তালা কেটে কার্যালয় থেকে বের হলেন রাজশাহী মহানগর এনসিপির নেতারা
Published: 4th, December 2025 GMT
জেলা কমিটি বাতিলের দাবিতে রাজশাহী মহানগর এনসিপির কয়েকজন নেতাকে ভেতরে রেখে কার্যালয়ে তালা দেন ‘জুলাই যোদ্ধা’ দাবিকারী একদল তরুণ। গতকাল বুধবার রাত ৯টার দিকে তাঁরা মিছিল নিয়ে নগরের গণকপাড়া এলাকায় ওই কার্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। এর প্রায় দুই ঘণ্টা পর তালা কেটে সেখান থেকে এনসিপির নেতাদের বের করা হয়।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, গতকাল রাত পৌনে ৯টার দিকে একদল তরুণ রাজশাহী মহানগর এনসিপির কার্যালয়ের প্রবেশ করেন। এরপর উত্তেজিত হয়ে বলতে থাকেন, ‘এই বাইরন, বাইরন। আজ থেকে মহানগর এনসিপির সব কার্যক্রম বন্ধ। রাজশাহীতে এনসিপিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হচ্ছে।’ এ ছাড়া ওই তরুণেরা ‘ইনকিলাব, ইনকিলাব, জিন্দাবাদ, জিন্দাবাদ’, ‘অ্যাকশন, অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘আওয়ামী লীগের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘দালালি না আজাদি, আজাদি, আজাদি’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম, সংগ্রাম’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
আরও পড়ুনরাজশাহীতে এনসিপির সংবাদ সম্মেলনে যাওয়া সাংবাদিকদের ‘তালা মেরে’ আটকে রাখার হুমকি০১ ডিসেম্বর ২০২৫একপর্যায়ে এনসিপির মহানগর কমিটির আহ্বায়ক মোবাশ্বের আলী বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। তবে তাঁরা শান্ত না হয়ে নিচে নেমে যান এবং নেতাদের কার্যালয় ত্যাগের জন্য ২০ মিনিট সময় বেঁধে দেন। এর কিছুক্ষণ পর রাত ৯টার দিকে নেতাদের ভেতরে রেখেই প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেন তাঁরা। পরে রাত ১১টার দিকে এনসিপির কর্মীরা তালা কেটে অবরুদ্ধ আট নেতাকে বের করে আনেন।
তালা দেওয়ার পর এনসিপির কার্যালয়ের ফটকে বিক্ষুব্ধরা ক্রস চিহ্ন দিয়ে লেখেন, ‘আওয়ামী লীগ বয়কট, দালাল বয়কট, বয়কট পুনর্বাসনকারী, বয়কট এনসিপি’।
রাজশাহী মহানগর এনসিপির ওই কার্যালয়ে শাখার সদস্যসচিবসহ আটজন গতকাল তালাবদ্ধ ছিলেন বলে জানান আহ্বায়ক মোবাশ্বের আলী। তিনি বলেন, ‘গতকাল যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা জুলাই আন্দোলনে রাজপথে ছিলেন। জেলা কমিটি তাঁরা মানতে পারছেন না। তাঁদের আন্দোলন যৌক্তিক। তবে এই কমিটি দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের কোনো হস্তক্ষেপ নেই, কেন্দ্রীয় কমিটি এটি দিয়েছে। এ বিষয়ে কেন্দ্র দ্রুত সিদ্ধান্ত নিক।’
জেলা কমিটি থেকে আরও ৫ জনের পদত্যাগএনসিপির রাজশাহী জেলার আহ্বায়ককে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে একই কমিটির আরও পাঁচ সদস্য পদত্যাগ করেছেন। তাঁরা এই কমিটিকে বিলুপ্তের দাবি জানিয়ে গতকাল বুধবার পদত্যাগপত্র কেন্দ্রে পাঠান। এ নিয়ে জেলা কমিটির মোট ১১ জন নিজেদের পদত্যাগের কথা জানিয়েছেন।
নতুন করে পদত্যাগকারী নেতারা হলেন আজিজুল ইসলাম, আসাদ, মিলন চন্দ্র ঘোষ, মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, নঈম ফকির। তাঁরা গত ২৯ নভেম্বর এনসিপির ঘোষিত রাজশাহী জেলা কমিটিতে সদস্যপদ পান।
পদত্যাগপত্রে ওই ৫ জন উল্লেখ করেন, ‘আমরা জুলাই আন্দোলনে সম্মুখের যোদ্ধা ছিলাম, স্বৈরাচার হটানোর জন্য আন্দোলন করলাম। অথচ সেই স্বৈরাচারের অন্যতম দোসর সাইফুল ইসলামকে রাজশাহীর আহ্বায়ক করে জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা অবিলম্বে এ কমিটি বাতিলের অনুরোধ জানাচ্ছি।’
২৯ নভেম্বর রাতে ১১৪ সদস্যবিশিষ্ট এনসিপির রাজশাহী জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে সাইফুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও রনিউর রহমানকে সদস্যসচিব করা হয়। কমিটি ঘোষণার পরদিনই যুগ্ম সদস্যসচিব জিহান মোবারক সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগ করেন।
অভিযোগের বিষয়ে সাইফুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছিলেন, ‘যদি সাংগঠনিক আলোচনা বা কোনো পদ থাকে, তবেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা বলা যাবে। আমার কোনো পদ ছিল না।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এনস প র ক পদত য গ ল ইসল ম আওয় ম গতক ল সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
