বিভাগ ও ডিগ্রি পরিবর্তনের দাবিতে যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবন অবরোধ
Published: 1st, March 2025 GMT
বিভাগ ও ডিগ্রি পরিবর্তনের দাবিতে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করেছেন এগ্রো প্রোডাক্ট প্রসেসিং টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ সময় প্রশাসনিক ভবনে তালা ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
শনিবার (১ মার্চ) আনুমানিক দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা।
জানা যায়, এগ্রো প্রোডাক্ট প্রসেসিং টেকনোলজি বিভাগের নাম পরিবর্তন করে ‘ডিপার্টমেন্ট অফ ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং’ করা এবং বিভাগের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ডিগ্রির নাম পরিবর্তনের দাবিতে শিক্ষার্থীরা প্রায় চার মাস ধরে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে আন্দোলন আসছেন। শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করা হয়েছিল, তাদের দাবিগুলো মেনে নেওয়া হবে। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত রিজেন্ট বোর্ডের সভায় আশ্বাস অনুযায়ী দাবি পূরণ না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা আবার আন্দোলন শুরু করে।
আরো পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিত রেলপথ অবরোধ
গাজীপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের দাবিতে রেললাইন অবরোধ
দাবি পূরণ না হওয়ায় প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে ও ভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ও অবরুদ্ধ থাকার ফলে প্রশাসনিক ভবনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রক্টরিয়াল বডি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ড সদস্য, প্রাধ্যক্ষ, প্রক্টর, ছাত্র পরামর্শ নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালকসহ এপিপিটি বিভাগের শিক্ষকরা দফায় দফায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে আন্দোলন স্থগিত করতে বলেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তাদের কথায় আশ্বস্ত না হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যান।
পরে বিকাল ৫টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.
এ বিষয়ে এপিপিটি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জুবায়ের হোসাইন বলেন, “দীর্ঘ ৪ মাস ধরে আমরা আন্দোলন করেছি। আমাদের দাবি আদায়ের জন্য প্রশাসন থেকে আশ্বাস দিলে আমরা ক্লাসে ফিরে যাই। কিন্তু পরপর দুইটি রিজেন্ট বোর্ড হলেও আমাদের দাবি না মেনে তারা আবার সেই পূর্বের মতো ডিগ্রি দিতে চায়। এটা জনতে পেরে আজ আবার আন্দোলনে নামতে বাধ্য হই।”
তিনি বলেন, “আমরা যেহেতু সব কোর্স ও কারিক্যুলাম অনুযায়ি ইন্জিনিয়ারিংয়ের যোগ্য এবং ইতোমধ্যে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় পরিবর্তন করেছে, তাই আমাদের দাবি মানতে হবে। আমাদের আশ্বাস দেওয়া ফুড ইন্জিনিয়ারিং ডিগ্রি ও বিভাগ আমরা চাই। যেহেতু কোষাধ্যক্ষ স্যার আবার বিষয়টি দেখে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন, তাই আজকের মতো অবরোধ স্থগিত ঘোষণা করছি।” দাবি আদায় না হলে আবার আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারীও দেন তিনি।
ঢাকা/ইমদাদুল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবর ধ আম দ র অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
বিগ-বির মাধ্যমে জাপানের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী বাংলাদেশ
এক দশক আগে বঙ্গোপসাগর ঘিরে বাংলাদেশের জন্য বিগ-বি নামে পরিচিত বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট গ্রহণ করেছিল জাপান। বঙ্গোপসাগরীয় শিল্প প্রবৃদ্ধির ওই উদ্যোগে রয়েছে মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর, বিদ্যুৎ প্রকল্প আর আধুনিক পরিবহনব্যবস্থার বিকাশ। মে মাসের শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের জাপান সফরে বিগ–বির মাধ্যমে সহযোগিতা জোরদারের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। তাঁর জাপান সফরের আগে টোকিওতে ১৫ মে অনুষ্ঠেয় দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকেও বিষয়টিতে প্রাধান্য দেবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের ষষ্ঠ বৈঠকের প্রস্তুতি হিসেবে বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে জাপানের আলোচনায় কোন কোন বিষয়গুলোতে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার থাকবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
১৫ মে টোকিওতে দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠকে জসীম উদ্দিন বাংলাদেশের এবং জাপানের জ্যেষ্ঠ উপমন্ত্রী আকাহোরি তাকেশি তাঁর দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে কোন কোন বিষয়গুলো ১৫ মের আলোচনায় প্রাধান্য পেতে পাবে, তা নিয়ে মতামত নেওয়া হয়। পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন সফরসহ সচিব পর্যায়ের সফর নিয়ে আলোচনা হয়।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বিগ–বিতে সহযোগিতা জোরদারের পাশাপাশি ব্যবসা, বিনিয়োগ, নবায়নযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ খাতভিত্তিক সহযোগিতা জোরদারের ওপর অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়।
জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার নানা বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন সফর নিয়ে আলোচনা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, টোকিওতে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকটি দুই ভাগে বিভক্ত থাকবে। প্রথম ভাগে থাকবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নানা বিষয়। আর দ্বিতীয় ভাগে থাকবে আঞ্চলিক ভূরাজনীতি ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি।
আঞ্চলিক বিষয়াদিতে জাপানের বিগ–বি নিয়ে আলোচনা হবে। এ সময় ঢাকার পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কের বাস্তবতা তুলে ধরা হবে। সেই সঙ্গে এ প্রকল্প সামনে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিও বলা হবে। পরে ভারত যদি এর সঙ্গে যুক্ত হতে চায়, তবে তার ব্যবস্থা রাখার কথা বলা হবে।
বিগ–বির সঙ্গে ২০২৩ সালে ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলকে যুক্ত করে জাপান। কিন্তু ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে চরম টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্ক। এমন এক প্রেক্ষাপটে বিগ–বিকে বিশেষ করে সংযুক্তিকে বাংলাদেশের পরিমণ্ডলে নেওয়ার পরিকল্পনায় আপাতত একটা ধাক্কা এসেছে। এ নিয়ে জাপান নানাভাবে নিজেদের অস্বস্তির বিষয়টি বাংলাদেশকে জানিয়েছে। বিগ–বি জাপানের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের অগ্রাধিকার প্রস্তাব হওয়ায় এটিতে বিশেষ গুরুত্ব আছে টোকিওর। তাই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে আগ্রহী জাপান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক এবং প্রধান উপদেষ্টার টোকিও সফরে জাপান প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিবিড় করার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশের কাছ থেকে সমরাস্ত্র বিক্রির ওপর কয়েক বছর ধরে আগ্রহ প্রকাশ করে আসছে জাপান।
বাংলাদেশকে ২০২৩ সালে জাপানের সরকারি নিরাপত্তা সহায়তায় (ওএসএ) যুক্ত করা হয়েছে। মূলত জাপান নিজের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে এই কাঠামো তৈরি করেছে। ওএসএর মাধ্যমে জাপান বন্ধুরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও গভীর করার এবং ওই দেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা দিয়ে থাকে। ওএসএর মাধ্যমে জাপান একটি দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে ঋণের পরিবর্তে অনুদান দিয়ে থাকে।