ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আহ্বানে ২৩তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে আজ বৃহস্পতিবার দিল্লি আসছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার আগেই রাশিয়ার পার্লামেন্ট ভারতের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ এক সামরিক চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ ওই চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশের সামরিক বাহিনী একে অপরকে লজিস্টিক্যাল সাপোর্ট দেবে, অর্থাৎ এক দেশের বাহিনী অপর দেশে গিয়ে সামরিক পরিকাঠামো ব্যবহার করতে পারবে।

আরো পড়ুন:

ইউক্রেন চুক্তি চূড়ান্ত করতে পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন ট্রাম্পের দূত

ইউক্রেনের কৌশলগত শহর পোকরোভস্ক দখলের দাবি রাশিয়ার

পুতিন দুই দিনের সফরে ভারতে আসছেন। এই সফরে সামরিক, বাণিজ্য ও খনিজ তেলের বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিকে পুতিনের সফর শুরুর ঠিক আগেই তার মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার ক্ষেত্রে রাশিয়া কতটা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে, তা নির্ভর করছে ভারত কতটা এগিয়ে আসতে চায়, তার ওপর।

দুই দেশের মধ্যে ‘রেসিপ্রোকাল এক্সচেঞ্জ অফ লজিস্টিক সাপোর্ট’ বা ‘রেলোস’ চুক্তি সই হয়ে গিয়েছিল গত ১৮ ফেব্রুয়ারি। তবে সেটি মঙ্গলবার রাশিয়ার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ‘স্টেট ড্যুমা’র অনুমোদন পেল।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, গত সপ্তাহে চুক্তিটি ‘ড্যুমা’র কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিন।

পিটিআই জানিয়েছে, ‘স্টেট ড্যুমা’র স্পিকার ভ্যাচেস্লাভ ভোলোদিন সভার শুরুতে তার ভাষণে ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ককে ‘সার্বিক এবং কৌশলগত’ বলে বর্ণনা করেন এবং এই সম্পর্ককে যে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয় তার দেশ, সেটাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “যে চুক্তির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে, তা পারস্পরিক বোঝাপড়া আরো বাড়াবে এবং নিঃসন্দেহে আমাদের সম্পর্ক আরো উন্নত করবে।”

ভারত আর রাশিয়ার মধ্যে যে রেসিপ্রোকাল এক্সচেঞ্জ অফ লজিস্টিক সাপোর্ট বা ‘রেলোস’ চুক্তি হয়েছে, তা মূলত এক দেশ অপর দেশটিতে সামরিক বাহিনীর সদস্য, সরঞ্জাম, যুদ্ধ জাহাজ, সামরিক বিমান পাঠানোর কার্যপদ্ধতি।

শুধু যে বাহিনীর সদস্যদের অথবা সরঞ্জাম একটি দেশ অপর দেশে পাঠাতে পারবে ‘রেলোস’ চুক্তি অনুযায়ী, তা নয়। অপর দেশটিতে গিয়ে সেখানকার সামরিক পরিকাঠামোও ব্যবহার করা যাবে।

যৌথ মহড়া, প্রশিক্ষণ, মানবিক সহায়তা এবং ত্রাণ ও উদ্ধার কাজের ক্ষেত্রে এই চুক্তি অনুযায়ী সামরিক সহায়তা করবে একে অপরকে। ‘স্টেট ড্যুমা’র ওয়েবসাইটে রাশিয়ার মন্ত্রিসভাকে উদ্ধৃত করে লেখা হয়েছে যে একটি দেশ অপর দেশের আকাশসীমা এবং বন্দর সামরিক প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারবে।

সংবাদ সংস্থা রয়টার্স বলছে, দিল্লি সফরকালে পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় সুখোই-ফিফটি সেভেন যুদ্ধবিমান ভারতকে দেওয়া নিয়েও আলোচনা হতে পারে। এগুলো সব থেকে আধুনিক যুদ্ধবিমান। ভারতের ২৯টি যুদ্ধবিমানের স্কোয়াড্রন আছে, তার বেশিরভাগই রাশিয়ার তৈরি সুখোই-থার্টি। এখন তারা আরও আধুনিক সুখোই-ফিফটি সেভেনও দিতে চাইছে ভারতকে, এমনটাই দুইজন ভারতীয় কর্মকর্তার সূত্র উদ্ধৃত করে লিখেছে রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থাটি আরো জানিয়েছে, রাশিয়ার সঙ্গে এই সপ্তাহের আলোচনায় উঠে আসতে কয়েকটি এস-ফোর হান্ড্রেড আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার কথাও। গত সপ্তাহে ভারতের প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং এই ইঙ্গিত দিয়েছেন।

রাশিয়ার সঙ্গে ২০১৮ সালের এক চুক্তি অনুযায়ী ভারত ইতোমধ্যেই তিনটি এস-ফোর হান্ড্রেড পেয়ে গেছে, আরো দুটি পাওনা আছে তাদের। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে ফার্স্ট ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার মন্তুরোভ জানিয়েছেন, এস-ফোর হান্ড্রেড আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সময়মতোই সরবরাহ করা হবে। এদিকে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, শব্দের চেয়েও দ্রুতগতির 'ব্রাহ্মোস' ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নততর ভ্যারিয়্যান্ট কেনা নিয়েও আলোচনা হতে পারে।

