গাজায় নজিরবিহীন নৃশংসতা চালিয়ে ৬১ হাজারের বেশি মানুষ হত্যা ও এক লাখের বেশি আহত করার পর সম্প্রতি যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে, তা সামনের দিকে এগোবে এমনটাই প্রত্যাশা পুরো বিশ্বের। প্রথম ধাপে তিন দফায় বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ইসরায়েল তাদের কারাগারে থাকা হাজার হাজার ফিলিস্তিনি বন্দির মধ্য থেকে কয়েকশ জনকে মুক্তি দেয়। 

দ্য গার্ডিয়ান অনলাইন জানায়, মঙ্গলবার পর্যন্ত ৫ লাখ ৪৫ হাজার ফিলিস্তিনি উত্তর গাজায় তাদের বাড়িঘরে ফিরে গেছেন। অধিকাংশ বাড়িঘরই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এ অবস্থায় যুদ্ধবিরতি দ্বিতীয় ধাপে এগোনোর আগে ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার এ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। 

গত ২০ জানুয়ারি শপথ নেওয়ার পর কোনো বিদেশি নেতার সঙ্গে এটিই ট্রাম্পের প্রথম বৈঠক। আলজাজিরা জানায়, বৈঠকের আগে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি স্থগিত হবে– এমন নিশ্চয়তা তিনি দিতে পারছেন না।

এদিকে গাজা উপত্যকা থেকে আরও ফিলিস্তিনিকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য জর্ডান ও মিসরকে যে আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প তার বিরোধিতা করে যুক্তরাষ্ট্রকে চিঠি দিয়েছে পাঁচ আরব দেশ। এ দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও একজন জ্যেষ্ঠ ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও’র কাছে সোমবার এ চিঠি দেন। এতে সই করেন জর্ডান, মিসর, সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। এক্সিয়স জানায়, ট্রাম্পের প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যের এ শীর্ষ কূটনীতিকরা সম্প্রতি কায়রোতে বৈঠক করে এ চিঠির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের তামাশা

মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায় পর্যন্ত পাকিস্তানিরা আশা করেছিল, চীন হয়তো তাদের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধে অংশ নেবে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের চীন সফরে মধ্যস্থতা করে তাদের সেই আশা আরও প্রবল হয়েছিল। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, পাকিস্তানের প্রধান লক্ষ্য ও শেষ পর্যন্ত প্রবল আশা ছিল, যা তারা প্রকাশ্যে দেখাচ্ছিল, তা হলো চীন শেষ পর্যন্ত তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবে। কিন্তু এটি ছিল একটি তামাশা। কারণ, চীনারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা সামরিকভাবে যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করবে না। সব ধরনের কূটনৈতিক সহায়তা দেবে।

রোববার দ্য ডেইলি স্টার মিলনায়তনে ‘মুক্তিযুদ্ধের বৈশ্বিক ইতিহাস’ শীর্ষক আলোচনায় অধ্যাপক রেহমান সোবহান এই মন্তব্য করেন।

ডেইলি স্টার ইতিহাসের বিভিন্ন বিষয় ও ব্যক্তির অবদান তুলে ধরতে ‘ইতিহাস আড্ডা’ শীর্ষক ধারাবাহিক আলোচনার আয়োজন করেছে। এটি ছিল সপ্তম আয়োজন। কবি ইমরান মাহফুজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচক ছিলেন অধ্যাপক রেহমান সোবহান, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও অধ্যাপক নাভিন মুর্শিদ। অসুস্থতার কারণে আরেক আলোচক গবেষক–সাংবাদিক মঈদুল হাসান আসতে পারেননি।

চীনের তামাশা, যুক্তরাষ্ট্রের নাটক

অধ্যাপক রেহমান সোবহান মুক্তিযুদ্ধকালে তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও ভূমিকার পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, চীন পাকিস্তানের সঙ্গে যে তামাশা করছিল, সেই নাটক সাজিয়ে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। চীনকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, যেন তারা যুদ্ধে যোগ দেয়। চীন যখন যুদ্ধে আসছিল না, তখন যুক্তরাষ্ট্র তাদের সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগরে পাঠানোর হুমকি দেয়। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তাদের নৌবহরকে মার্কিন সপ্তম নৌবহরের গতিবিধি লক্ষ করতে নির্দেশ দিয়েছিল। সপ্তম নৌবহর আর আসেনি। এর পরিণতিতেই নিয়াজির চূড়ান্ত আত্মসমর্পণ এবং স্বাধীন বাংলাদেশের উত্থান।

‘মুক্তিযুদ্ধের বৈশ্বিক ইতিহাস’ শীর্ষক ইতিহাস আড্ডায় অধ্যাপক রেহমান সোবহান। রোববার দ্য ডেইলি স্টার মিলনায়তনে

সম্পর্কিত নিবন্ধ