দেশকে বদলানোর কাজ শুরু করেছি: উপদেষ্টা ফারুকী
Published: 10th, January 2025 GMT
নতুন বাংলাদেশ গড়তে যাচ্ছেন উল্লেখ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, ‘আমরা দেশকে বদলানোর কাজ শুরু করেছি, যার ফলে জনগণের চাওয়া ও চাহিদা বদলেছে। সামনে যাঁরা নির্বাচিত হয়ে আসবেন, সবাইকে এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।’
আজ শুক্রবার বিকেলে কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকার মুক্তিযোদ্ধা মাঠে আট দিনব্যাপী বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিকেল পাঁচটায় বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে বইমেলার উদ্বোধন করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘গত জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে যাঁরা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন, তাঁদের কারণে আমরা আজ কথা বলার স্বাধীনতা পেয়েছি। তাঁদের কারণে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার শক্তি পাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর ১৫ দিন দেশে পুলিশ ছিল না। তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে ট্রাফিকের কাজ সামলিয়েছে। পুলিশবিহীন ওই ১৫ দিনে দেশে খুব বেশি ক্রাইমও হয়নি। সবাই রাত জেগে নিজেদের মহল্লা পাহারা দিয়েছেন। মুসলমান-মাদ্রাসার ছাত্ররা গিয়ে মন্দির পাহারা দিয়েছেন। একে অন্যের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন—এটিই আমাদের সংস্কৃতি।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাকিল আহমেদ, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক আফসানা বেগম, জেলা জামায়াতের আমির নুর আহমদ আনোয়ারি, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র আয়োজিত এই মেলার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে জেলা প্রশাসন। ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ স্লোগানে আয়োজিত এই বইমেলায় বাংলা একাডেমি, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, প্রথমাসহ ৫৯ প্রকাশনী অংশগ্রহণ করেছে। মেলা ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলার পাশাপাশি চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সুন্দরবনে রাসপূজায় যেতে বন বিভাগের পাঁচটি রুট নির্ধারণ
সুন্দরবনের দুবলারচরে রাসপূর্ণিমা উপলক্ষে আগামী ৩ থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত ‘রাসপূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নান’ অনুষ্ঠিত হবে। তিন দিনব্যাপী এই পুণ্যস্নান উৎসবে নিরাপদে যাতায়াতের জন্য দর্শনার্থী ও তীর্থযাত্রীদের জন্য সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ পাঁচটি পথ নির্ধারণ করেছে।
এ সকল পথে বন বিভাগ, পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল দল তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীদের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে। এ পূজায় শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
আরো পড়ুন:
হরিণ শিকারের ফাঁদে আটকা পড়ল বানর
সমুদ্র থেকে ভেসে আসা প্লাস্টিকে দূষিত সুন্দরবন
রবিবার (১৯ অক্টোবর) বন বিভাগ থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
