১১ ঘণ্টার ব্যবধানে প্রবাসীর স্ত্রী ও প্রতিবেশী কলেজছাত্রের আত্মহত্যা
Published: 15th, January 2025 GMT
নাটোরের গুরুদাসপুরে মোক্তার হোসেন নামে মালায়েশিয়াপ্রবাসীর স্ত্রী আতিয়া খাতুন ও রাকিবুল হাসান নামে কলেজপড়ুয়া ছাত্র আত্মহত্যা করেছেন। মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে আতিয়া গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে ও বুধবার সকাল ৮টার দিকে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন রাকিবুল। উপজেলার খুবজীপুর ইউনিয়নের পিপলা এবং চরপিপলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আতিয়া খাতুন (২৬) উপজেলার পিপলা গ্রামের আব্দুল আজিজের মেয়ে ও রাকিবুল হাসান (১৮) একই গ্রামের আলতাব হোসেনের ছেলে। আতিয়ার শ্বশুর বাড়ি চরপিপলা গ্রামে।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পিপলা গ্রামের আব্দুল আজিজের মেয়ের সঙ্গে প্রায় ৮ বছর আগে পার্শ্ববর্তী গ্রাম চরপিপলার বকুল জানের ছেলে মালায়েশিয়াপ্রবাসী মোক্তার হোসেনের মোবাইল ফোনে বিয়ে হয়। এর পর মোক্তার বিভিন্ন সময় দেশে আসেন। তবে তাদের কোনো সন্তান নেয়। স্বামী-স্ত্রী, শ্বশুর-শাশুড়ি কারো সঙ্গে কোনো বিবাদ ছিল না আতিয়ার। মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে শ্বশুর বাড়িতে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের লোকজন তাকে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে রাত ১২টার দিকে তিনি মারা যান।
এদিকে আতিয়া খাতুন গ্যাস ট্যাবলেট খাওয়ার পর তার ছোট ভাইয়ের বন্ধু রাকিবুল তাদের বাড়িতে ছিল। সকাল ৮টার দিকে নিজ বাড়িতে ফিরে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে রাকিবুলও আত্মহত্যা করেন।
আতিয়ার ফুফাতো ভাই আনিসুর রহমান বলেন, ‘আতিয়া খাতুন কেন আত্মহত্যা করেছে তা কেউ জানে না। সংসারে কোনো অশান্তিও ছিল না। কারও সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কও ছিল না।’
রাকিবুল হাসানের বাবা আলতাব হোসেন বলেন, ‘ছেলে সকালেও আমার সঙ্গে কথা বলেছিল। তবে কেন আত্মহত্যা করল বুঝতে পারছি না।’
এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানার ওসি মো.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আপনি কি পিকক প্যারেন্ট? মিলিয়ে নিন বৈশিষ্টগুলো
সন্তান লালন–পালনের নানান ধারার কথা শোনা যায় আজকাল, তবে সব ধারাই শিশুর জন্য ইতিবাচক নয়। ‘পিকক প্যারেন্টিং’ এমন একটি ধারা। নিজের অজান্তেই হয়তো এই ধারার চর্চা করে সন্তানের ব্যক্তিত্বের বিকাশের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন আপনি। কারা পিকক প্যারেন্ট, কী তাঁদের বৈশিষ্ট্য, আর কীভাবেই–বা এই ধারা থেকে বেরিয়ে আসা যায়, শিশু-কিশোর ও পারিবারিক মনোরোগবিদ্যার সহকারী অধ্যাপক ও যুক্তরাজ্যের সিনিয়র ক্লিনিক্যাল ফেলো ডা. টুম্পা ইন্দ্রানী ঘোষের কাছ থেকে জেনে নেওয়া যাক।
নার্সিসিস্ট বা আত্মপ্রেমী একজন মানুষ যখন সন্তান লালন–পালন করেন, তখন তিনিই হয়ে ওঠেন পিকক প্যারেন্ট। সন্তানকে সব জায়গায় সেরা দেখতে চান তিনি। সন্তান লালন–পালনের বিষয়ে নিজের ধারণার বাইরে যেতে চান না। অন্য কারও পরামর্শ গ্রহণ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে নিজেকেই গুরুত্ব দেন সবচেয়ে বেশি। ভাবেন, তিনিই সেরা। সন্তান লালন–পালনেও সেই ভাবনারই প্রতিফলন ঘটে। বুঝতেই পারছেন, নিজেকে জাহির করার প্রবণতা থাকে তাঁর মধ্যে। নিজের শ্রেষ্ঠত্বের জন্য অন্যের কাছ থেকে প্রশংসা পেতে চান। অন্যের আবেগের গুরুত্ব খুব একটা থাকে না এ ধরনের মানুষের কাছে। অভিভাবক হিসেবে সন্তানের আবেগের চেয়ে সন্তানকে ‘সেরা’ হিসেবে দেখার প্রতিই জোর দেন তিনি। সাফল্যের জন্য অকারণ চাপ সৃষ্টি করেন তার ওপর। সন্তানকে অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টাও করেন। সন্তানের সঙ্গে অন্য কারও সুসম্পর্ক দেখলে তাঁর হিংসাও হতে পারে।
সন্তানের ওপর যে প্রভাব পড়েসবেতেই ‘সেরা’ হওয়ার প্রত্যাশা পূরণ করা কঠিন। ফলে পিকক প্যারেন্টের সন্তান মানসিকভাবে বেশ চাপে থাকে। অত্যধিক চাপের কারণে হাসি-আনন্দমাখা ঝলমলে শৈশব থেকে সে বঞ্চিত হতে পারে। নিজের সাফল্যের বিষয়ে উদ্বেগ কাজ করতে পারে এমন সন্তানদের মধ্যে। অভিভাবকের প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারলে হীনম্মন্যতায় ভুগতে পারে সে। সন্তানের ব্যক্তিত্ব বিকাশের ওপরও পিকক প্যারেন্টিংয়ের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সংকীর্ণ গণ্ডিতে আবদ্ধ থাকতে পারে তার ভাবনার জগৎ। তাই বড় হতে হতে ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। এমনকি জীবনের প্রকৃত সৌন্দর্য থেকেই বঞ্চিত হতে পারে একজন পিকক প্যারেন্টের সন্তান।
আপনার সঙ্গী কি পিকক প্যারেন্ট?যদি আপনার সঙ্গীর মধ্যে পিকক প্যারেন্টের বৈশিষ্ট্য থাকে, তাহলে আপনার দায়িত্ব কিন্তু অনেক। একদিকে সঙ্গীকে সাবধানে ধরিয়ে দিতে হবে সন্তান লালন–পালনে তাঁর ভুলগুলো, অন্যদিকে আবার সন্তানের বিকাশ নিশ্চিত করতে তার কোমল মনের বাড়তি যত্নও নিতে হবে, কমাতে হবে তার মনের চাপ। তার ভাবনার জগৎটাকে বিস্তৃত করে দিতে হবে। তার মনের জানালাগুলো আপনাকেই খুলে দিতে হবে।
আরও পড়ুনহেলিকপ্টার প্যারেন্টিং কী, না জেনে সন্তানের ক্ষতি করছেন না তো?২৯ মার্চ ২০২৩নিজের ইচ্ছার চেয়ে সন্তানের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি