ্রুতগতির এক পাল্টা আক্রমণ থেকে নেইমারের প্রথম গোল আসে। এরপর মাত্র দশ মিনিটের মধ্যেই ইগর ভিনিসিয়ুসের ক্রস থেকে নিখুঁত ফিনিশে দ্বিতীয় গোলটি করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত পেনাল্টি থেকে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। এরপর ৮৩তম মিনিটে তাকে তুলে নেওয়া হয় মাঠ থেকে।
এই জয়ে মৌসুমে আর এক ম্যাচ বাকি থাকতে অবনমন অঞ্চলের বাইরে দুই পয়েন্টের নিরাপদ দূরত্বে উঠে এসেছে নেইমারের শৈশবের ক্লাব সান্তোস। চারটি দল যারা দ্বিতীয় ডিভিশনে নেমে যাবে, তাদের শেষ অবস্থানটিতে বর্তমানে রয়েছে ভিটোরিয়া। তাদের থেকে এখন দুই পয়েন্টে এগিয়ে সান্তোস।
আগামী রোববার (০৭ ডিসেম্বর) ভিলা বেলমিরোতে ক্রুজেইরোর মুখোমুখি হবে সান্তোস। সেখানে জয় পেলে নিশ্চিত হয়ে যাবে তাদের প্রথম ডিভিশনে টিকে থাকা।
অন্যদিকে ম্যাচের আগেই অবনমন নিশ্চিত হয়ে যাওয়া জুভেনতুদে টানা চতুর্থ পরাজয়ে সিজন শেষের পথটা আরও কঠিন করে তুলল।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নেইমার বহু ইনজুরির সঙ্গে লড়াই করেছেন। তবু আগামী গ্রীষ্মের বিশ্বকাপে ব্রাজিল দলে ফেরার ব্যাপারে আশাবাদী তিনি। ব্রাজিলের কোচ কার্লো আনচেলত্তি একাধিকবার জানিয়েছেন- ফিট থাকলে বিশ্বকাপের স্কোয়াডে জায়গা পাওয়ার সুযোগ নেইমারের সামনে উন্মুক্ত।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগানের ভিডিওটি সন্দ্বীপের
মঞ্চে বসে ‘পাকিস্তান পাকিস্তান, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’ বলে স্লোগান ধরছেন এক বক্তা। সমবেত জনতা সেই স্লোগানে কণ্ঠ মেলাচ্ছে, এমন একটি ভিডিও আজ সোমবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের একটি অনুষ্ঠানে ধারণ করা বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সন্দ্বীপের মাইটভাঙ্গা ইউনিয়নে গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত কোরআন তিলাওয়াত সম্মেলনের এক বক্তা এমন স্লোগান দেন। উপস্থিত দর্শকদের একজন সেটির ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে পোস্ট করেন।
ভাইরাল হওয়া ২০ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, মঞ্চে বসে এক বক্তা দুই হাত ওপরে তুলে স্লোগান ধরেছেন, ‘পাকিস্তান পাকিস্তান’, এরপর সামনে উপস্থিত দর্শকেরা সমস্বরে বলছেন, ‘জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’। বক্তা আবার বলছেন, ‘বাংলাদেশ বাংলাদেশ’। সমবেত ব্যক্তিরা তাঁর সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে বলছেন, ‘জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ।’ এরপর বক্তা স্লোগান ধরেন ‘নারায়ে তাকবির’।
কোরআন তিলাওয়াত সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাইটভাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা নুরনবি রুমি। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, গতকাল মাইটভাঙ্গার সাউথ সন্দ্বীপ উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে এই স্লোগান দেওয়ার ঘটনাটি ঘটেছে। সম্মেলনটি ছিল কোরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতার। সেখানে বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগীরা অংশ নেন। পাকিস্তান থেকে আগত এক ইসলামি বক্তা মঞ্চে আসার পর সঞ্চালক এমন স্লোগান ধরেন।
সম্মেলনে উপস্থিত আরও এক ব্যক্তি প্রথম আলোকে বলেছেন, মূলত ইরান, মিসর, ফিলিপাইন ও পাকিস্তানের প্রতিযোগীরা সম্মেলনে অংশ নেন। যখন যে দেশের প্রতিযোগী মঞ্চে এসেছে, সেই দেশের নামে সঞ্চালক স্লোগান ধরেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একই অনুষ্ঠানের আরেকটি ভিডিওতে এর সত্যতা মেলে। সেখানে দেখা যায়, মিসরের বক্তা মঞ্চে ওঠার পর ‘মিসর জিন্দাবাদ’ স্লোগানে তাঁকে স্বাগত জানানো হচ্ছে।
ভাইরাল ভিডিওটির বিষয়ে জানতে আয়োজক প্রতিষ্ঠান সাওতুল কোরআন ইনস্টিটিউটের পরিচালক হাফেজ তাওহিদের মুঠোফোনে ফোন করলেও তিনি তা ধরেননি।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সন্দ্বীপের মুক্তিযোদ্ধারা। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সোলায়মান বাদশা প্রথম আলোকে বলেন, ‘“পাকিস্তান জিন্দাবাদ” স্লোগান দেওয়া ধৃষ্টতা। এর নিন্দা জানাই। কেবল নিন্দা নয়, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমি জানিয়ে দিতে চাই, এমন স্লোগান আমরা সহ্য করব না।’
জানতে চাইলে সন্দ্বীপের নির্বাহী কর্মকর্তা মংচিংনু মারমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ভিডিওটি দেখিনি, কেউ আমার নজরেও আনেনি। যদি এমনটি হয়, তা দুঃখজনক। আমি বিস্তারিত জানতে চেষ্টা করব।’
সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম সফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘এমন বিষয় আমার জানা নেই। কেউ যদি এমন স্লোগান দিয়ে থাকেন, তাহলে আমরা খতিয়ে দেখব।’