মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় পূর্ববিরোধের জেরে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার বাউশিয়া ইউনিয়নের চৌদ্দকাউনিয়া গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত যুবকের নাম জয় সরকার (২৮)। তিনি চৌদ্দকাউনিয়া গ্রামের জামাল সরকারের ছেলে। জয়ের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আধিপত্য ও পূর্ববিরোধের জেরে চৌদ্দকাউনিয়া গ্রামের জামাল সরকারের পরিবারের সঙ্গে মো.

হাসান ওরফে বেকু হাসান, নান্নু ও লালুদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে কয়েক দফায় হামলার শিকার হন জামাল সরকারের পরিবারের সদস্যরা। দুই পক্ষের মধ্যে একাধিকবার মারামারির ঘটনাও ঘটে। এ বিরোধের জেরে গতকাল রাত আটটার দিকে চৌদ্দকাউনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন এলাকায় হাসানের নেতৃত্বে কয়েকজন জয় সরকারের ওপর হামলা চালান। হামলাকারীরা জয়কে দা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন। জয়ের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। পরে উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নূরে আলম জিকু বলেন, গতকাল রাত নয়টার দিকে জয় নামের ওই যুবককে হাসপাতালে আনা হয়। চিকিৎসা শুরুর আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

নিহত জয়ের বাবা জামাল সরকার বলেন, ‘তিন বছর আগে হাসান-লালুরা আমার পা ভেঙে দিয়েছিল। চলতি বছরের ১১ মে হাসানের নেতৃত্বে ৩০ থেকে ৪০ জন আমাদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এর আগেও ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর হাসান-লালুর লোকজন আমাদের গ্রামের বাউলগানের আসরে হামলা চালায়। তখন আমাদের পক্ষের একজনের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। গতকাল আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমি বিচার চাই।’

এ বিষয়ে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘যত দূর জানতে পেরেছি, পূর্ববিরোধের জেরে জয়কে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় নৌডাকাত নয়ন-পিয়াসসহ লালু, হাসানরা জড়িত। খুনিরা নয়ন-পিয়াস বাহিনীর সদস্য। তাদের হাতে সব ধরনের অস্ত্র রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে যৌথ অভিযান চালানো হবে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প র বব র ধ র জ র জ ম ল সরক র সরক র র গতক ল উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

করিন্থ: অর্থনৈতিক উন্নতির শিখরে পৌঁছেছিলো যে নগর রাষ্ট্র

প্রাচীন গ্রীসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং সমৃদ্ধশালী নগর-রাষ্ট্র ছিলো করিন্থ। এটি তার কৌশলগত অবস্থান, বাণিজ্য এবং সাংস্কৃতিক অবদানের জন্য বিখ্যাত ছিল। এটি পেলোপোনিস এবং মূল গ্রীসের সংযোগকারী ইস্তমাস অফ করিন্থ নামক সংকীর্ণ ভূখণ্ডে অবস্থিত ছিল। 

করিন্থ দুটি উপসাগর, করিন্থিয়ান এবং সারোনিক, উভয়ের সাথেই সংযুক্ত ছিল। এই অনন্য ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এটি স্থলপথ এবং সমুদ্রপথ, উভয় বাণিজ্যেরই প্রধান কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল।

আরো পড়ুন:

নিম-হলুদ কী সত্যিই ত্বকের জন্য ভালো?

ইডিপাস: না জেনে নিজের মাকে বিয়ে করেছিলেন

খ্রিষ্টপূর্ব ৭ম এবং ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে করিন্থ অর্থনৈতিক উন্নতির শিখরে পৌঁছায়। এই সময়ে তারা মৃৎশিল্প, বিশেষ করে কালো রঙের মৃৎপাত্র তৈরিতে উদ্ভাবনী কৌশল ব্যবহার করে, যা ভূমধ্যসাগর জুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।

প্রথমদিকে করিন্থ একটি রাজতন্ত্র ছিল, যা পরে ব্যাকিয়াড পরিবারের অভিজাতদের দ্বারা শাসিত হয়। পরবর্তীতে সাইপসেলাস এবং তার পুত্র পেরিয়ান্ডার -এর অধীনে নগরীটি স্বৈরশাসকদের দ্বারা শাসিত হয়েছিল (আনুমানিক ৬৫৭ থেকে ৫৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)।

করিন্থ তার রাজনৈতিক প্রভাব বাড়াতে কর্কিরা এবং সিসিলির সিরাকিউস এর মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে উপনিবেশ স্থাপন করেছিল, যা পশ্চিম ভূমধ্যসাগরে তাদের বাণিজ্যিক আধিপত্য নিশ্চিত করে।
এই নগরীতে অ্যাপোলোর মন্দিরসহ অসংখ্য স্মৃতিস্তম্ভ এবং স্থাপত্য নিদর্শন ছিল। এখানে অলিম্পিক গেমসের পরেই মর্যাদাপূর্ণ ইস্তমিয়ান গেমস অনুষ্ঠিত হতো, যা এর সাংস্কৃতিক গুরুত্ব তুলে ধরে।

১৪৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রোমান জেনারেল লুসিয়াস মুমিয়াস করিন্থ দখল ও ধ্বংস করে দেন। এর প্রায় এক শতাব্দী পরে, ৪৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে জুলিয়াস সিজার এটিকে একটি রোমান উপনিবেশ হিসেবে পুনর্নির্মাণ করেন এবং এটি গ্রীসের রোমান প্রদেশের রাজধানী হয়। 

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