মিডিয়াম পেসার, এটাই ছিল তাঁর মূল পরিচয়। তবে সৈয়দ আবিদ আলী নামটা শুনলেই সেই পরিচয় ছাপিয়ে সামনে চলে আসে তাঁর দুর্দান্ত ফিল্ডিং ও ক্ষিপ্র গতির রানিং বিটুইন দ্য উইকেটের কথা। ফিল্ডিংয়ে ‘সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকা’ ভারতের সাবেক এই ক্রিকেটার আর নেই। ১৯৬৭ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত ভারতের হয়ে ২৯টি টেস্ট খেলা এই ক্রিকেটার বুধবার ৮৩ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় মারা গেছেন।

আবিদ আলীর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্তটা এসেছিল ১৯৭১ সালে ওভালে। বল হাতে নয়, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের জয়সূচক রানটা এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকেই। আবিদ আলী স্কয়ার কাট করতেই জয়ের উল্লাসে হুড়মুড়িয়ে মাঠে ঢুকে পড়েছিল হাজারো ভারতীয় সমর্থক। সিরিজে শেষ সেই ম্যাচটা জিতে তিন ম্যাচের সিরিজটা জিতে নেয় ভারত। ইংল্যান্ডের মাটিতে ভারতের সেটিই ছিল প্রথম সিরিজ জয়।

ভারতের ওয়ানডে ইতিহাসের প্রথম পাঁচটি ম্যাচই খেলা আবিদ আলী ছিলেন ১৯৭৫ বিশ্বকাপের দলে। বিশ্বকাপে ভারতের প্রথম ছক্কাটি এসেছে তাঁর ব্যাট থেকেই। ২৯ টেস্টের ক্যারিয়ারে মাত্র ৪৭টি উইকেট পেলেও শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। ১৯৬৭ সালে অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকে প্রথম ইনিংসেই ৬ উইকেট পেয়ে যান। টেস্ট অভিষেকে ভারতের কোনো পেসারের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড হিসেবে এখনো টিকে আছে যা।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে কোচিংয়ে সৈয়দ আবিদ আলী.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

আশাহত হতে চাই না, অলৌকিক বলতেও একটা ব্যাপার আছে

দেশের মানুষ অনেক ধরনের সরকারই দেখেছে। সব সরকারের মধ্যেই ছিল দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির প্রবণতা। সহজাত দুর্নীতি তো ছিলই। দলীয় নেতাদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব এবং স্বজনপ্রীতির হাত ধরেও দুর্নীতিকে আসতে দেখা গেছে। সরকারের চরিত্রের বদল না হওয়ায় এ অপবাদ থেকে মুক্ত নয় এমনকি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেহেতু দলীয় নয়, আমরা আশা করেছিলাম নানা ধরনের সংস্কারের কাজ তারা করবে এবং উপদেষ্টারা জোরালো ভূমিকা রাখতে পারবেন। কিন্তু তা হয়নি। আগের সরকারগুলোর চরিত্র বর্তমান সরকারেও গেড়ে বসেছে। পরিবর্তন দেখছি না, শুধু হাতবদল ও মুখবদল হয়েছে। তাঁদের অনেকের কর্মকাণ্ডে জনগণ হতাশ হয়েছেন।

আমি মনে করি, বাংলাদেশের বর্তমান আর্থসামাজিক বিষয়ের ওপরে প্রথম আলোর জরিপটিকে একটি বাস্তবতার নিরিখে দেখা প্রয়োজন। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে আর্থসামাজিক বিষয়ে সাধারণ মানুষের প্রত‍্যাশা অনেক। তাঁরা মনে করছেন, নির্বাচনের পরে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে এবং তাঁদের জীবনে স্বস্তি ফিরে আসবে।

জরিপের ফলাফল সাধারণভাবে ঠিক এই সময়ের সাধারণ মানুষের চিন্তাচেতনার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। যেহেতু যাঁরা ভোট দেবেন, তেমন ১ হাজার ৩৪২ জনের মতামত নেওয়া হয়েছে। সহিষ্ণুতা এবং দুর্নীতি কমার বিষয়টি নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করায় যে জবাবগুলো পাওয়া গেছে, সেগুলো বর্তমান বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করে।

তবে কিছু কিছু জবাব সাধারণ চিন্তাচেতনার সঙ্গে যায় না বলে মনে হচ্ছে। যেমন ‘নারীর মধ‍্যে দেশ নিয়ে আশাবাদ বেশি’, কথাটি নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেতে পারে। বহু নারীর মধ‍্যেই এমন ভীতি আছে যে ধর্মভিত্তিক দলগুলো রাষ্ট্রক্ষমতা পেলে তাঁরা আরও ঘরের মধ‍্যে বন্দী হয়ে যাবেন। সুতরাং জরিপে আসা এ জবাব ঠিক সাধারণ চিন্তাচেতনার সঙ্গে যায় না।

শেষ দিকে যদি বলি, প্রথম আলোর জরিপে মানুষের নৈরাশ্যের চিত্র উঠে এসেছে, যা দেখা গেছে, কেউ হতাশ আবার কেউ খুবই হতাশ। গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, জরিপে ১৯ শতাংশ অংশগ্রহণকারী জবাবই দেননি। সার্বিক বিবেচনায় যা মনে হচ্ছে, ভবিষ্যতেও যে সরকারের চরিত্র বদলাবে, সেই আশা করা কঠিন। তবু চূড়ান্ত বিচারে আশাহত হতে চাই না। অলৌকিক বলতেও তো একটা ব্যাপার আছে।

সেলিম জাহান সাবেক পরিচালক, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন দপ্তর এবং দারিদ্র্য দূরীকরণ বিভাগ

মতামত লেখকের নিজস্ব

সম্পর্কিত নিবন্ধ