ইউরোপের দেশ নরওয়েতে নির্মাণ করা হচ্ছে ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সড়ক। তবে এটি মাটির ওপরে নয়, সাগরতলে। এর সর্বোচ্চ গভীরতা হবে ১ হাজার ২৮৬ ফুট বা ৩৯২ মিটার। নির্মাণকাজ শেষ হলে এটিই হবে সাগরতলে থাকা বিশ্বের সবচেয়ে গভীর ও দীর্ঘ সড়কপথ।

সড়কটি নির্মাণ করা হবে একটি সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘রোগফাস্ট’। সড়কটির নির্মাণকাজ প্রথমে হাতে নেওয়া হয়েছিল ২০১৮ সালে। খরচ বেড়ে যাওয়ায় এক বছর পরেই তা বাতিল করা হয়। ২০২১ সালে আবার সড়কটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। সব ঠিকঠাক থাকলে কাজ শেষ হবে ২০৩৩ সালে। এতে মোট খরচ পড়বে ২৪০ কোটি ডলার।

সড়কপথটির উত্তরের অংশ নির্মাণ করছে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান স্কানস্কা। প্রতিষ্ঠানটির প্রকল্প পরিচালক অ্যান ব্রিট মোয়েন বলেন, সড়কটি নির্মাণ শেষ হলে নরওয়ের পশ্চিম উপকূলের যোগাযোগব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে। সেখানকার স্ট্যাভানগার ও বার্জেন শহরের মধ্যে যাতায়াতে আর ফেরির প্রয়োজন পড়বে না। ফলে আগের চেয়ে ৪০ মিনিট কম সময় লাগবে।

বিশাল এই প্রকল্প বাস্তবায়নে চলছে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। একসঙ্গে সুড়ঙ্গের দুই দিক দিয়ে নির্মাণকাজ শুরু করা হয়েছে। রয়েছে নানা বাধা। যেমন প্রকৌশলীরা যখন সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩০০ মিটার নিচে সুড়ঙ্গ নির্মাণে কাজ করছেন, তখন বিভিন্ন স্থানে ছিদ্র হয়ে পানি প্রবেশ করছে। সর্বোচ্চ গভীরতায় (৩৯২ মিটার) গেলে সমস্যা আরও বাড়বে—এমন শঙ্কা রয়েছে।

আরেকটি বড় সমস্যা হলো, এতটা গভীরে আর বদ্ধ জায়গায় শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এটি সমাধানে বিশেষ ধরনের বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ ছাড়া সড়ক নির্মাণের ফলে বন্ধ হয়ে যাবে ফেরি চলাচল। অনেকেই কাজ হারাবেন। যদিও একই সঙ্গে সাগরতলের সড়ক তত্ত্বাবধানের জন্য নতুন কাজের সুযোগ তৈরি হবে।

বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সুড়ঙ্গটি রয়েছে জাপানের উত্তরাঞ্চলে। সেইকান টানেল নামের ওই সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য প্রায় ৫৪ কিলোমিটার। এর সাগরতলের অংশ ২৩ কিলোমিটারের বেশি। এরপরেই রয়েছে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সকে যুক্ত করা দ্য চ্যানেল টানেল। এই সুড়ঙ্গের ৩৮ কিলোমিটার সাগরতলে—দৈর্ঘ্যে যা রোগফাস্টের চেয়ে বেশি। এই দুই সুড়ঙ্গ দিয়ে শুধু ট্রেন চলাচল করে। তবে গভীরতার দিক দিয়ে দুই সুড়ঙ্গের কোনোটিই নরওয়ের রোগফাস্টের ধারেকাছে নেই।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন বোন উজমা

পাকিস্তানের কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে তাঁর বোন উজমা খান দেখা করার অনুমতি পেয়েছেন। তিনি আজই ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন। দেশটির আদিয়ালা কারাগার কর্তৃপক্ষ তাঁকে এই অনুমতি দিয়েছে। ইমরান এই কারাগারে বন্দী রয়েছেন। তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) ঘোষিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

জিও নিউজের বরাতে জানা যায়, উজমাকে জানানো হয়েছে, তিনি কারাগারের ভেতরে পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। সেখানে যাওয়ার আগে উজমা তাঁর আরেক বোন আলিমা খানের সঙ্গে কথা বলেন।

পিটিআইয়ের কর্মসূচির অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে উজমা ও আলিমাসহ অন্য বোনেরা ফ্যাক্টরি নাকা এলাকায় পৌঁছান। সেখানকার সড়কটি আগেই পুলিশ বন্ধ করে দিয়েছিল। ওই সড়কটি আদিয়ালা কারাগারের দিকে গিয়েছে। চেকপোস্টে নারী সদস্যসহ বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সড়কে দাঙ্গাবিরোধী ব্যারিকেড বসানো হয়েছে।

এত বাধা সত্ত্বেও আলিমা ও তাঁর বোনেরা হেঁটেই আদিয়ালা কারাগারের দিকে রওনা দেন। তবে গোরখপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশ তাঁদের থামিয়ে দেয়।

ভাই ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি পাওয়ার পর বোন উজমা খান কারাগারের দিকে রওনা হয়েছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, শেষ পর্যন্ত ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পেয়ে তিনি খুশি।

ইমরান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলার বিচারকাজ চলছে। এর মধ্যে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের অভিযোগেও মামলা রয়েছে।

আরও পড়ুনভারতীয় সংবাদমাধ্যমে ইমরানের বোন কেন সাক্ষাৎকার দিলেন, ক্ষুব্ধ পাকিস্তান সরকার০১ ডিসেম্বর ২০২৫

গত সপ্তাহে ইমরানের বোন আলিমা খান, উজমা খান, নোরিন খান নিয়াজিসহ ইমরানের দল পিটিআইয়ের বেশ কয়েকজন সদস্য কারাগারের বাইরে জড়ো হন। পিটিআই বলছে, নারীরা শান্তভাবে বসে ছিলেন। অথচ পুলিশ তাঁদের সহিংসভাবে আটক করেছে।

তবে মন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার তাঁদের নির্দোষ মানতে রাজি নন। তাঁর দাবি, ২০২৩ সালের ৯ মে প্রথম দফায় ইমরানকে গ্রেপ্তারের পর যে সহিংসতা হয়েছিল, তার সঙ্গে ইমরানের বোনেরা সম্পৃক্ত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন বোন উজমা