তালা কেটে কার্যালয় থেকে বের হলেন রাজশাহী মহানগর এনসিপির নেতারা
জেলা কমিটি বাতিলের দাবিতে রাজশাহী মহানগর এনসিপির কয়েকজন নেতাকে ভেতরে রেখে কার্যালয়ে তালা দেন ‘জুলাই যোদ্ধা’ দাবিকারী একদল তরুণ। গতকাল বুধবার রাত ৯টার দিকে তাঁরা মিছিল নিয়ে নগরের গণকপাড়া এলাকায় ওই কার্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। এর প্রায় দুই ঘণ্টা পর তালা কেটে সেখান থেকে এনসিপির নেতাদের বের করা হয়।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, গতকাল রাত পৌনে ৯টার দিকে একদল তরুণ রাজশাহী মহানগর এনসিপির কার্যালয়ের প্রবেশ করেন। এরপর উত্তেজিত হয়ে বলতে থাকেন, ‘এই বাইরন, বাইরন। আজ থেকে মহানগর এনসিপির সব কার্যক্রম বন্ধ। রাজশাহীতে এনসিপিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হচ্ছে।’ এ ছাড়া ওই তরুণেরা ‘ইনকিলাব, ইনকিলাব, জিন্দাবাদ, জিন্দাবাদ’, ‘অ্যাকশন, অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘আওয়ামী লীগের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘দালালি না আজাদি, আজাদি, আজাদি’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম, সংগ্রাম’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
আরও পড়ুনরাজশাহীতে এনসিপির সংবাদ সম্মেলনে যাওয়া সাংবাদিকদের ‘তালা মেরে’ আটকে রাখার হুমকি০১ ডিসেম্বর ২০২৫একপর্যায়ে এনসিপির মহানগর কমিটির আহ্বায়ক মোবাশ্বের আলী বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। তবে তাঁরা শান্ত না হয়ে নিচে নেমে যান এবং নেতাদের কার্যালয় ত্যাগের জন্য ২০ মিনিট সময় বেঁধে দেন। এর কিছুক্ষণ পর রাত ৯টার দিকে নেতাদের ভেতরে রেখেই প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেন তাঁরা। পরে রাত ১১টার দিকে এনসিপির কর্মীরা তালা কেটে অবরুদ্ধ আট নেতাকে বের করে আনেন।
তালা দেওয়ার পর এনসিপির কার্যালয়ের ফটকে বিক্ষুব্ধরা ক্রস চিহ্ন দিয়ে লেখেন, ‘আওয়ামী লীগ বয়কট, দালাল বয়কট, বয়কট পুনর্বাসনকারী, বয়কট এনসিপি’।
রাজশাহী মহানগর এনসিপির ওই কার্যালয়ে শাখার সদস্যসচিবসহ আটজন গতকাল তালাবদ্ধ ছিলেন বলে জানান আহ্বায়ক মোবাশ্বের আলী। তিনি বলেন, ‘গতকাল যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা জুলাই আন্দোলনে রাজপথে ছিলেন। জেলা কমিটি তাঁরা মানতে পারছেন না। তাঁদের আন্দোলন যৌক্তিক। তবে এই কমিটি দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের কোনো হস্তক্ষেপ নেই, কেন্দ্রীয় কমিটি এটি দিয়েছে। এ বিষয়ে কেন্দ্র দ্রুত সিদ্ধান্ত নিক।’
জেলা কমিটি থেকে আরও ৫ জনের পদত্যাগএনসিপির রাজশাহী জেলার আহ্বায়ককে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে একই কমিটির আরও পাঁচ সদস্য পদত্যাগ করেছেন। তাঁরা এই কমিটিকে বিলুপ্তের দাবি জানিয়ে গতকাল বুধবার পদত্যাগপত্র কেন্দ্রে পাঠান। এ নিয়ে জেলা কমিটির মোট ১১ জন নিজেদের পদত্যাগের কথা জানিয়েছেন।
নতুন করে পদত্যাগকারী নেতারা হলেন আজিজুল ইসলাম, আসাদ, মিলন চন্দ্র ঘোষ, মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, নঈম ফকির। তাঁরা গত ২৯ নভেম্বর এনসিপির ঘোষিত রাজশাহী জেলা কমিটিতে সদস্যপদ পান।
পদত্যাগপত্রে ওই ৫ জন উল্লেখ করেন, ‘আমরা জুলাই আন্দোলনে সম্মুখের যোদ্ধা ছিলাম, স্বৈরাচার হটানোর জন্য আন্দোলন করলাম। অথচ সেই স্বৈরাচারের অন্যতম দোসর সাইফুল ইসলামকে রাজশাহীর আহ্বায়ক করে জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা অবিলম্বে এ কমিটি বাতিলের অনুরোধ জানাচ্ছি।’
২৯ নভেম্বর রাতে ১১৪ সদস্যবিশিষ্ট এনসিপির রাজশাহী জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে সাইফুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও রনিউর রহমানকে সদস্যসচিব করা হয়। কমিটি ঘোষণার পরদিনই যুগ্ম সদস্যসচিব জিহান মোবারক সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগ করেন।
অভিযোগের বিষয়ে সাইফুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছিলেন, ‘যদি সাংগঠনিক আলোচনা বা কোনো পদ থাকে, তবেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা বলা যাবে। আমার কোনো পদ ছিল না।’