বিদেশে পালাতে গিয়ে পাবনা সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হাসান শাহীনকে আটক করেছে ইমিগ্রেশন পুলিশ।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে বলে নিশ্চিত করেছেন পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সালাম।

আটক সোহেল হাসান শাহীন পাবনা পৌর এলাকার বালিয়াহালট এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে। গত বছরের ৪ আগস্ট পাবনা শহরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলায় একাধিক মামলার আসামি তিনি। তিনি গত বছরের উপজেলা নির্বাচনে পাবনা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, বিদেশে যাওয়ার পথে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করা হবে। পাবনা থেকে আমাদের একটি টিম রওনা দিচ্ছে। তাকে গ্রেপ্তার করে পাবনায় নিয়ে আসা হবে।

মামার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে পাবনা শহরের ট্রাফিক মোড়ে ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ গণ-অবস্থান কর্মসূচি চলছিল। দুপুরের দিকে হঠাৎ করে পাবনার ভাঁড়ারা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ খান এবং তার সহযোড়িরা এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করেন। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজন শিক্ষার্থী নিহত হন। এরপর দ্বিতীয় দফায় সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্সসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গুলিবর্ষণে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হন।

এসব ঘটনায় ১০৩ জনের নাম উল্লেখ করে পাবনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও ১২৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে আসামি করে আরেকটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আটক প বন র উপজ ল ত কর ম আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