সেই আদনান কামালই পপির স্বামী, আছে ছেলে সন্তানও
Published: 4th, February 2025 GMT
ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা সাদিকা পারভীন পপি দীর্ঘদিন ধরেই আড়ালে আছেন। আগে আদনান উদ্দিন কামাল নামে এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে ও মা হওয়ার গুঞ্জন নিয়ে কয়েকবার খবরের শিরোনামে ছিলেন তিনি। তবে এসব নিয়ে টু-শব্দও করেননি পপি। সেসময় আদনান জানান, পপি তাদের পারিবারিক বন্ধু। তার সঙ্গে বিয়ের কোনো প্রশ্নই আসে না। অবশেষে সেই গুঞ্জনই সত্য হল। সেই আদনান উদ্দিন কামালই নায়িকা পপির স্বামী।
জানা গেছে, প্রায় সাড়ে ৫ বছর আগেই জাহাজ ব্যবসায়ী আদনান উদ্দিন কামালকে বিয়ে করেন পপি। তাদের সংসারে আয়াত নামে চার বছরের এক ছেলে সন্তান রয়েছে। বর্তমানে পপি খুলনায় স্বামীর সঙ্গে বসবাস করছেন, যদিও তিনি মাঝে মাঝে ঢাকায়ও আসেন। রাজধানীর ধানমন্ডিতে তার একটি বাসাও রয়েছে।
মঙ্গলবার থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে স্বামী-সন্তান নিয়ে পপির পরিবারের কিছু ছবি। একটিতে স্বামী ও ছেলের সঙ্গে কেক কাটতে দেখা যায় পপিকে। এটি তাদের সন্তান আয়াতের জন্মদিনের ছবি।
এদিকে মঙ্গলবার পপিকে নিয়ে আসে নেতিবাচক একটি সংবাদ। জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগে সোমবার (৩ জানুয়ারি) খুলনার সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় পপির বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তার ছোট বোন ফিরোজা পারভীন। সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জিডির বিষয়টি সমকালকে নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়, পপি পারিবারিক জমি এককভাবে নিজের দখলে নিতে চান। এ নিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, বাধা পেলে তিনি ভাই-বোনদের হুমকি দিচ্ছেন, এমনকি তাঁদের মেরে ফেলার ভয়ও দেখিয়েছেন। শুধু তাই নয়, পপির মা মরিয়ম বেগম মেরির দিকেও নানা হুমকি আসছে।
এসব বিষয়ে জানতে পপির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
হাসলে কি অজু ভেঙে যায়
ইসলামি সংস্কৃতিতে একজন মুমিনের জীবনে শালীনতা, গাম্ভীর্য ও বিনয়কে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। হাসি-তামাশা মানুষের স্বভাবজাত হলেও এর আধিক্য বা মাত্রাতিরিক্ততা ইসলামে অপছন্দনীয়।
নামাজ ও অজুর মতো ইবাদতের ক্ষেত্রে এর প্রভাব কী, সেই বিষয়ে ইসলামি ফিকহের নির্দেশনা রয়েছে। মূলত, সাধারণ হাসি অজুর কোনো ক্ষতি করে না, তবে নামাজের ক্ষেত্রে এর পরিণতি সম্পূর্ণ ভিন্ন।
অজু ভঙ্গের কারণ হিসেবে হাসি‘নাওয়াক্বিদ আল-অজু’ বা অজু ভঙ্গের কারণ হিসেবে হাসি সরাসরি উল্লিখিত নেই। অজু ভঙ্গের যে সুনির্দিষ্ট কারণগুলো কোরআন ও সহিহ হাদিসে বলা হয়েছে, হাসি তার অন্তর্ভুক্ত নয়। (ইবন কুদামা, আব্দুল্লাহ ইবন আহমাদ, আল-মুগনি, ১/২২১, দারুল কিতাব আল-আরাবি, বৈরুত, ২০০৬)
আরও পড়ুনঅজু করার নিয়ম কানুন১৯ ডিসেম্বর ২০২৩তবে এখানে দুইটি সূক্ষ্ম বিষয় বিবেচনায় আনতে হবে। তা হল:
যদি প্রচণ্ড হাসির কারণে কোনো ব্যক্তির অজান্তে বায়ু নির্গত হয়, তবে সেই ক্ষেত্রে অজু ভেঙে যাবে। অর্থাৎ, প্রচণ্ড হাসি, যা আওয়াজ করে হয়, যদি এর কারণে অজুর মূল ভঙ্গকারী কোনো কারণ (যেমন: বায়ু নির্গত হওয়া) সংঘটিত হয়, তবে অজু ভেঙে যাবে।
