নাটোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ২ নেতাকে নির্যাতনের অভিযোগ
Published: 30th, March 2025 GMT
নাটোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই যুগ্ম আহ্বায়ককে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলনে করেছেন ভুক্তভোগীরা।
এসময় সিংড়া থানার ওসি আসমাউল হকসহ জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা। পাশাপাশি ঈদের পর এ ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলেও জানান ভুক্তভোগীরা।
শনিবার (২৯ মার্চ) রাত ৯টার দিকে শহরের লালবাজারের একটি কমিউনিটি সেন্টারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নাটোর জেলার নেতারা এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ২৪ মার্চ রাতে সিংড়ায় যুবদল নেতা সোহাগের নেতৃত্বে উত্তর দমদমা এলাকায় ছাত্রদল-যুবদলের চারজন ট্রান্সফরমার চুরি করতে যায়। এসময় স্থানীয়রা তাদের আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এই ঘটনায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই যুগ্ম আহ্বায়ক উদয় মিজান ও আদনান পুলিশকে সহযোগিতার জন্য সিংড়া থানায় যায়।
এসময় সিংড়া থানার ওসি আসমাউল হকসহ ৩০/৩৫ জন পুলিশ তাদের আটকে রেখে নির্যাতন করেন। পরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা পর্যায়ের নেতারা গিয়ে বন্ডসই দিয়ে থানা থেকে তাদের ছাড়িয়ে নেন। হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে শনিবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্যাতিতরা সিংড়া থানার ওসি আসমাউল হকসহ দায়ী পুলিশদের বরখাস্তের দাবি জানান।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন নাটোর জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক ভুক্তভোগী আদনান বলেন, “সেদিন আমরা ঘটনা জানতেই থানায় গিয়েছিলাম। প্রথমে পুলিশের গাড়ি থানায় ঢোকে তারপর আমরা ঢুকি। কোনো কারণ ছাড়াই গেট থেকে আমাদের মারতে মারতে থানার ভেতরে নিয়ে যায় পুলিশ। আমাকে মারতে মারতে বলে ‘তোকে মেরে ফেলব’। কেউ লাঠি দিয়ে মারে, কেউ পাইপ দিয়ে মারে, কেউ চড় মারে কেউ লাথি মারে। আমি এই ঘটনায় বিচার চাই।”
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নাটোর জেলার আহ্বায়ক আব্দুস সামাদ শিশির ও যুগ্ম আহ্বায়ক ওবায়দুল্লাহ মিমসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে সিংড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসমাউল হকের মোবাইল ফোনে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে সহকারী পুলিশ সুপার (সিংড়া সার্কেল) সনজয় কুমার সরকার বলেন, “এ বিষয়ে ওসি ভালো বলতে পারবেন। সংবাদ সম্মেলনের বিষয়টি আমি জানি না।” মারধরের বিষয় জানেন কিনা জানতে চাইলে এর সদুত্তর দেননি তিনি।
ঢাকা/আরিফুল/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস