প্রায় ১৩ বছর বন্ধ থাকার পর খুলতে যাচ্ছে ঢাকা-করাচির আকাশপথ। পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ইকবাল হোসেন খান বলেছেন, ঢাকা-করাচি রুটে সপ্তাহে তিনটি সরাসরি ফ্লাইট চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। 

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও টিভি। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার (৩ ডিসেম্বর) পাকিস্তানের ফরেন সার্ভিসেস একাডেমিতে একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্যের পর দ্য নিউজ-এর সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  

করাচি রুটে ফ্লাইট চালুর বিষয়ে বাংলাদেশের হাইকমিশনার বলেন, “হ্যাঁ, আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট শুরু করছি। আমাদের জাতীয় বিমান সংস্থা করাচিতে সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করবে।”

রুটটি ভারতীয় আকাশসীমার উপর দিয়ে যাবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ভারতীয় বিমান যেমন বাংলাদেশের আকাশসীমা ব্যবহার করতে পারে, তেমনি বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইটও ভারতের উপর দিয়ে উড়বে।”

পাকিস্তানের সরকারি একটি সূত্র দ্য নিউজকে জানিয়েছে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের চলমান আকাশসীমার নিষেধাজ্ঞার কারণে, বর্তমানে পাকিস্তানের বিমান সংস্থাগুলোর ঢাকায় ফ্লাইট পরিচালনার কোনো তাৎক্ষণিক সম্ভাবনা নেই।

বাংলাদেশের হাইকমিশনার ফরেন সার্ভিসেস একাডেমিতে তরুণ কূটনীতিকদের সঙ্গে একটি ইন্টারেক্টিভ অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, এ ধরনের অধিবেশনগুলো এই অঞ্চলের ভবিষ্যতের প্রতিনিধিত্বকারী তরুণ কূটনীতিকদের সঙ্গে গঠনমূলক সংলাপের সুযোগ করে দিচ্ছে।

হাইকমিশনার বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্য, যোগাযোগ ও সহযোগিতার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে, কিন্তু সীমিত প্রবেশাধিকার, সীমান্ত বিধিনিষেধ ও আঞ্চলিক রাজনীতি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করছে।

তিনি বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে সম্প্রসারণ হতে পারে, তবে প্রবেশাধিকারের সীমাবদ্ধতা এখনও সবচেয়ে বড় বাধা। তিনি উল্লেখ করেন, অতীতে রেলপথ দুটি দেশের মধ্যে বাণিজ্যকে সহজতর করেছিল, কিন্তু এখন পাকিস্তানের খেজুর দুবাই হয়ে আঞ্চলিক বাজারে পৌঁছায়।

তিনি বলেন, সরাসরি প্রবেশাধিকার অর্থনীতিকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং কৃষকদের আয় বাড়াবে। কাশ্মীরের শতাব্দী প্রাচীন পশমিনা শিল্পের কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, খেজুর ও পশমিনার মতো ঐতিহ্যবাহী ক্ষেত্রগুলোকে সরাসরি বাজার রুট দেওয়া হলে বাণিজ্যের পরিমাণ বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে।

হাইকমিশনার খান বলেন, দুর্বল ভৌগোলিক সংযোগ দক্ষিণ এশিয়ার অগ্রগতির সবচেয়ে গুরুতর বাধা, যদিও প্রাচীন বাণিজ্য রুটগুলো একসময় কাবুল, পেশোয়ার, ঢাকা ও মায়ানমারকে সংযুক্ত করেছিল।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, কোনো দেশই বিচ্ছিন্নভাবে অগ্রগতি করতে পারে না এবং আঞ্চলিক সহযোগিতাই একমাত্র বাস্তব উপায়। বিমসটেকের কথা উল্লেখ করে তিনি এটিকে ভারত, থাইল্যান্ড এবং বাংলাদেশসহ একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক গোষ্ঠী হিসেবে অভিহিত করেন। তবে বলেন যে, সীমান্ত বিধিনিষেধ এবং বৃহত্তর শক্তির আচরণ প্রায়শই আঞ্চলিক আস্থাকে দুর্বল করে দেয়।

তিনি বলেন, ঔপনিবেশিক মানসিকতা, আদর্শিক আধিপত্য এবং আঞ্চলিক আধিপত্যের প্রতি প্রবণতা প্রায়শই আঞ্চলিক সংস্থাগুলোর কার্যকারিতাকে বাধাগ্রস্ত করে।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, দক্ষিণ এশীয় দেশগুলো যদি সম্মিলিত অগ্রগতিকে অগ্রাধিকার দেয় এবং নীতি নির্ধারণের কেন্দ্রবিন্দুতে সহযোগিতা স্থাপন করে তাহলে আঞ্চলিক বাণিজ্য, সংযোগ এবং ভাগাভাগি উন্নয়নের একটি নতুন যুগ রূপ নিতে পারে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উল ল খ ফ ল ইট

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে পরিবার পরিকল্পনা সহকারীদের কর্মবিরতি

নিয়োগ বিধি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে গোপালগঞ্জে তৃতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন পরিবার পরিকল্পনা সহকর্মীরা।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের সামনে এই কর্মসূচি শুরু করেন তারা। এসময় আন্দোলনকারীদের বিভিন্ন স্লোগান দিতে শোনা যায়।

আরো পড়ুন:

মুন্সীগঞ্জে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের কর্মবিরতি

ঝালকাঠিতে পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক ও পরিবার কল্যাণ সহকারীদের কর্মবিরতি

আন্দোলনকারীরা জানান, গত ২৬ বছরে ৩৩ হাজার কর্মীকে বঞ্চিত করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে নিয়োগবিধি বাস্তবায়ন করতে হবে। আন্দোলন আগামী ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। এরপরও দাবি মানা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

এ সময় বক্তব্য রাখেন- পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক নরোত্তম মন্ডল, শেখ রায়হান, ফয়সাল হোসাইন, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা সালমা আক্তার, পরিবার কল্যাণ সহকারী স্মৃতি রানী আশ্চার্য।

ঢাকা/বাদল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