হাসি নিজে অজুর কারণ নয়, বরং হাসির ফলে উদ্ভূত শারীরিক পরিবর্তন (বায়ু নির্গত হওয়া) অজু ভঙ্গের কারণ হবে। (সালেহ আল-ফাউজান, আল-মুল্লাখ্খাস আল-ফিকহি, ১/৫৮, দারুল আসনাহ, রিয়াদ, ২০০৪)
নামাজে উচ্চৈঃস্বরে হাসলে অজু ভেঙ্গে যাবে। তবে যদি হাসির শব্দ শুধু পাশের ব্যক্তিই শুনতে পেয়ে থাকে এবং তা এত জোরে না হয়ে থাকে যে, পিছনের কোনো মুসল্লি শুনতে পায়, তাহলে শুধু নামাজ পুনরায় পড়ে নেয়াই যথেষ্ট।
কারণ যে হাসির শব্দ পিছনের কাতারের মুসল্লি শুনতে পায় না তা দ্বারা অজু নষ্ট হয় না; অবশ্য আরো উঁচু শব্দে হেসে থাকলে অজু নষ্ট হয়ে যায়। (মাসিক আল-কাউসার, জুলাই ২০২০ সংখ্যা, প্রশ্ন ৫১৩৩; ইমাম আবু ইউসুফ, কিতাবুল আসার, বর্ণনা ১৩৫; রদ্দুল মুহতার ১/১৪৫)
নামাজ নষ্টের কারণ হিসেবে হাসিঅজুর বাইরে, নামাজের ক্ষেত্রে হাসির প্রভাব অত্যন্ত গুরুতর। নামাজের মধ্যে হাসলে তা নামাজকে বাতিল করে দেয়। কারণ, নামাজ হলো বিনয়, স্থিরতা এবং আল্লাহর প্রতি পূর্ণ মনোযোগের ইবাদত। নামাজের বাইরে অন্য যেকোনো কাজ, যা নামাজের অংশ নয়, তা নামাজকে নষ্ট করে দেয়।
আরও পড়ুনঘুমালে কেন অজু ভঙ্গ হয়০৬ অক্টোবর ২০২৫নামাজ ভঙ্গের কারণ হিসেবে হাসি বা কথা বলার বিষয়টি সুস্পষ্ট:
উচ্চস্বরে হাসি: যদি নামাজের মধ্যে কেউ উচ্চস্বরে হেসে ওঠে, তবে তার নামাজ সঙ্গে সঙ্গে বাতিল হয়ে যায়। কারণ এটি নামাজের মূলভিত্তি খুশু (বিনয় ও মনোযোগ) থেকে নামাজকে মুক্ত করে দেয়। (আল-কাসানী, আলাউদ্দিন আবু বকর, বাদায়িউস সানায়ি, ১/২৩৫, দারুল কুতুব আল-ইলমিয়্যাহ, বৈরুত, ১৯৮৬)।
কথা বলা: নামাজের মধ্যে কোরআন তেলাওয়াত ছাড়া অন্য যেকোনো ধরনের কথা বলা বা শব্দ করা নামাজকে নষ্ট করে দেয়। হাসিও এক ধরনের শব্দ বা প্রতিক্রিয়া, যা নামাজের কাঠিন্য ও পবিত্রতার সাথে বেমানান।
অধিক হাসি থেকে বিরত থাকার নির্দেশনাইসলামি শিষ্টাচারের অংশ হিসেবে একজন মুমিনকে হাসির আধিক্য থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত করা হয়েছে। কারণ, অতিরিক্ত হাসি অন্তরের কোমলতা নষ্ট করে এবং তাকে কঠিন করে তোলে।
কোরআনে কঠোর হৃদয়ের পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে, “কাজেই দুর্ভোগ তাদের জন্য, যাদের অন্তর আল্লাহর জিকির (স্মরণ) থেকে কঠিন হয়ে গেছে।” (সুরা যুমার, আয়াত: ২২)
রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবিদের সঙ্গে কথা বলার সময় গাম্ভীর্য বজায় রাখতেন এবং তিনি নিজে কম হাসতেন। তিনি এমন এক কঠিন সত্যের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন, যা মানুষকে হাসির পরিবর্তে ক্রন্দনে রত করে।
নবীজি (সা.) বলেন, “আমি যা জানি, তোমরা যদি তা জানতে, তাহলে তোমরা কম হাসতে এবং বেশি কাঁদতে।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৪৮৫)
এই হাদিসের মাধ্যমে রাসুল (সা.) পরকালের ভয়াবহতা, আল্লাহর মহত্ত্ব এবং মানুষের জন্য নির্ধারিত পরীক্ষার কথা তুলে ধরেছেন। এই সত্য অনুধাবন করলে হৃদয় স্বাভাবিকভাবেই হাসির পরিবর্তে আল্লাহর দিকে মনোযোগী হয় এবং বিনয়ী হয়।
মুসলিম হিসেবে আমাদের উচিত, নিজেদের অন্তরকে সুস্থ ও সজীব রাখতে হাসির আধিক্য থেকে বিরত থাকা। নামাজের সময় খুশু-খুজু বা বিনয়কে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে, যেন ইবাদতের উদ্দেশ্য পূর্ণ হয় এবং তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।
আরও পড়ুনশীতে মোজা পরে অজু করার বিধান ও পদ্ধতি২১ জানুয়ারি ২০২২