সপ্তাহে ৩ দিন বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইট যাবে পাকিস্তানে
Published: 4th, December 2025 GMT
প্রায় ১৩ বছর বন্ধ থাকার পর খুলতে যাচ্ছে ঢাকা-করাচির আকাশপথ। পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ইকবাল হোসেন খান বলেছেন, ঢাকা-করাচি রুটে সপ্তাহে তিনটি সরাসরি ফ্লাইট চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও টিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার (৩ ডিসেম্বর) পাকিস্তানের ফরেন সার্ভিসেস একাডেমিতে একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্যের পর দ্য নিউজ-এর সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
করাচি রুটে ফ্লাইট চালুর বিষয়ে বাংলাদেশের হাইকমিশনার বলেন, “হ্যাঁ, আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট শুরু করছি। আমাদের জাতীয় বিমান সংস্থা করাচিতে সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করবে।”
রুটটি ভারতীয় আকাশসীমার উপর দিয়ে যাবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ভারতীয় বিমান যেমন বাংলাদেশের আকাশসীমা ব্যবহার করতে পারে, তেমনি বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইটও ভারতের উপর দিয়ে উড়বে।”
পাকিস্তানের সরকারি একটি সূত্র দ্য নিউজকে জানিয়েছে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের চলমান আকাশসীমার নিষেধাজ্ঞার কারণে, বর্তমানে পাকিস্তানের বিমান সংস্থাগুলোর ঢাকায় ফ্লাইট পরিচালনার কোনো তাৎক্ষণিক সম্ভাবনা নেই।
বাংলাদেশের হাইকমিশনার ফরেন সার্ভিসেস একাডেমিতে তরুণ কূটনীতিকদের সঙ্গে একটি ইন্টারেক্টিভ অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, এ ধরনের অধিবেশনগুলো এই অঞ্চলের ভবিষ্যতের প্রতিনিধিত্বকারী তরুণ কূটনীতিকদের সঙ্গে গঠনমূলক সংলাপের সুযোগ করে দিচ্ছে।
হাইকমিশনার বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্য, যোগাযোগ ও সহযোগিতার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে, কিন্তু সীমিত প্রবেশাধিকার, সীমান্ত বিধিনিষেধ ও আঞ্চলিক রাজনীতি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করছে।
তিনি বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে সম্প্রসারণ হতে পারে, তবে প্রবেশাধিকারের সীমাবদ্ধতা এখনও সবচেয়ে বড় বাধা। তিনি উল্লেখ করেন, অতীতে রেলপথ দুটি দেশের মধ্যে বাণিজ্যকে সহজতর করেছিল, কিন্তু এখন পাকিস্তানের খেজুর দুবাই হয়ে আঞ্চলিক বাজারে পৌঁছায়।
তিনি বলেন, সরাসরি প্রবেশাধিকার অর্থনীতিকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং কৃষকদের আয় বাড়াবে। কাশ্মীরের শতাব্দী প্রাচীন পশমিনা শিল্পের কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, খেজুর ও পশমিনার মতো ঐতিহ্যবাহী ক্ষেত্রগুলোকে সরাসরি বাজার রুট দেওয়া হলে বাণিজ্যের পরিমাণ বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে।
হাইকমিশনার খান বলেন, দুর্বল ভৌগোলিক সংযোগ দক্ষিণ এশিয়ার অগ্রগতির সবচেয়ে গুরুতর বাধা, যদিও প্রাচীন বাণিজ্য রুটগুলো একসময় কাবুল, পেশোয়ার, ঢাকা ও মায়ানমারকে সংযুক্ত করেছিল।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, কোনো দেশই বিচ্ছিন্নভাবে অগ্রগতি করতে পারে না এবং আঞ্চলিক সহযোগিতাই একমাত্র বাস্তব উপায়। বিমসটেকের কথা উল্লেখ করে তিনি এটিকে ভারত, থাইল্যান্ড এবং বাংলাদেশসহ একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক গোষ্ঠী হিসেবে অভিহিত করেন। তবে বলেন যে, সীমান্ত বিধিনিষেধ এবং বৃহত্তর শক্তির আচরণ প্রায়শই আঞ্চলিক আস্থাকে দুর্বল করে দেয়।
তিনি বলেন, ঔপনিবেশিক মানসিকতা, আদর্শিক আধিপত্য এবং আঞ্চলিক আধিপত্যের প্রতি প্রবণতা প্রায়শই আঞ্চলিক সংস্থাগুলোর কার্যকারিতাকে বাধাগ্রস্ত করে।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, দক্ষিণ এশীয় দেশগুলো যদি সম্মিলিত অগ্রগতিকে অগ্রাধিকার দেয় এবং নীতি নির্ধারণের কেন্দ্রবিন্দুতে সহযোগিতা স্থাপন করে তাহলে আঞ্চলিক বাণিজ্য, সংযোগ এবং ভাগাভাগি উন্নয়নের একটি নতুন যুগ রূপ নিতে পারে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ ল ইট উল ল খ
এছাড়াও পড়ুন:
খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স দিতে চায় কাতার
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার জন্যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে সহযোগিতা করবে কাতার।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে কাতারের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার সকালে বিএনপিকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে ২৯ নভেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করতে বিএনপির পক্ষ থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চিঠি লেখেন ঢাকায় কাতারের রাষ্ট্রদূত সেরাইয়া আলী আল কাহতানির কাছে।
গত ২৩ নভেম্বর রাতে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরীক্ষায় ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ায় তাঁকে ভর্তি করা হয়। গত রোববার ভোরের দিকে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে এসডিইউ থেকে সিসিইউতে নেওয়া হয়।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেখতে আজও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে ভিড় করছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে নেতা-কর্মীদের ভিড় দেখা যায়।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সহায়তায় যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রিচার্ড বিয়েল গতকাল বিকেলে ঢাকায় এসেছেন। তাঁর চিকিৎসায় চিকিৎসায় সহায়তা করতে গতকালই যোগ দেন চীন থেকে আসা চার সদস্যের আরেকটি চিকিৎসক দল। গতকাল রাত নয়টার পর তাঁরা ঢাকায় অবতরণ করেন। সেখান থেকে তাঁরা সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে আসেন।
দেশের একদল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস হাসপাতালের চিকিৎসক এবং লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অধীন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে। তাঁর চিকিৎসায় সহায়তা করতে ১ ডিসেম্বর চীনের চিকিৎসকদের পাঁচ সদস্যের একটি অগ্রবর্তী দল ঢাকায় আসে।