চট্টগ্রামে বিস্ফোরক মামলায় চিন্ময়কে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি
Published: 16th, June 2025 GMT
চট্টগ্রামে বিস্ফোরক মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপত্র চিন্ময় দাসকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এসএম আলাউদ্দিন এর আদালত এ আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মফিজ উদ্দিন বলেন, কারাবন্দি চিন্ময় দাসকে কোতোয়ালি থানার বিস্ফোরক আইনের একটি মামলায় কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালত আবেদন মঞ্জুর করে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন।
২০২৪ সালের ২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষের জেরে আইনজীবী সাইফুলকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ হত্যার ঘটনায় তার বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। প্রতিটি মামলায় চিন্ময়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে নগরের কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ এনে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করেন। এর জেরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেয় বিএনপি। ওই মামলায় চিন্ময়কে গত ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রাম পুলিশর কাছে স্থানান্তর করেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে ৯ দফা তিন সপ্তাহের মধ্যে বাস্তবায়নের নির্দেশ
ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে ৫ বছর আগে উচ্চ আদালতের দেওয়া ৯ দফা নির্দেশনা তিন সপ্তাহের মধ্যে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। নির্দেশনা প্রতিপালনের অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এক রিটের ধারাবাহিকতায় আবেদনকারীপক্ষের করা সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি উর্মি রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ৩০ নভেম্বর দিন রেখেছেন আদালত।
ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা চেয়ে পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে পরদিন ২৮ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আাদেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট বায়ুদূষণ রোধে ৯ দফা নির্দেশনা দেন।
সম্প্রতি ঢাকার বায়ুদূষণের বিষয়ে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে ২৮ অক্টোবর এইচআরপিবি সম্পূরক ওই আবেদন করে। আবেদনে ‘ঢাকার বাতাসে আরেক ক্ষতিকর ধূলিকণা’ শিরোনামে ২৭ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ, উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষে আইনজীবী মো. শাহজাহান, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে আইনজীবী খসরুজ্জামান এবং ফায়ার সার্ভিসের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুরশিদ আক্তার।
আদালতের নির্দেশনা অনুসারে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করায় গত বছর ঢাকায় বায়ুর মান উন্নত হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী বিবাদীপক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় বর্তমানে ঢাকার বায়ু দূষিত হয়েছে। ফলে বায়ুর মধ্যে থাকা বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান মানুষের ফুসফুসে প্রবেশ করে বিভিন্নভাবে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে। একটি গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের রিপোর্টের তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সুতরাং ঢাকায় বসবাসরত মানুষের জীবনরক্ষার্থে জরুরি ভিত্তিতে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ৯ দফা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেওয়া প্রয়োজন। শুনানি নিয়ে আদালত ওই আদেশ দেন বলে জানান জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী।
হাইকোর্টের ৯ দফার মধ্যে ঢাকা শহরে মাটি/বালু/বর্জ্য পরিবহন করা ট্রাক ও অন্যান্য গাড়িতে মালামাল ঢেকে রাখা; নির্মাণাধীন এলাকায় মাটি/বালু/সিমেন্ট/পাথর/নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা; সিটি করপোরেশনভুক্ত রাস্তায় পানি ছিটানো; রাস্তা/কালভার্ট/কার্পেটিং/খোঁড়াখুঁড়ির কাজে দরপত্রের শর্ত পালন নিশ্চিত করা; সড়ক পরিবহন আইন অনুসারে গাড়ির চলাচলের সময়সীমা নির্ধারণ ও মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধ করা; পরিবেশগত সনদ ছাড়া চলমান টায়ার ফ্যাক্টরি বন্ধ করা; মার্কেট/দোকানের প্রতিদিনের বর্জ্য ব্যাগে ভরে রাখা এবং বর্জ্য অপসারণ নিশ্চিত করার বিষয়গুলো রয়েছে।
‘ঢাকার বাতাসে আরেক ক্ষতিকর ধূলিকণা’ শিরোনামে ২৭ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদন বলা হয়, শ্বাসতন্ত্র ও ফুসফুসের সংক্রমণের জন্য দায়ী রেসপিরেবল সিলিকা (আরএস) বা একটি অতি ক্ষুদ্র ধূলিকণার মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি পাওয়া গেছে রাজধানীর বাতাসে। শুষ্ক মৌসুমে বা নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এ ক্ষতিকর উপাদান বেশি পাওয়া গেছে। কোথাও কোথাও সহনীয় মাত্রার দ্বিগুণের বেশি এর উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের এক গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে।