খুলনায় নভোথিয়েটার নির্মাণ থেকে পিছু হটছে মন্ত্রণালয়
Published: 14th, January 2025 GMT
খুলনায় নভোথিয়েটার স্থাপন নিয়ে আলোচনা চলছে এক যুগ ধরে। স্থান নির্ধারণ-সংক্রান্ত জটিলতা কাটিয়ে ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি একনেকে অনুমোদন পায় প্রকল্পটি। ইতোমধ্যে দরপত্র তৈরি হয়েছে। জমিও হস্তান্তর হয়েছে। কিন্তু শেষ সময়ে এসে প্রকল্প থেকে পিছু হটছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাতিলের একটি প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
শেষ মুহূর্তে মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে খুলনার মানুষ। প্রকল্প চালু এবং দ্রুত কাজ শুরুর দাবিতে চলতি সপ্তাহেই আন্দোলন-কর্মসূচি ঘোষণা করতে যাচ্ছে নাগরিক সংগঠনগুলো। প্রয়োজনে মন্ত্রণালয় ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনগুলোর নেতারা।
নগরীর সিঅ্যান্ডবি কলোনি এলাকায় নভোথিয়েটারটি নির্মাণ হওয়ার কথা। শুরুতে এর নাম বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার থাকলেও পরে বঙ্গবন্ধু শব্দটি বাদ দেওয়া হয়। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় কিছু মানুষ বিষয়টি নিয়ে নানা মিথ্যা তথ্য দিয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে। এ ছাড়া প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্বরতদের বিরুদ্ধেও বিগত সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতাসহ ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হচ্ছে। তাদের তৎপরতায় পিছু হটছে মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সরকারের ব্যয় সংকোচনের নীতির বিষয়টিও আলোচনা হচ্ছে।
প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা জানান, নতুন প্রজন্মের কাছে বিজ্ঞানকে সহজভাবে উপস্থাপন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় আগ্রহী করা, বিজ্ঞান সম্পর্কিত ধারণা দেওয়ার জন্য প্রতিটি বিভাগীয় শহরে একটি করে নভোথিয়েটার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১২ সালে খুলনা নভোথিয়েটারের জন্য জমি খোঁজা শুরু হয়। জমি খুঁজতেই সময় গেছে ১০ বছর। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল ও রংপুরে নভোথিয়েটারের কাজ শুরু হয়েছে। ২০২২ সালে নগরীর সিঅ্যান্ডবি কলোনির ১০ একর জমিতে নভোথিয়েটার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
খুলনায় নভোথিয়েটারের প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৫৩ কোটি টাকা। গত বছরের ২৩ এপ্রিল নির্মাণকাজের জন্য কলোনির ৮ দশমিক ৩৫১ একর জমি নথোথিয়েটার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছে গণপূর্ত বিভাগ। প্রকল্প এলাকায় বর্তমানে একটি মাঠ রয়েছে।
গণপূর্ত বিভাগ থেকে জানা গেছে, গত শতাব্দীর ষাটের দশকে তৈরি খুলনা সিঅ্যান্ডবি কলোনি নিয়ে নতুন মাস্টারপ্ল্যান তৈরির কাজ চলছে। এর আওতায় পুরোনো ভবনগুলো ভেঙে ফেলে সেখানে বহুতল আধুনিক ভবন নির্মাণ হবে। এ ছাড়া আধুনিক খেলার মাঠ ও পার্ক নির্মাণ হবে। মহাপরিকল্পনায় আধুনিক খেলার মাঠটি রয়েছে বর্তমান মাঠের কিছুটা পাশে। ইতোমধ্যে পরিত্যক্ত ১৩টি ভবন ভেঙে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। সূত্র জানায়, নভোথিয়েটার নির্মাণের জন্য দুর্নীতির মাধ্যমে ১৩টি ভবন ভেঙে ফেলা এবং খেলার মাঠ দখল করা হচ্ছে বলে প্রচার চালানো হয়েছে।
গণপূর্ত বিভাগ খুলনা-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল হাসান বলেন, গণপূর্তের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য পরিত্যক্ত ভবন ভাঙা হচ্ছে। আরও কিছু ভবন ভাঙা হবে। নভোথিয়েটারের সঙ্গে এসবের সম্পর্ক নেই। মহাপরিকল্পনায় বর্তমান মাঠের পাশে আধুনিক পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাসহ নতুন মাঠ তৈরি করা হবে। সারা বছর শিশুরা খেলতে পারবে।
নভোথিয়েটার নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মশিউর রহমান বলেন, প্রকল্পটি নিয়ে খুলনায় মতবিনিময় সভায় আমরা বলেছি, আগে নতুন খেলার মাঠ তৈরি হবে। এর পর নভোথিয়েটারের কাজ শুরু হবে। বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান বলেন, নভোথিয়েটারের কাজ দ্রুত শুরুর দাবিতে প্রয়োজনে মন্ত্রণালয় ঘেরাও করা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রকল প ভবন ভ ঙ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
ডিনস অ্যাওয়ার্ড পেলেন ঢাবির ৭৪ শিক্ষক-শিক্ষার্থী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের শিক্ষার্থীদের তিন বছরের (২০২১, ২০২২ ও ২০২৩) এবং শিক্ষকদের পাঁচ বছরের (২০২১, ২০২২, ২০২৩, ২০২৪ ও ২০২৫) ডিনস অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে।
