মিয়ানমারে আফিমের চাষ ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। দেশটিতে উৎপাদিত হেরোইন এখন পশ্চিমের কোনো কোনো দেশে পাচার হচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বুধবার প্রকাশিত জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ দপ্তরের (ইউএনওডিসি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

যুদ্ধবিধ্বস্ত মিয়ানমার এখন নানা ধরনের মূল্যবান ধাতুর খনি অবৈধভাবে খনন, ইন্টারনেট প্রতারণা এবং মেথামফেটামিন (ক্রিস্টাল মেথ) ও হেরোইনজাতীয় নিষিদ্ধ মাদক তৈরির মতো কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

মিয়ানমার দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের শীর্ষ আফিম উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। ২০২২ সালে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার নিজ দেশে আফিম উৎপাদনে কড়াকড়ি আরোপের পর মাদকপণ্যটির উৎপাদনে শীর্ষ স্থানে উঠে আসে মিয়ানমার।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, মিয়ানমারের এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড দেশটিতে চলমান গৃহযুদ্ধের অর্থের প্রধান উৎস। ২০২১ সালের সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটির প্রায় সব অঞ্চলে গৃহযুদ্ধ চলছে।

ইউএনওডিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর মিয়ানমারে ৫৩ হাজারের বেশি হেক্টর জমিনে আফিম চাষ হয়েছে, যা ২০১৫ সালের পর সর্বোচ্চ।

এর আগে ইউএনওডিসির ‘মিয়ানমার আফিম সার্ভে’ নামে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, আফগানিস্তানে কড়াকড়ি আরোপের পর ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার হেরোইন এমন এক বাজারে পৌঁছাতে শুরু করেছে, যেখানে এ অঞ্চল থেকে আগে তা যেত না।’

বুধবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ ও ২০২৫-এর শুরুতে থাইল্যান্ড থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) যাওয়া কয়েকজন বিমানযাত্রীর কাছ থেকে ৬০ কেজি (১৩২ পাউন্ড) হেরোইন জব্দ করা হয়েছিল। এসব হেরোইন মিয়ানমারে উৎপাদিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

জব্দ হেরোইন সম্পর্কে প্রতিবেদনের ভাষ্যমতে, এ পরিমাণটা উল্লেখযোগ্য কিছু নয়। কিন্তু দেশটির পরিবর্তিত পরিস্থিত আফিম চাষ ও উৎপাদন বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে পারে।

আফিম চাষে বর্তমানে বিশ্বে শীর্ষে উঠে এলেও দেশটিতে এর চাষ নতুন কিছু নয়। চলমান গৃহযুদ্ধের আগে থেকে দেশটিতে ব্যাপকভাবে আফিম চাষ করা হতো।

কিন্তু কিছু পর্যবেক্ষকের মতে, গৃহযুদ্ধের কারণে মিয়ানমার থেকে আফিম পাচারের বাজার বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ, যুদ্ধের ফলে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার দুর্বল হয়ে পড়েছে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে চলা যুদ্ধের কারণে দেশটির শিল্পকাঠামো ধ্বংস হয়ে পড়েছে। অব্যাহত দারিদ্র্যের চাপে মানুষের মধ্যে হতাশা বেড়েছে।

মিয়ানমারের জান্তা সরকার ২৮ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু তারা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এ পরিস্থিতিতে নির্বাচনকে নিজেদের শাসন দীর্ঘায়িত করার কৌশল বলে মনে করেন অনেক পর্যবেক্ষক।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ শট ত হ র ইন দ শট র উৎপ দ

এছাড়াও পড়ুন:

মিয়ানমারে আফিমের চাষ ১০ বছরের সর্বোচ্চে

মিয়ানমারে আফিমের চাষ ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। দেশটিতে উৎপাদিত হেরোইন এখন পশ্চিমের কোনো কোনো দেশে পাচার হচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বুধবার প্রকাশিত জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ দপ্তরের (ইউএনওডিসি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

যুদ্ধবিধ্বস্ত মিয়ানমার এখন নানা ধরনের মূল্যবান ধাতুর খনি অবৈধভাবে খনন, ইন্টারনেট প্রতারণা এবং মেথামফেটামিন (ক্রিস্টাল মেথ) ও হেরোইনজাতীয় নিষিদ্ধ মাদক তৈরির মতো কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

মিয়ানমার দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের শীর্ষ আফিম উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। ২০২২ সালে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার নিজ দেশে আফিম উৎপাদনে কড়াকড়ি আরোপের পর মাদকপণ্যটির উৎপাদনে শীর্ষ স্থানে উঠে আসে মিয়ানমার।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, মিয়ানমারের এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড দেশটিতে চলমান গৃহযুদ্ধের অর্থের প্রধান উৎস। ২০২১ সালের সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটির প্রায় সব অঞ্চলে গৃহযুদ্ধ চলছে।

ইউএনওডিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর মিয়ানমারে ৫৩ হাজারের বেশি হেক্টর জমিনে আফিম চাষ হয়েছে, যা ২০১৫ সালের পর সর্বোচ্চ।

এর আগে ইউএনওডিসির ‘মিয়ানমার আফিম সার্ভে’ নামে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, আফগানিস্তানে কড়াকড়ি আরোপের পর ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার হেরোইন এমন এক বাজারে পৌঁছাতে শুরু করেছে, যেখানে এ অঞ্চল থেকে আগে তা যেত না।’

বুধবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ ও ২০২৫-এর শুরুতে থাইল্যান্ড থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) যাওয়া কয়েকজন বিমানযাত্রীর কাছ থেকে ৬০ কেজি (১৩২ পাউন্ড) হেরোইন জব্দ করা হয়েছিল। এসব হেরোইন মিয়ানমারে উৎপাদিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

জব্দ হেরোইন সম্পর্কে প্রতিবেদনের ভাষ্যমতে, এ পরিমাণটা উল্লেখযোগ্য কিছু নয়। কিন্তু দেশটির পরিবর্তিত পরিস্থিত আফিম চাষ ও উৎপাদন বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে পারে।

আফিম চাষে বর্তমানে বিশ্বে শীর্ষে উঠে এলেও দেশটিতে এর চাষ নতুন কিছু নয়। চলমান গৃহযুদ্ধের আগে থেকে দেশটিতে ব্যাপকভাবে আফিম চাষ করা হতো।

কিন্তু কিছু পর্যবেক্ষকের মতে, গৃহযুদ্ধের কারণে মিয়ানমার থেকে আফিম পাচারের বাজার বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ, যুদ্ধের ফলে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার দুর্বল হয়ে পড়েছে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে চলা যুদ্ধের কারণে দেশটির শিল্পকাঠামো ধ্বংস হয়ে পড়েছে। অব্যাহত দারিদ্র্যের চাপে মানুষের মধ্যে হতাশা বেড়েছে।

মিয়ানমারের জান্তা সরকার ২৮ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু তারা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এ পরিস্থিতিতে নির্বাচনকে নিজেদের শাসন দীর্ঘায়িত করার কৌশল বলে মনে করেন অনেক পর্যবেক্ষক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