অবৈধ ভারতীয়দের ‘হাত-পা বেঁধে’ ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
Published: 6th, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস থেকে ১০৪ জন অবৈধ ভারতীয় অভিবাসী নিয়ে বুধবার পাঞ্জাবের অমৃতসরে অবতরণ করেছে দেশটির একটি সামরিক বিমান। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন এজেন্ডার অংশ হিসেবে প্রথম ধাপে ফেরত পাঠানো হলো কাগজপত্রবিহীন অবৈধ এসব অভিবাসীকে। ফেরত পাঠানোর সময় হাত-পা শিকল দিয়ে বেঁধে বিমানে ওঠানো হয় তাদের, যা নিয়ে এখন তোলপাড় চলছে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে।
যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ইউএস বর্ডার প্যাট্রল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) হাত-পা বেঁধে রাখা ভারতীয়দের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে।
সংস্থাটির প্রধান মাইকেল ডব্লিউ ব্যাংকস ২৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিওর ক্যাপশনে লিখেছেন, সফলভাবে বিদেশিদের ভারতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। সামরিক বিমান ব্যবহার করে এটি সবচেয়ে দূরত্বে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর ঘটনা। অবৈধ পথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা ব্যক্তিদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি লেখেন, যদি আপনি অবৈধ পথে আসেন, আপনাকে ফেরত পাঠানো হবে।
এদিকে ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, প্রায় ৪০ ঘণ্টার এই যাত্রার পুরো সময় শিশু ছাড়া ফেরত পাঠানো অবৈধ অভিবাসীদের হাতকড়া ও পায়ে শেকল পরিয়ে রাখা হয়েছিল। এমনকি খাওয়া কিংবা টয়লেট ব্যবহারেরও যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেছেন নির্বাসিতরা।
ওয়াশিংটনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ট্রাম্পের সাক্ষাতের মাত্র এক সপ্তাহ আগে এই নির্বাসনের ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে। এ বিষয়ে সংসদে আলোচনার দাবি তুলেছে বিরোধী দল কংগ্রেস। তবে সেই দাবি আমলে না নিয়ে, বিবৃতি দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
এই নির্বাসনকে একটি চলমান প্রক্রিয়া দাবি করে তিনি বলেছেন, ফেরত আসা বহিষ্কৃতদের সঙ্গে ফ্লাইটের সময় যাতে কোনোভাবে দুর্ব্যবহার করা না হয়, তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে ভারত। খবর রয়টার্স, এনডিটিভি ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের তামাশা
মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায় পর্যন্ত পাকিস্তানিরা আশা করেছিল, চীন হয়তো তাদের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধে অংশ নেবে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের চীন সফরে মধ্যস্থতা করে তাদের সেই আশা আরও প্রবল হয়েছিল। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, পাকিস্তানের প্রধান লক্ষ্য ও শেষ পর্যন্ত প্রবল আশা ছিল, যা তারা প্রকাশ্যে দেখাচ্ছিল, তা হলো চীন শেষ পর্যন্ত তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবে। কিন্তু এটি ছিল একটি তামাশা। কারণ, চীনারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা সামরিকভাবে যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করবে না। সব ধরনের কূটনৈতিক সহায়তা দেবে।
রোববার দ্য ডেইলি স্টার মিলনায়তনে ‘মুক্তিযুদ্ধের বৈশ্বিক ইতিহাস’ শীর্ষক আলোচনায় অধ্যাপক রেহমান সোবহান এই মন্তব্য করেন।
ডেইলি স্টার ইতিহাসের বিভিন্ন বিষয় ও ব্যক্তির অবদান তুলে ধরতে ‘ইতিহাস আড্ডা’ শীর্ষক ধারাবাহিক আলোচনার আয়োজন করেছে। এটি ছিল সপ্তম আয়োজন। কবি ইমরান মাহফুজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচক ছিলেন অধ্যাপক রেহমান সোবহান, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও অধ্যাপক নাভিন মুর্শিদ। অসুস্থতার কারণে আরেক আলোচক গবেষক–সাংবাদিক মঈদুল হাসান আসতে পারেননি।
চীনের তামাশা, যুক্তরাষ্ট্রের নাটকঅধ্যাপক রেহমান সোবহান মুক্তিযুদ্ধকালে তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও ভূমিকার পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, চীন পাকিস্তানের সঙ্গে যে তামাশা করছিল, সেই নাটক সাজিয়ে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। চীনকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, যেন তারা যুদ্ধে যোগ দেয়। চীন যখন যুদ্ধে আসছিল না, তখন যুক্তরাষ্ট্র তাদের সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগরে পাঠানোর হুমকি দেয়। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তাদের নৌবহরকে মার্কিন সপ্তম নৌবহরের গতিবিধি লক্ষ করতে নির্দেশ দিয়েছিল। সপ্তম নৌবহর আর আসেনি। এর পরিণতিতেই নিয়াজির চূড়ান্ত আত্মসমর্পণ এবং স্বাধীন বাংলাদেশের উত্থান।
‘মুক্তিযুদ্ধের বৈশ্বিক ইতিহাস’ শীর্ষক ইতিহাস আড্ডায় অধ্যাপক রেহমান সোবহান। রোববার দ্য ডেইলি স্টার মিলনায়তনে