বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, লন্ডন বৈঠকে কারও দায়মুক্তির প্রসঙ্গ ছিল না।

আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তাফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সেমিনারে এ কথা বলেন সালাউদ্দিন আহমেদ। ‘বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং কল্যাণ রাষ্ট্রের ভাবনায় বাজেট ২০২৫-২৬’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজক নাগরিক ঐক্য।

গত শুক্রবার যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একটি বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে ঘোষণা আসে, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে আগামী বছরের রমজান মাসের আগে, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হতে পারে।

সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, কারও দায়মুক্তির বিষয়ে লন্ডন বৈঠকে কোনো আলোচনার প্রসঙ্গ ছিল না। উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয়েছে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে। সংবিধান যেহেতু চালু আছে, সংবিধান অনুসারে এই সরকার চলছে।

সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, লন্ডনে আলোচনায় সূত্র ধরে যে সিদ্ধান্তটা হয়েছে, সেটা খুব শিগগির নির্বাচন কমিশনে যথাযথ প্রক্রিয়ায় কমিউনিকেট (যোগাযোগ) করা হবে বলে আশা করেন তিনি, যাতে নির্বাচন কমিশন জনগণের সামনে বলতে পারে যে, তারা সরকারের কাছ থেকে পরামর্শমূলক বা নির্দেশনামূলক মেসেজ (বার্তা) পেয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আপনাদের রেটিফিকেশন (অনুমোদন) লাগবে পরবর্তী সংসদে। এটাও আপনারা মাথায় রাখবেন। এবং রেটিফিকেশন লাগলে এর লেজিটিমেসি (বৈধতা) কীভাবে দেওয়া হবে, কোন জায়গায় দেওয়া হবে, সেটিও আমরা বিবেচনা করব। সুতরাং গণতন্ত্রের পক্ষে, জনগণের পক্ষে, অতি দ্রুত যাতে আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার দিকে যেতে পারি সে রকম কার্যক্রম আপনারা নেবেন।’

এবারের বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য। তিনি বলেন, ১০ মাস যথেষ্ট সময় একটা বাজেট প্রণয়নের জন্য। নির্বাচিত সরকার ১২ মাস কাজ করে না বাজেট প্রণয়নের জন্য। বাজেটের তিন-চার মাস আগ থেকে মনোযোগ দেয়। অথচ অন্তবর্তী সরকারের বাজেটটি একটি গতানুগতিক বাজেট।

সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাজেটে নীতিনির্ধারী সিদ্ধান্ত যদি রাজনৈতিক দলের দিকে থেকে না এসে আমলাতান্ত্রিক পর্যায় থেকে আসে, তা কখনো জনগণের পক্ষের বাজেট হয় না। সংসদে বসে যে সিদ্ধান্ত রাজনীতিবীদেরা নেন, তার প্রতিটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য।

সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্রিটিশরা দীর্ঘ সময়ের শাসনামলে এ দেশে যে পরিমাণ লুটপাট করেছে, গত ১৬ বছরে ব্রিটিশদের থেকেও বেশি লুটপাট করেছে ফ্যাসিস্ট হাসিনা রেজিম।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। লিখিত বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার।

সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়নের সভাপতি আবুল বাসার হাওলাদার প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র ন র জন র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিলেন ইশরাক হোসেন

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে ঈদের বিরতির পর ফের অবস্থান নিয়েছেন সংস্থাটির কর্মচারীরা। এর সঙ্গে ঢাকাবাসীর ব্যানারে নগরভবনে একত্রিত হয়েছেন ইশরাকের অনুসারীরা। সেখানে উপস্থিত হয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ইশরাক হোসেন।

আজ রোববার সকাল থেকে ইশরাকের অনুসারীরা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগরভবনে একত্রিত হয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও। সকাল ১১ টার দিকে নগরভবনে প্রবেশ করেন ইশরাক হোসেন এবং আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তিনি।

ইশরাক হোসেন বলেন, সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করেন। তাহলে অচল অবস্থা কেটে যাবে। এই সমস্যা সুরাহা না করা পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এই আন্দোলন চলমান থাকবে। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা সংবিধান লংঘন করেছেন। আন্দোলন চলমান থাকবে। এখান থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। এই লড়াই থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানাবো, তিনি যেন বিষয়টি সরাসরি নিজে তত্ত্বাবধান করেন। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিচালনায় বিশ্বাস করি। এখন আমাদের আন্দোলন যেভাবে চলছে কোনো অবস্থাতেই আমরা এখান থেকে ফিরে যেতে পারি না। আদালতের রায় জনগণের রায়কে আপনারা মেনে নিন। 

ইশরাক বলেন, আমরা যদি এখান থেকে পেছনের দিকে চলে যাই, তাহলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে না। সরকারকে আহ্বান জানাবো, আপনারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটা নিষ্পত্তি করেন। নইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এই সংকটে চলবেই। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের যেসব দৈনন্দিন কার্যক্রম চলবে, জনগণের জন্য ভোগান্তি না হয়। এগুলো আমাদের তত্ত্বাবধানে চলমান থাকবে।

এদিকে তারা ‘শপথ শপথ শপথ চাই, ইশরাক ভাইয়ের শপথ চাই’, ‘মেয়র নিয়ে তালবাহানা, সহ্য করা হবে না’, ‘চলছে লড়াই চলবে, ইশরাক ভাই লড়বে’, ‘নগর পিতা ইশরাক ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’- এমন নানা স্লোগান দিয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। তাদের স্লোগানে উত্তাল ছিল পুরো নগরভবন। তাদের আন্দোলনের ফলে বিরতির আগে ১৫ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত নগর ভবন থেকে দেওয়া সব নাগরিক সেবা বন্ধ ছিল। ঈদের ছুটির পর আজ থেকে ফের তারা আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন ইশরাকের অনুসারীরা।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। সে সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে। এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু তাকে যেন শপথ পড়ানো না হয়; সেজন্য গত ১৪ মে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে গত ১৫ মে থেকে আন্দোলন নামেন ইশরাক সমর্থকরা। তাদের আন্দোলনের কারণে ডিএসসিসি নগর ভবন কার্যত অচল হয়ে পড়ে। কিন্তু আইনি জটিলতার কথা বলে ইশরাকের শপথের আয়োজন থেকে বিরত থাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

এরপর এ রিট মামলার ওপর কয়েক দফা শুনানির পর তা খারিজ করে আদেশ দেন হাইকোর্টের বেঞ্চ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মহাসমাবেশে পঞ্চাশ হাজার লোক নিয়ে উপস্থিত হব ইনশাআল্লাহ :  মুফতি মাসুম বিল্লাহ
  • নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করলেন মুফতি আমির হামজা
  • বিসিএস ক্যাডার এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের মধ্যে তুলনা কেন?
  • বিসিএস ক্যাডার ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের মধ্যে তুলনা কেন?
  • ইরানের শাসকদের ক্ষমতাচ্যুত করার আহ্বান সাবেক শাহের পুত্রের
  • আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিলেন ইশরাক হোসেন
  • আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিলেন ইশরাক হোসেন
  • বাজেটের ত্রুটি সংশোধনের আহ্বান
  • ড. ইউনূসকে দেশের কাজে যুক্ত রাখতে চায় বিএনপি