কবরস্থানের জমি নিয়ে বিএনপির ২ পক্ষের দ্বন্দ্বে নিহত ১
Published: 21st, March 2025 GMT
নাটোরের বড়াইগ্রামে কবরস্থানের জমি নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের দ্বন্দ্বে ছুরিকাঘাতে নজিম উদ্দিন (৫০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হন আরো তিনজন। তাদের নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার (২১ মার্চ) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার জোয়াড়ী ইউনিয়নের নওপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
নিহত নজিম উদ্দিন একই গ্রামের মৃত আলাউদ্দিনের ছেলে। আহতরা হলেন- নওপাড়া গ্রামের বন্দের আলী ছেলে ও ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম (৪৫), সিরাজ উদ্দিনের ছেলে ও ছাত্রদল কর্মী আরিফুল ইসলাম (৩৮) ও বাবু মিয়া (৪৫)।
আরো পড়ুন:
হত্যা-লুটপাটে জড়িত নয়, এমন কারো নেতৃত্বে আ.
ধামরাইয়ে বিএনপি নেতা হত্যার নেপথ্যে মাটি ব্যবসার বিরোধ
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন ধরে কবরস্থানের জমি নিয়ে বিএনপি নেতা গনি মিয়া ও ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। এ বিষয়ে আদালতে মামলাও চলমান। আজ গনি মিয়ার ছেলে ওমর ফারুখ ও জামাই ফারুখ হোসেনের সঙ্গে জাহাঙ্গীর আলমের কথা-কাটাকাটি হয়।
এরই এক পর্যায়ে ওমর ফারুখ নজিম উদ্দিনকে ছুরিকাঘাত করেন। এসময় তাকে উদ্ধার করতে এলে জাহাঙ্গীর আলম, আরিফুল ইসলাম ও বাবু মিয়াকেও ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানকার চিকিৎসক নজিম উদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যান্যরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বড়াইগ্রাম থানার কর্মকর্তা (তদন্ত ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, “পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন।”
ঢাকা/আরিফুল/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ন হত আহত জ হ ঙ গ র আলম ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে উৎসবমুখর পরিবেশে নবীন বরণ
বর্ণাঢ্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে নবীন বরণ অনুষ্ঠান।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকেই কলেজ প্রাঙ্গণ মুখর হয়ে ওঠে নবীন শিক্ষার্থীদের আগমন আর উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে। আনন্দ, উচ্ছ্বাস,ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে দিনব্যাপী এই আয়োজনে নবাগত শিক্ষার্থীদের বরণ করা হয়।
কলেজ প্রাঙ্গণজুড়ে ছিল বর্ণিল সাজসজ্জা। প্রধান ফটক থেকে শুরু করে একাডেমিক ভবন সব জায়গায় করা হয়েছে রঙিন সাজসজ্জা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই পার করেছে এক আনন্দমুখর সময়।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে নবীন শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। এসময় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও গীতা পাঠ করা হয়।
আলোচনা পর্বের বক্তব্যে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, “শিক্ষাজীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হলো আজ। নিয়মিত অধ্যয়ন, নৈতিকতা ও মানবিক গুণাবলির সমন্বয়ে তোমরাই আগামী দিনের আলোকবর্তিকা।
নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ শুধু শিক্ষার নয়, শৃঙ্খলা ও মানবিক মূল্যবোধের প্রতীক। নবীনদের সক্রিয় অংশগ্রহণে এই ঐতিহ্য আরও সমৃদ্ধ হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এই কলেজের প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন শুধু ভালো ফলই না করে, বরং সৎ, ন্যায়ের পক্ষে ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুগ্ধতা ছড়ায় শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় নাচ, গান, আবৃত্তি, রম্য বিতর্ক ও ফ্যাশন শো যা অনুষ্ঠানকে আরও প্রানবন্ত করে তোলে। দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী অদ্রি আবৃত্তি করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জনপ্রিয় কবিতা ‘বোঝাপড়া’।
একাদশ শ্রেণির ঊর্মি ও মাহী পরিবেশন করে দ্বৈত নৃত্য, যা উপস্থিত দর্শকদের করতালিতে মুখরিত করে তোলে সমগ্র অনুষ্ঠানস্থল।
ডিবেটিং ক্লাবের সদস্যরা পরিবেশন করেন রম্য বিতর্ক “আমার দেশে আমিই সেরা” যেখানে রসিকতা ও বুদ্ধিদীপ্ত সংলাপে হাস্যরসের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এছাড়াও ঊর্মি ও তিশার দ্বৈত নৃত্য অনুষ্ঠানে বিশেষ নজর কাড়ে।
অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ফ্যাশন শো। এ বছরের থিম ছিল— “সমাজে প্রান্তিক বা সুবিধাবঞ্চিত নারীদের অবস্থান”। শিক্ষার্থীরা পোশাক ও উপস্থাপনার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলেন সমাজের প্রান্তিক নারীদের সংগ্রাম, আত্মমর্যাদা ও জীবনের বাস্তব চিত্র।
পোশাকের নকশা, রঙ ও ভাবনায় ফুটে ওঠে নারীর শক্তি, সাহস ও সমতার বার্তা। দর্শক ও অতিথিরা প্রশংসা করেন শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও সচেতন চিন্তাধারা।
নবীন শিক্ষার্থীরা এই আয়োজনে অংশ নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। একাদশ শ্রেণির নবীন শিক্ষার্থী সায়মা ইসলাম মালিহা বলেন, “আজকের দিনটি আমার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় দিন। কলেজের পরিবেশ, শিক্ষকদের আন্তরিকতা এবং সিনিয়রদের ভালোবাসা আমাদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। মনে হচ্ছে আমি সত্যিই নতুন জীবনের এক সুন্দর অধ্যায়ে প্রবেশ করেছি।”
আরেক নবীন শিক্ষার্থী তাবাসসুম তিথি বলেন, “আজ আমাদের কলেজে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেওয়া হলো। নতুন বন্ধুদের সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং এত সুন্দর আয়োজনের অংশ হতে পারা সত্যিই আনন্দের।”
পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন কলেজের সাংস্কৃতিক দলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করে বিএনসিসি ও গার্ল গাইডের সদস্যরা।
এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবেরা তাহমিনা, অতিথি হিসেবে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ফজলুল হক রুমন রেজা, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, রণদা প্রসাদ সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও মানবাধিকার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও প্রক্টর ড. সেলিনা আক্তার, একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আরিফুর রহমানসহ মহিলা কলেজের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।