বাংলাদেশের মানুষের দুঃসময়ে জিয়াউর রহমান পাশে ছিলেন: হাবিব
Published: 20th, January 2025 GMT
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেছেন, “স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। বাংলাদেশের মানুষের দুঃসময়ে তিনি তাদের পাশে ছিলেন। দেশ ও জাতিকে মুক্ত করতে তিনি সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনিই স্বাধীনতার ঘোষক।”
তিনি বলেন, “মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র দখল করে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তার কথায় বিশ্বাস করে হাজার হাজার সেনা ও পুলিশ সদস্য যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন।”
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মদিন উপলক্ষে সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সাতক্ষীরার তালা উপজেলা বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। স্থানীয় ব্রজেন দে (বি.
আরো পড়ুন:
মাছ লুট করে বিক্রির অভিযোগ, বিএনপির ২ সদস্য বহিষ্কার
নেতাকর্মীদের বক্তৃতা ও স্লোগানের প্রশিক্ষণ দিতে হবে: ফখরুল
হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেন, “স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে কোনো গণতন্ত্র ছিল না। মানুষের মত প্রকাশের কোনো স্বাধীনতা ছিল না। সে সময় অন্যান্য সব পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে মাত্র চারটি পত্রিকা প্রকাশের অনুমতি ছিল। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে সব পত্রিকা প্রকাশের অনুমোদন দিয়েছিলেন। দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তার জনপ্রিয়তা ছিল আকাশচুম্বী। সে সময় নির্বাচনে বিএনপি বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিল। আগামী নির্বাচনেও বিএনপি বিপুল ভোটে জয়লাভ করে সরকার গঠন করবে, ইনশাল্লাহ।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা স্বৈারাচার এরশাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করেছিলাম। ঘোষণা দিয়েছিলাম, এরশাদ সরকারের সঙ্গে কোনো নির্বাচনে যাবো না। অথচ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ও জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে গিয়েছিল।”
তালা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মৃনাল কান্তি রায়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, তালা বিএনপির সহ-সভাপতি গোলাম মস্তোফা, যুগ্ন সম্পাদক অধ্যাপক মোশারাফ হোসেন, চেয়ারম্যান এম মফিদুল হক লিটু, উপজেলা যুবদলের সভাপতি মীর্জা আতিয়ার রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহাসিন মন্টু।
সভা শেষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। সেটি তালা উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব এনপ র র রহম ন কর ছ ল উপজ ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
শিল্পের আয়নায় অতীতের ছবি
বিগত শতকের ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৫, এই দুই দশক ছিল দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক ইতিহাসের খুবই তাৎপর্যময় ঘটনাবহুল সময়। একই সঙ্গে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলেও এই কালপর্বে সমাজতন্ত্রের পতনসহ এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যা মানুষের বিশ্বাস, আদর্শ, চিন্তা, অভিব্যক্তি ও জীবনাচরণে নানাভাবে প্রভাব রেখেছে। শিল্পীদের ভাবনায় সমকাল কেমনভাবে তার সৃজনকলায় উদ্ভাসিত হয়েছিল, তার একঝলক দেখে নেওয়ার সুযোগ তৈরি হলো কলাকেন্দ্রে।
গতকাল শুক্রবার ছুটির দিন বিকেলে লালমাটিয়ার ডি ব্লকের ৯/৪ নম্বর বাড়ির কলাকেন্দ্রে শুরু হলো ‘ফিরে দেখা’ নামে ১৪ শিল্পীর যৌথ শিল্পকর্ম প্রদর্শনী।
এই প্রদর্শনীতে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৬ পর্বে যাঁরা চারুকলার শিক্ষার্থী ছিলেন, তাঁরা পরবর্তীকালে ‘ঢাকা পেইন্টার্স’, ‘সময় গ্রুপ’সহ বেশ কিছু গোষ্ঠী গড়ে তুলেছিলেন। তাঁদের মধ্য থেকেই কাজী রাকিব, দীপা হক, ঢালী আল মামুন, দিলারা বেগম জলি, নিসার হোসেন, শিশির ভট্টাচার্য, সাইদুল হক জুইস, ফারেহা জেবা, রতন মজুমদার, হাবিবুর রহমান, রুহুল আমিন কাজল, লালা রুখ সেলিম, তৌফিকুর রহমান ও ওয়াকিলুর রহমানের প্রায় ৬০টি শিল্পকর্ম নিয়ে এই ‘ফিরে দেখা’ প্রদর্শনী।
শিল্পীরা মূলত আশি ও নব্বই দশকে যেসব কাজ করেছিলেন, তার কিছু কিছু নমুনা রয়েছে এখানে। অধিকাংশ কাজই শিল্পীদের ব্যক্তিগত সংগ্রহের। ছাপচিত্র, জলরং, ড্রয়িং, মিশ্রমাধ্যম, অ্যাক্রিলিকসহ বিভিন্ন মাধ্যমের চিত্রকলা ও ভাস্কর্য রয়েছে প্রদর্শনীতে। প্রদর্শনী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল চারটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত সবার জন্য খোলা থাকবে।
কলাকেন্দ্রের প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রচলিত অর্থে কোনো প্রধান বা বিশেষ অতিথি থাকেন না। প্রদর্শনীর কাজ নিয়ে এক বা একাধিক আলোচক আলোচনা করেন। সূচনা বক্তব্যে কলাকেন্দ্রের পরিচালক শিল্পী ওয়াকিলুর রহমান বলেন, স্বাধীনতা–পরবর্তীকালে দুই দশকজুড়ে সমাজ ও সমকালীন ভাবনা ও মনোভাব শিল্পীদের কাজে যেভাবে প্রকাশ পেয়েছিল, তার একটি খণ্ডচিত্র এই প্রদর্শনীতে পাওয়া যাবে।
‘ফিরে দেখা’ প্রদর্শনীটির মূল আলোচক ছিলেন অধ্যাপক আবুল মনসুর। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে বিগত সময়ের শিল্পীদের কাজ দেখা ও পর্যালোচনার সুযোগ কম। সরকারিভাবেও তেমন উদ্যোগ নেই। ফলে নতুন প্রজন্ম বিগত শিল্পীদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পর্কে জানতেই পারে না। দেশের ইতিহাসে ১৯৭০ থেকে ১৯৯০ এক বিশেষ অধ্যায়। এ সময় রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ রূপান্তরের প্রভাব শিল্পকলায় প্রতিফলিত হয়েছিল। সে সময়ের তরুণ শিল্পীরা বৈশ্বিক ও স্থানীয় পরিবর্তন, ইতিহাস ঐতিহ্য, আপন সংস্কৃতিকে তাঁদের নিজেদের মতো করে ধারণ করেছিলেন। তাঁরা যে শিল্পভাষা, ভাবনা, উপকরণ, উপস্থাপনা নিয়ে কাজ করেছিলেন, পরবর্তীকালে তা আমাদের চিত্রকলায় এক নতুন গতিমুখ তৈরি করেছে। সেই তরুণদের অনেকেই তাঁদের কাজের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছেন। নিজের কাজে অনেক পরিণত হয়েছেন। খ্যাতি অর্জন করে বর্তমানে দেশের অন্যতম শিল্পী হয়ে উঠেছেন। পরবর্তী প্রজন্মের শিল্পীদের নানাভাবে পথ দেখিয়েছেন।’
শিল্পের আয়নায় অতীতকে দেখার সুযোগ পাবেন দর্শকেরা এই প্রদর্শনীতে এলে।