সুন্দরবন বন বিভাগের সূত্র জানিয়েছে, পূজা ও পুণ্যস্নানে তীর্থযাত্রীরা বিভিন্ন নদী পথে লঞ্চ, ট্রলার, স্পিডবোট ও দেশি নৌকাযোগে গমন করে থাকেন। এক্ষেত্রে অনুমোদিত পাঁচটি পথের প্রথমটি- বুড়িগোয়ালিনী, কোবাদক থেকে বাটুলানদী-বলনদী-পাটকোষ্টা খাল হয়ে হংসরাজ নদী হয়ে দুবলার চর; দ্বিতীয়টি- কয়রা, কাশিয়াবাদ, খাসিটানা, বজবজা হয়ে আড়ুয়া শিবসা অতঃপর শিবসা নদী-মরজাত হয়ে দুবলার চর; তৃতীয়টি- নলিয়ান স্টেশন হয়ে শিবসা-মরজাত নদী হয়ে দুবলার চর; চতুর্থটি- ঢাংমারী অথবা চাঁদপাই স্টেশন-তিনকোনা দ্বীপ-বরাবর পশুর নদী হয়ে দুবলার চর; পঞ্চমটি হলো- বগী-বলেশ্বর-সুপতি-কচিখালী-শেলারচর হয়ে সুন্দরবনের বাইরে দিয়ে দুবলার চর।
পুণ্যস্নানে অংশ নিতে দর্শনার্থী ও তীর্থযাত্রীদের ৩ থেকে ৫ নভেম্বর-এ তিন দিনের জন্য অনুমতি প্রদান করা হবে এবং প্রবেশের সময় এন্ট্রি পয়েন্টে লঞ্চ, ট্রলার ও নৌকার প্রবেশ ফি, অবস্থান ফি এবং লোকের সংখ্যা অনুযায়ী বিধি মোতাবেক রাজস্ব আদায়পূর্বক পাশ প্রদান করা হবে। অনুমতি পেতে জাতীয় পরিচয়পত্রের কপিসহ তীর্থযাত্রীদের আবেদন করতে হবে।
প্রতিটি অনুমতিপত্রে সিল মেরে পথ/রুট উল্লেখ করা হবে এবং তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীগণ পছন্দমত একটি রুট বা পথ ব্যবহার করবেন। ৩ নভেম্বর দিনের ভাটায় যাত্রা আরম্ভ করতে হবে। রাসপূর্ণিমা পুণ্যস্নানের উদ্দেশ্যে নৌযান নির্ধারিত রুটে শুধু দিনের বেলায় চলাচল করতে পারবে। বন বিভাগের চেকিং পয়েন্ট ছাড়া কোথাও লঞ্চ, ট্রলার ও নৌকা থামানো যাবে না। ট্রলারে প্রয়োজনীয় সংখ্যক লাইফ জ্যাকেট বা বয়া সংরক্ষণ করতে হবে।
প্রতিটি জলযানের গায়ে রঙ অথবা স্টিকার দিয়ে বিএলসি/সিরিয়াল নম্বর, তীর্থযাত্রী/পুণ্যার্থীর সংখ্যা উল্লেখ করা হবে। সুন্দরবনে প্রবেশকালে প্রত্যেক তীর্থযাত্রী/পুণ্যার্থীকে একটি করে টিকেট বা টোকেন প্রদান করা হবে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে অবস্থানকালে টোকেন বা টিকেট সর্বদা নিজের সঙ্গে রাখতে হবে। প্রতিটি লঞ্চ, নৌকা ও ট্রলারকে আলোরকোলে স্থাপিত কন্টোলরুমে আবশ্যিকভাবে রিপোর্ট করতে হবে। এর ব্যত্যয় করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সুন্দরবন বন বিভাগ সূত্র আরো জানায়, রাসপূর্ণিমা পুণ্যস্নানের সময় কোনো বিস্ফোরক দ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার ও বহন নিষিদ্ধ। কারো কাছে কোন আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য, হরিণ মারার ফাঁদ, দড়ি, গাছ কাটার কুড়াল, করাত ইত্যাদি অবৈধ কিছু পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনো অবস্থায়ই সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক যেমন প্লাস্টিকের প্লেট, পানির বোতল, গ্লাস বা চামচ বহন করা যাবে না।
লঞ্চ, ট্রলার, নৌকায় এবং পুণ্যস্নান স্থলে মাইক বাজানো, পটকা, বাজি ইত্যাদি ফোটানোসহ সব ধরনের শব্দ দূষণ নিষিদ্ধ। রাসপূর্ণিমায় আগত পুণ্যার্থীদের সুন্দরবনে প্রবেশের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে প্রাপ্ত সনদের মূলকপি সঙ্গে রাখতে হবে।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা এ জেড এম হাছানুর রহমান বলেন, “তীর্থযাত্রীদের উল্লিখিত নিদের্শনা মেনে চলার জন্য সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে কেউ এ নির্দেশনা অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/নুরুজ্জামান/মেহেদী