নতুন বাজারে ৬৩৩ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি
Published: 18th, January 2025 GMT
নতুন বা অপ্রচলিত বাজারে ২০২৪ সালে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের রপ্তানি করেছে ৬৩৩ কোটি ৩৪ লাখ মার্কিন ডলার। নতুন বাজারে ওভেনের চেয়ে নিট বেশি রপ্তানি হয়েছে। আলোচ্য সময়ে ওভেন রপ্তানি হয়েছে ৩১০ কোটি ৮০ লাখ ডলারের এবং নিট রপ্তানি হয়েছে ৩২২ কোটি ৫৩ লাখ ডলার।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্যমতে, নতুন বাজারগুলোর মধ্যে জাপান পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষ স্থানে রয়েছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত জাপানে রপ্তানি হয়েছে ১১১ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার। এরমধ্যে ওভেন রপ্তানি হয়েছে ৫৪ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলারের এবং নিট রপ্তানি হয়েছে ৫৭ কোটি ৫৭ লাখ মার্কিন ডলারের। নতুন বাজারের মধ্যে রপ্তানিতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আলোচ্য সময়ে অস্ট্রেলিয়ার বাজারে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৮৩ কোটি ৯ লাখ মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ওভেন ৩৩ কোটি ৬৭ লাখ ডলার এবং নিটওয়্যার ৫৭ কোটি ৫৭ লাখ মার্কিন ডলার।
তৈরি পোশাক রপ্তানিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত। আলোচ্য সময়ে ভারতে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৬০ কোটি ৬৫ লাখ মার্কিন ডলার। ভারতে ওভেন রপ্তানি হয়েছে ৪০ কোটি ৩৪ লাখ ডলারের এবং নিট রপ্তানি হয়েছে ২০ কোটি ৩০ লাখ ডলারের। এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ায় পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৪৪ কোটি ৫৭ লাখ মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ২১ কোটি ৮৮ লাখ ডলারের ওভেন এবং ২২ কোটি ৬৯ লাখ মার্কিন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে।
পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা জানান, তৈরি পোশাক রপ্তানির অর্ধেকের বেশি হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নে। ব্যবসায়ীরা পণ্যের বৈচিত্র্যের সঙ্গে সঙ্গে নতুন বাজার খুঁজছে। নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে অন্যান্য প্রতিযোগী দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দিন দিন নতুন বাজারে রপ্তানিও বাড়ানোর চেষ্টা করছে দেশের ব্যবসায়ীরা। এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী দিনে নতুন বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি আরো বাড়বে।
নতুন বাজারের মধ্যে তুর্কিতে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৪২ কোটি ৫৯ লাখ ডলার, রাশিয়ায় ৩৪ কোটি ৩১ লাখ ডলার, চায়নায় ২১ কোটি ৬৬ লাখ, ইউনাইটেড আরব আমিরাত ২৪ কোটি ৪৪ লাখ ডলার, মেক্সিকো ৩২ কোটি ৫৪ লাখ ডলার, মালয়েশিয়া ১৯ কোটি ৩২ লাখ ডলার, সৌদি আরব ১৫ কোটি ৪৪ লাখ ডলার, সাউথ আফ্রিকা ১১ কোটি ১৩ লাখ ডলার, নিউজিল্যাল্ড৯ কোটি ৬১ লাখ ডলার, চিলি ১৪ কোটি ৬৬ লাখ ডলার, ব্রাজিল ১৫ কোটি ৮২ লাখ ডলার এবং অন্যান্য দেশে ৯১ কোটি ৫৭ লাখ মার্কিন ডলার রপ্তানি হয়েছে।
ঢাকা/এনএফ/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বহন করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেটে সরকারের সুদ পরিশোধ সংক্রান্ত পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে।
পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ১৫ ভাগ অর্থই সুদ খাতে খরচ করতে হচ্ছে এখন। এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতেই ব্যয় করতে হবে চার লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বাড়ছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শতাংশের হিসাবে বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাড়বে।
অর্থ বিভাগের করা ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৫-২০২৬ থেকে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় ছিল ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় গেছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে (যা চলতি জুনের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে) মূল বাজেটে সুদ খাতে ব্যয় বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সীমায় সুদ ব্যয় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ হিসাবের মধ্যে ছিল অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ৯৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদেশী ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা।
একইভাবে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়েরও একটি প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ বিভাগ। এই হিসেবে দেখা যায় আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হবে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা (অভ্যন্তরীণ এক লাখ কোটি টাকা , বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা)। একইভাবে এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে একলাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা(অভ্যন্তরীণ এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা) এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়ের প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, মোট সুদ ব্যয়ের সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে অভ্যন্তরীণ সুদ পরিশোধের হার ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ মোট সুদ ব্যয়ের তুলনায় কম, তবে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। মোট বাজেটের অনুপাতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এ সময়কালে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।
বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা শুধু আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নয়, বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক ঋণমান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভাবনা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য।