আপসকামী বিরোধী রাজনীতিবিদদের জন্য ৫ আগস্ট দ্বিতীয় স্বাধীনতা নয়: নাহিদ ইসলাম
Published: 27th, March 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, সম্প্রতি ‘প্রথম স্বাধীনতা’ ও ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। যারা গত ১৬ বছর আওয়ামী দুঃশাসনের ভুক্তভোগী ছিলেন, তাদের কাছে এটা অবশ্যই স্বাধীনতা। ৫ আগস্ট আমরা নতুন করে স্বাধীন হয়েছি। অন্যদিকে, এই সময়টাতে যাদের ব্যাংক–ব্যালেন্স অক্ষুণ্ন ছিল, যারা আপস করে বিরোধী রাজনীতি করেছে- তাদের জন্য হয়তো এটা স্বাধীনতা নয়। কারণ তারা হয়তো সব আমলেই স্বাধীন ছিলেন। তাদের কাছে প্রথম কিংবা দ্বিতীয় স্বাধীনতা গুরুত্বপূর্ণ না। তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ লুটপাতের স্বাধীনতা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে রূপায়ন টাওয়ারে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন। ২০২১ সালের মোদীবিরোধী আন্দোলনে নিহতদের তালিকা প্রকাশ, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও বিচারের দাবিতে এর আয়োজন করে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’।
অনুষ্ঠানে নাহিদ ইসলাম মোদীবিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গত ১৫ বছরের রাজনৈতিক আন্দোলনে মোদী বিরোধী আন্দোলনের তাৎপর্য অনেক বেশি। এই আন্দোলনের মাধ্যমে এ দেশে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় দলগুলো একই কাতারে নেমে এসেছিল। সেই আন্দোলনে পুলিশসহ ছাত্রলীগ-যুবলীগ সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল। কিন্তু সেই হত্যাকাণ্ডে কতজন মারা গেছেন, সেই সংখ্যাটা এখনও নিরূপণ করা যায়নি। এ সময় তিনি নিহতদের তালিকা করে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান।
তিনি বলেন, এ দেশে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের উদ্দেশ্যে ভারতের গণমাধ্যমগুলোতে হিন্দু ‘নির্যাতনের গল্প’ প্রচার করা হচ্ছে। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতারা ভারতে অবস্থান করছেন। ভারত গণহত্যাকারীদের আশ্রয় দিয়ে কোনো ভালো উদাহরণ সৃষ্টি করেনি। গণহত্যাকারীদের বিচার কার্যক্রম এগোচ্ছে। ভারত এসব অপরাধীদের ফেরত দেবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা। এর মাধ্যমেই বোঝা যাবে, ভারত এ দেশের সঙ্গে কতটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন মোদীবিরোধী আন্দোলনের সংগঠক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব আকরাম হোসেন, আন্দোলনে নিহত হাফেজ জোবায়েরের বাবা ফজলুল হক, আসাদুল্লাহ রাজিনের বাবা শফিকুল ইসলাম, হারেস মিয়ার বাবা আলতাফ আলী, কামাল মিয়ার বাবা মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনস প ন হ দ ইসল ম স ব ধ নত র জন ত ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে নতুন ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে: মামুনুল হক
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, বাংলাদেশের চলমান নির্বাচন ব্যবস্থায় ভয়ানক ‘শুভংকরের ফাঁক’ রয়েছে এবং অতীতের তথাকথিত ফেয়ার ইলেকশন মূল্যায়ন করলে এটি স্পষ্ট হয়। এই অবৈধ নির্বাচনের কারণেই ফ্যাসিবাদ তৈরি হয় এবং চলমান নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে নতুন করে ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যশোরের জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ‘শাপলা চত্বরে গণহত্যা, পিলখানা গণহত্যা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার বিচার ও খেলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এ সমাবেশে আয়োজন করে খেলাফত মজলিস যশোর জেলা শাখা।
মামুনুল হক বলেন, ধর্ম নিরপেক্ষতা নামক ভারতীয় প্রেসক্রিপশন ভারতকে ফেরত দিতে হবে। বাংলাদেশে আর কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের প্রেসক্রিপশন চলবে না। আমরা দিল্লির গোলামি ছিন্ন করেছি ওয়াশিংটনের গোলামি করার জন্য না। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে কোনো ষড়যন্ত্র, যে কোনো পরিকল্পনা আমরা প্রয়োজনে রাজপথে রক্ত দিয়ে রুখে দেব।
সব রাজনৈতিক দলকে আরও উদার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যদি ঐক্য বিনষ্টের কারণে আবার সেই স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফিরে আসার সুযোগ পায়, তাহলে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ আপনাদের ক্ষমা করবে না। পারস্পরিক প্রতিযোগিতা থাকবে, কিন্তু সেই প্রতিযোগিতা যেন বিদ্বেষ ছড়ানোর হাতিয়ার না হয়।
পিআর পদ্ধতি নিয়ে দুটি পক্ষের অবস্থানকে উদ্বেগজনক উল্লেখ করে মামুনুল হক একটি সুষ্ঠু সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য সব রাজনৈতিক দলকে ঐকমত্যে পৌঁছানোর আহ্বান জানান। তিনি উভয় পক্ষকে ছাড় দিয়ে মাঝামাঝি পন্থা অবলম্বনের পরামর্শ দেন।
খেলাফত মজলিসের আমির বলেন, দেশ এবং ইসলামবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড করলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে খেলাফত মজলিস কঠোর আন্দোলন ঘোষণা করবে। জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্ণ হলেও জুলাই ঘোষণাপত্র আজও ঘোষণা হয়নি, যার দায় বর্তমান সরকারের। তিনি এই জুলাইয়ের মধ্যেই কাঙ্ক্ষিত জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের দাবি জানান।
মামুনুল হক আর বলেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা খেলাফত মজলিসকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা করেছিলেন। আমাদের এমন কোনো নেতা নেই যাদের জেলখানায় নির্যাতন করা হয়নি। এরপরও আমরা কোনো দিন স্বৈরাচারের কাছে মাথানত করেননি।
খেলাফত মজলিস যশোরের সভাপতি আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে গণসমাবেশে কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব আতাউল্লা আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক নিয়ামতউল্লাহ, প্রশিক্ষণ সম্পাদক জহিরুল ইসলামসহ খুলনা বিভাগের ১০ জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।