বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ভারত যে কাঁটাতারের বেড়া দিচ্ছে, এটি আমাদের আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের বাইরে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন।

আগামী ২০ জানুয়ারি ৩ দিনের দ্বিপক্ষীয় সফরে চীন সফরে যাচ্ছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। আসন্ন বেইজিং সফর নিয়ে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ মন্তব্য করেন তিনি। 

তিনি বলেন, ‘‘এটি আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন লঙ্ঘন।’’

উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আমরা ভারতকে বলেছি, আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের (বোঝাপড়া) বাইরে এটা হচ্ছে।’’

তিনি বলেন, ‘‘আইন অনুযায়ী সীমান্তের শূন্যরেখা থেকে ১৫০ গজের মধ্যে ফসল চাষ ব্যতীত সীমান্তবর্তী কোনো দেশ তাদের সীমানায় বেড়া কিংবা স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবে না। কিন্তু ভারত সেটি মানছে না।’’

উল্লেখ্য, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম সীমান্তে বিধি লঙ্ঘন করে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। ১০ জানুয়ারি সকালে বিপুলসংখ্যক ভারতীয় শ্রমিক দিয়ে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করে দেশটির সীমান্তরক্ষীরা। এ ঘটনায় দহগ্রাম সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

তথ্য মতে, দহগ্রাম সীমান্তে আন্তর্জাতিক মেইন পিলার ৮-এর তিন ফিট দূরত্বে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করেছে ভারত। যার দৈর্ঘ্য দেড় কিলোমিটার।

ঢাকা/হাসান/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র ম ণ কর

এছাড়াও পড়ুন:

অভিশাপ দিচ্ছি

না আমি আসিনি

ওল্ড টেস্টামেন্টের প্রাচীন পাতা ফুঁড়ে,

দুর্বাশাও নই,

তবু আজ এখানে দাঁড়িয়ে এই রক্ত-গোধূলিতে

অভিশাপ দিচ্ছি।

আমাদের বুকের ভেতর যারা ভয়ানক কৃষ্ণপক্ষ দিয়েছিল সেঁটে

মগজের কোষে কোষে যারা

পুঁতেছিল আমাদেরই আপনজনের লাশ

দগ্ধ, রক্তাপ্লুত,

যারা গণহত্যা করেছে

শহরে গ্রামে টিলায় নদীতে খেত ও খামারে,

আমি অভিশাপ দিচ্ছি নেকড়ের চেয়েও অধিক পশু

সেই সব পশুদের।

ফায়ারিং স্কোয়াডে ওদের

সারিবদ্ধ দাঁড় করিয়ে

নিমেষে ঝাঁ ঝাঁ বুলেটের বৃষ্টি

ঝরালেই সব চুকেবুকে যাবে তা আমি মানি না।

হত্যাকে উৎসব ভেবে যারা পার্কে মাঠে

ক্যাম্পাসে বাজারে

বিষাক্ত গ্যাসের মতো মৃত্যুর বীভৎস গন্ধ দিয়েছে ছড়িয়ে,

আমি তো তাদের জন্য অমন সহজ মৃত্যু করি না কামনা।

আমাকে করেছে বাধ্য যারা

আমার জনক-জননীর রক্তে পা ডুবিয়ে দ্রুত

সিঁড়ি ভেঙে যেতে

ভাসতে নদীতে আর বনেবাদাড়ে শয্যা পেতে নিতে,

অভিশাপ দিচ্ছি, আমি সেই সব দজ্জালদের।

অভিশাপ দিচ্ছি ওরা চিরদিন বিশীর্ণ গলায়

নিয়ত বেড়াক বয়ে গলিত নাছোড় মৃতদেহ,

অভিশাপ দিচ্ছি

প্রত্যহ দিনের শেষে ওরা

হাঁটু মুড়ে এক টুকরো শুকনো রুটি চাইবে ব্যাকুল,

কিন্তু রুটি প্রসারিত থাবা থেকে রইবে

দশ হাত দূরে সর্বদাই।

অভিশাপ দিচ্ছি

ওদের তৃষ্ণায় পানপাত্র প্রতিবার

কানায় কানায় রক্তে উঠবে ভরে, যে রক্ত বাংলায়

বইয়ে দিয়েছে ওরা হিংস্র

জোয়ারের মতো।

অভিশাপ দিচ্ছি

আকণ্ঠ বিষ্ঠায় ডুবে ওরা অধীর চাইবে ত্রাণ

অথচ ওদের দিকে কেউ

দেবে না কখনও ছুড়ে একখণ্ড দড়ি।

অভিশাপ দিচ্ছি

স্নেহের কাঙাল হয়ে ওরা

ঘুরবে খ্যাপার মতো এপাড়া ওপাড়া,

নিজেরই সন্তান

প্রখর ফিরিয়ে নেবে মুখ, পারবে না

চিনতে কখনো;

অভিশাপ দিচ্ছি এতটুকু আশ্রয়ের জন্যে, বিশ্রামের

কাছে আত্মসমর্পণের জন্যে

দ্বারে দ্বারে ঘুরবে ওরা। প্রেতায়িত

সেই সব মুখের ওপর

দ্রুত বন্ধ হয়ে যাবে পৃথিবীর প্রতিটি কপাট।

অভিশাপ দিচ্ছি,

অভিশাপ দিচ্ছি,

অভিশাপ দিচ্ছি...

প্রথম আলো, ২৬ মার্চ ২০১১, পুনর্মুদ্রিত

সম্পর্কিত নিবন্ধ