রাশিয়ার সঙ্গে ভারত তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কতটা নিবিড় করতে চায়, সেটা দিল্লির হাতেই ছেড়ে দিয়েছে মস্কো, এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, “বল এখন ভারতের কোর্টে।”

প্রেসিডেন্ট পুতিনের সফরের ঠিক আগে, মঙ্গলবার, তার মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ যোগ দিয়েছিলেন এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে। তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের দিগন্ত যেমন বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত, ভারতের ক্ষেত্রেও তাই। তবে ওই সম্পর্ক কতটা বিস্তৃত হবে, তা নির্ভর করছে ভারতের ওপরে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অপর দ শ মন ত র অন য য়

এছাড়াও পড়ুন:

‘ফাইনাল’ ‌ম‌্যাচে সরল ভাবনায় বাংলাদেশ

আয়ারল‌্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের মিশনে বাংলাদেশ। ১-১ সমতায় থাকা সিরিজটির শেষ ম‌্যাচ আগামীকাল চট্টগ্রামে দুপুর ২টায় শুরু হবে। বিশ্বকাপের আগে এই ম‌্যাচটি বাংলাদেশের শেষ আন্তর্জাতিক ম‌্যাচ। এরপর লম্বা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বিরতি। 

মাঝে ক্রিকেটাররা খেলবেন বিপিএল। বছরের শেষ ম‌্যাচ, শেষ আন্তর্জাতিক ম‌্যাচ কি ভাবছেন ক্রিকেটাররা? ড্রেসিংরুমেই বা কি চলছে? জানতে চাওয়া হয়েছিল দলের কোচ শন টেইটের কাছে। পেস বোলিং কোচ জানালেন, স্রেফ ম‌্যাচটা জিতে সিরিজ নিশ্চিত করতে চায় বাংলাদেশ। ম‌্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে টেইট বলেছেন, ‘‘ 

``আমার মনে হয় আমাদের চিন্তাভাবনাকে খুব বেশি জটিল করার প্রয়োজন আছে। আমার মনে হয় আমাদের শুধু ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে এবং খেলা জিততে হবে। যখনই আপনি একটি ম্যাচ জেতেন আপনি তা থেকে কিছুটা আত্মবিশ্বাস অর্জন করেন। আমরা যা করতে পারি তা হল, আমাদের শেষ জেতা ম্যাচের আত্মবিশ্বাসকে পুঁজি করে ভালো খেলা এবং সেটাকে আগামীকালের ম্যাচে কাজে লাগানো। আশা করি, আমরা জিতব। যদি আমরা জয় নিশ্চিত করতে পারি, তবে বিরতির আগে এটাই আমাদের জন্য সেরা প্রাপ্তি হবে। সুতরাং, আমার মনে হয় না আমাদের চিন্তাভাবনাকে খুব বেশি জটিল করার দরকার আছে।’’

আয়ারল‌্যান্ডের বিপক্ষে সহজেই বাংলাদেশ সিরিজ জিতবে এমনটাই প্রত‌্যাশা করা হচ্ছিল। কিন্তু তেমন কিছু হয়নি। আয়ারল‌্যান্ডর প্রথম ম‌্যাচে বাংলাদেশকে ৩৯ রানে হারায়। বাংলাদেশ দ্বিতীয় ম‌্যাচে কঠিন যুদ্ধ করে ৪ উইকেটে জয় পায়। চট্টগ্রামে শেষ ম‌্যাচটি লড়াই হবে এমনটাই প্রত‌্যাশা করা হচ্ছে। 

টেইট আইরিশ শক্তিকে বেশ সমীহ করছেন। তবে তার কাছে নিজেদের ভালো ক্রিকেট খেলা, প্রক্রিয়া অনুসরণ করা এবং নিজেদের কাজটা ঠিকঠাক করার গুরুত্ব অনেক,

‘‘সত্যি বলতে, প্রতিপক্ষ কে তা বড় কথা নয়। আমরা আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া বা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই খেলি না কেন, আমাদের ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। আমাদের শুধু ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। ভালো দিক হলো, আমরা আগামীকাল আরেকটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছি, যেখানে আমরা আবারও ভালো ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করতে পারব এবং এটাই আমাদের কাম্য। যদিও আয়ারল্যান্ড কিছু ভালো ক্রিকেট খেলেছে, তারা কী করছে তা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমরা কীভাবে খেলছি। আমাদের কাল মাঠে গিয়ে ভালো খেলতে হবে। এটাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট; এখানে ভালো পারফর্ম করার প্রত্যাশা থাকে।"

চট্টগ্রাম/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘ফাইনাল’ ‌ম‌্যাচে সরল ভাবনায় বাংলাদেশ