যে ১৫ কারণে করদাতার আয়কর রিটার্নের তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়
Published: 27th, November 2025 GMT
অনেক করদাতার আয়কর রিটার্ন নিরীক্ষায় পড়ে যায়। এতে করদাতারা বিপাকে পড়ে যান। নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাঁদের।
অবশ্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়কর ফাইল আপাতত নিরীক্ষায় ফেলছে না। তবে করদাতার ফাইলের বিষয়ে জানতে চেয়ে নানা ধরনের নোটিশ দিচ্ছে।
আয়কর রিটার্ন অডিটে বা নজরদারিতে পড়ার বেশ কিছু কারণ আছে। সেখান থেকে বাছাই করা ১৫টি কারণ নিয়ে আলোচনা করা হলো:
১.
২. আগের বছরের তুলনায় হঠাৎ অস্বাভাবিক বেশি সম্পদ দেখালে কর কর্মকর্তাদের সন্দেহ হতে পারে। সম্পদ অর্জনের অর্থের উৎস ব্যাখ্যা না থাকলে সন্দেহ আরও গভীর হয়।
৩. আয় কম দেখানো হলো। কিন্তু রিটার্নে বাড়ি-গাড়ি, সম্পদ বেশি দেখালেও নিরীক্ষায় পড়তে পারেন করদাতা।
৪. কোনো ব্যবসায়ী করদাতার ব্যবসায় ব্যয় অস্বাভাবিক বেশি দেখানো হলেও নিরীক্ষায় পড়ার সম্ভাবনা আছে। কারণ, খরচ অনেক বেশি দেখিয়ে লাভ কম দেখান অনেকে।
৫. উৎসে কর কাটা থাকলেও রিটার্নে দাবি না করা বা ভুল দাবি করলে নিরীক্ষায় ফেলতে পারেন কর কর্মকর্তারা। তাই উৎসে কর কর্তনের ভুল বা অসম্পূর্ণ তথ্য দেওয়া যাবে না।
৬. রিটার্ন দাখিলের কাগজপত্র অসম্পূর্ণ থাকলেও বিপাকে পড়তে পারেন। যেমন আয়, বিনিয়োগ, ব্যয়, সম্পদের দলিল, প্রমাণপত্র না থাকা বা ভুল কাগজপত্র না দেওয়া।
৭. নগদ অর্থ অস্বাভাবিক বেশি দেখানো হলে কর কর্মকর্তাদের সন্দেহের তালিকায় পড়তে পারেন। যেমন রিটার্নে হাতে নগদ টাকা (ক্যাশ ইন হ্যান্ড) বেশি দেখালে সন্দেহ হয়।
৮. ঋণ বা দায় অস্বাভাবিক বেশি দেখানো হলে নিরীক্ষায় জালে পড়বেন। তাই ঋণের উৎস ঠিকমতো ব্যাখ্যা দিতে হবে।
৯. উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ খাতের করদাতাদের দিকে বেশি নজর থাকে কর কর্মকর্তাদের। যেমন নির্মাণ, ঠিকাদার, সরবরাহকারী, জমি ক্রয়-বিক্রয় ব্যবসায়ী, গাড়ি ব্যবসায়ী ইত্যাদি।
১০. ব্যাংকে বড় অঙ্কের লেনদেন করলেও আপনি নিরীক্ষার মতো বিপাকে পড়তে পারেন। দেখা গেল, ওই নির্দিষ্ট বছরে ব্যাংকে বড় পরিমাণ টাকা জমা বা উত্তোলন আছে। কিন্তু রিটার্নে উল্লেখ নেই।
১১. সম্পদ ক্রয়-বিক্রয়ের তথ্য গোপন করলে নিরীক্ষায় পড়বেন। তাই রিটার্নে জমি, ফ্ল্যাট, গাড়ি ইত্যাদি দেখিয়ে দেবেন।
১২. বিনিয়োগের ভুল তথ্য দেওয়া যাবে না। অতিরিক্ত বিনিয়োগ দেখানো বা ভুল বিনিয়োগ দেখিয়ে অনেকে বিভিন্ন সুবিধা নেন।
১৩. কর কর্মকর্তারা দৈবচয়ন ভিত্তিতে নিরীক্ষা করে থাকে। তাই কোনো ভুল না থাকলেও দৈবচয়ন পদ্ধতির কারণে কেউ কেউ নিরীক্ষায় পড়ে যান।
১৪. প্রথমবার রিটার্নে অতিমাত্রায় সম্পদ দেখানো বা দীর্ঘদিন পরে রিটার্ন দেওয়া হলেও নজরে পড়তে পারেন।
১৫. আগের বছরের নিরীক্ষায় সমস্যা পাওয়া গেলে পরের বছরে সেসব করদাতার নথি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ধরা হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর কর মকর ত ব যবস য় করদ ত র সন দ হ
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক আইজিপি বেনজীরের স্ত্রী-মেয়ের আয়কর নথি জব্দ
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) বেনজীর আহমেদের স্ত্রী জীশান মীর্জা ও তাঁদের মেজ মেয়ে তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীরের আয়কর নথি জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
দুদকের পৃথক দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. সাব্বির ফয়েজের আদালত বুধবার এ আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রিয়াজ হোসেন জানান, দুদকের উপপরিচালক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন পৃথক আবেদন করে জীশান মীর্জা ও তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীরের আয়কর নথি জব্দ চেয়ে আবেদন করেন।
জীশান মীর্জার আয়কর নথি জব্দের আবেদনে বলা হয়, আসামি জীশান মীর্জা ১৬ কোটি ১ লাখ ৭১ হাজার ৩৩৬ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেছেন। তিনি ৩১ কোটি ৬৯ লাখ ৫৫ হাজার ১৪৯ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জন করে ভোগদখলে রাখায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাঁর সব আয়কর রিটার্নসহ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র জব্দ করে পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন।
অপর আবেদনে বলা হয়, আসামি তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীর ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৫৫ হাজার ৮৫ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছে। সে জন্য তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাঁর আয়কর রিটার্নসহ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র জব্দ করে পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন।
দুদক ও আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর ৭৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ এবং তাঁর স্ত্রী ও দুই মেয়ের বিরুদ্ধে পৃথক চারটি মামলা করেছে দুদক।