অনুষদের ৫টি বিভাগের মোট ৪৪ জন শিক্ষার্থী ডিনস অ্যাওয়ার্ড পান। এছাড়া দেশে-বিদেশে প্রকাশিত গবেষণা গ্রন্থ এবং স্বীকৃত জার্নালে প্রকাশিত মৌলিক প্রবন্ধের জন্য ৩০ জন শিক্ষককে ডিনস অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।
আরো পড়ুন:
ঢাবিতে শুরু হচ্ছে ইকবাল ও নজরুলকে নিয়ে আন্তর্জাতিক কনফারেন্স
ঢাবি প্রক্টরকে হুমকি নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের হাতে এ অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয়।
ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. উপমা কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সোনালী ব্যাগের উদ্ভাবক ও বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশনের সাবেক বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা বিজ্ঞানী ড. মোবারক আহমেদ খান ডিনস অ্যাওয়ার্ড স্পিকার হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
বিভাগীয় চেয়ারম্যানরা ডিনস অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। ডিনস অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত শিক্ষকদের নাম ঘোষণা করেন ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. উপমা কবির।
এ সময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, প্রাধ্যক্ষ, অনুষদের শিক্ষক ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানটি জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয়। এরপর পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহ থেকে পাঠ করা হয়।
ডিনস অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা হলেন-জগন্নাথ বিশ্বাস, মো. নিজাম উদ্দিন তানিম, শ্রাবণী সরকার, নাজমুল হাসান নাঈম, আফসানা আনজুম আঁখি, নুসাইবা এহসান, আসমা ইয়াসমিন খান রিমু, মেহরিন ফাত্তাহা, কায়সারী ফেরদৌস, মোহাম্মদ আজমাঈন ফাতিন (ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং), নিশাত তামান্না আদিবা, এহসানুল হক, মো. শাহিদুল ইসলাম, মো. আহসানুল হক মামুন, মো. আব্দুল হাসনাত, সাহাল জুবায়ের, তাইমিমা মাহবুব, ফাইরুজ তাহিয়া, ফাতেমা-তুজ-জহুরা (ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল), মো. আমিনুল কাদের বুলবুল, শাবাব মুর্শেদ, রাহিব হাসান, জহির সাদিক মনন, তাহমিদ মোসাদ্দেক, মহিদুল হক মৃদুল, আবদুল্লাহ ইবনে হানিফ আরিয়ান, মাবসুর ফাতিন বিন হোসাইন, ইত্তেহাদ সালেহ চৌধুরী, সৌমিক শাফকাত অভ্র (কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল), এইচ রাইনাদ খান রোহান, কে. এম. সৌরভ, মো. নবীর হোসেন, মো. ফাহিম ফরায়েজি, তাসফিয়া রহমান রিভা, মাহমুদুল হাসান তামিম, জেরিন তাহসিন আনজুম, তাসনুভা তামিসা অর্পি, ফারহান লাবিব অর্ণব (নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং), মিকদাম-আল-মাদ রৌন, আব্দুল মোনাফ চৌধুরী, হুমায়রা রশিদ, সানিয়া কায়েনাত চৌধুরী, মো. এহতেশামুল হক, আতিক তাজওয়ার (রোবটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং)।
ডিনস অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত শিক্ষকরা হলেন- অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক (২০২১, ২০২৩, ২০২৫), মো. তানভীর আলম (২০২৪) (কম্পিউটার বিজ্ঞান অ্যান্ড প্রকৌশল), ড. আবুল খায়ের মল্লিক (২০২১, ২০২৩), অধ্যাপক ড. মো. নুরনবী (২০২৪), ড. তাসলিম উর রশিদ (২০২২, ২০২৩), অধ্যাপক ড. মো. আশরাফুল ইসলাম মোল্লা (২০২৪), সাদিত বিহঙ্গ মালিথা (২০২১) (ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল), ড. সেঁজুতি রহমান (২০২১, ২০২৩, ২০২৪) (রোবটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং), মো. আরিফুল ইসলাম (২০২৩), মো. সিফাত-ই-আরমান ভূঁইয়া (২০২৩, ২০২৫), ড. মো. মেহেদী হাসান (২০২৪), মো. হোসাইন শাহাদাত (২০২১), ড. অনিমেষ পাল (২০২১, ২০২৫), অধ্যাপক ড. আফরোজা শেলি (২০২২, ২০২৫) (নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং), ড. মাইনুল হোসেন (২০২২, ২০২৪, ২০২৫), ড. শেখ মো. মাহমুদুল ইসলাম (২০২২, ২০২৩), ড. মো. আহসান হাবীব (২০২৫), ইমতিয়াজ আহমেদ (২০২৪) (ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং)।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, “মেধাকে মূল্যায়ন করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। একই সঙ্গে অভিভাবকদেরও আমরা সঙ্গে রাখতে পেরেছি। আসলে আপনারাও আমাদেরই অংশ।”
উপাচার্য বলেন, “মেধার অন্যতম ভিত্তি হলো পরিশ্রম। মনে রাখতে হবে, সাফল্যের পেছনে অনেকের অবদান থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের যে পরম্পরা তা তোমরা ধরে রেখেছো। এটাই আমাদের গর্ব। তবে মনে রাখতে হবে অহংবোধ যেন আমাদের মধ্যে জাগ্রত না হয়।”
ঢাকা/সৌরভ/সাইফ