অনেক সময় অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে থামিয়ে দিতে হয় খেলা। অতিরিক্ত গরম, অতিরিক্ত ঠান্ডা, মৃত্যু, যুদ্ধবিমানের আঘাত, বাঘের আক্রমণ, গুইসাপ ঢুকে পড়া এবং পোকার আক্রমণসহ বিচিত্র সব কারণে বন্ধ রাখতে হয়েছিল অনেক ম্যাচ।

তেমন ঘটনা দেখা গেছে মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপস এবং অস্টিন এফসির ম্যাচেও। এবার খেলা বন্ধের কারণ হয়েছে একটি ইঁদুর।

ভ্যাঙ্কুভারের মাঠ বিসি প্লেসে গতকাল ম্যাচের ৭ মিনিটের খেলা চলছিল তখন। অতিথি দল অস্টিন কর্নার কিক পায়। কিন্তু কর্নার নেওয়ার আগে রেফারি মাঝমাঠের কাছাকাছি জায়গায় সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন, যেখানে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ঢুকে পড়েছিল ছোট একটি ইঁদুর। রেফারির ডাকে সাড়া দিয়ে এ সময় দ্রুত ছুটে যান অস্টিন গোলরক্ষক ব্র্যাড স্টুভার।

আরও পড়ুনবাঘ, গুইসাপ, মৌমাছির পর এবার পোকামাকড়ে বন্ধ হলো ক্রিকেট ম্যাচ ১৪ নভেম্বর ২০২৪

কাছাকাছি যাওয়ার পর স্টু্ভারকে ইঁদুরের অবস্থান দেখিয়ে দেন সতীর্থ ব্র্যান্ডেন হাইনেস-ইকে। এরপর দ্রুত গতিতে সেই ইঁদুরটিকে গ্লাভসে পুরে নেন অস্টিন গোলরক্ষক। ইঁদুরটিকে দুই হাতের গ্লাভসে বন্দী করে অবশ্য খুব বেশি সময় নষ্ট করেননি স্টুভার।

দৌড়ে গিয়ে মাঠের বাইরে ছেড়ে দিয়ে আসেন ছোট প্রাণীটিকে। এ সময় ভ্যাঙ্কুভার সমর্থকদের কাছ থেকে বেশ সাধুবাদও পান স্টুভার। তবে এই ঘটনায় এক মিনিটের বেশি বন্ধ ছিল খেলা।

আরও পড়ুনবাঘ, যুদ্ধবিমান, ড্রেনের পাইপের পর এবার গুইসাপ—ক্রিকেট ম্যাচ বন্ধের যত অদ্ভুত কারণ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

তবে ইঁদুর ধরায় যতটা দক্ষতা দেখিয়েছে, গোল বাঁচানোয় ততটা দেখাতে পারেননি মার্কিন এই গোলরক্ষক। ভ্যাঙ্কুভারের কাছ থেকে সব মিলিয়ে ৫ গোল, যেখানে একাই ৪ গোল করেন ব্রায়ান হোয়াইট।

ম্যাচটা অস্টিন হেরেছে ৫-১ গোলে। এই জয়ে এমএলএসের ওয়েস্টার্ন কনফারেন্সের শীর্ষ স্থানটা আরও সুদৃঢ় করল ভ্যাঙ্কুভার। তাদের পয়েন্ট ৮ ম্যাচে ১৯। আর হেরে যাওয়া অস্টিন আছে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে ৫ নম্বরে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মেসি–সুয়ারেজরা কি এমএলএসের বিপদ বাড়াচ্ছেন

লিওনেল মেসিকে কেন্দ্র করে মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) বেশি বয়সীদের মিলনমেলা বসিয়েছে ইন্টার মায়ামি। আর্জেন্টাইন তারকার সঙ্গে দলটি নিয়ে এসেছে বার্সেলোনার সাবেক ফুটবলার লুইস সুয়ারেজ, জর্দি আলবা ও সের্হিও বুসকেতসকে। এঁদের সবার বয়সই ৩৫ পেরিয়ে গেছে।

ইউরোপ মাতানোর পর যাঁরা অবসর–পরবর্তী সময় কাটানোর জন্যই যেন যুক্তরাষ্ট্রের লিগে খেলছেন। ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে থাকা খেলোয়াড় নিয়ে দল সাজালে কেমন হয়, সেটিই দেখতে পাচ্ছেন এমএলএসের দর্শকেরা।

আজ বাংলাদেশ সময় সকালে কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে মেসির মায়ামি ৩-১ গোলে হেরেছে কানাডিয়ান ক্লাব ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপসের কাছে। তাতে দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ গোলে হেরে মহাদেশীয় এই প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নিতে হয়েছে মায়ামিকে। এমন বাজে অবস্থার জন্য মেসিদেরই দুষছেন কেউ কেউ।

‘মেসিদের যে মেয়াদ শেষ’—সেটা আকার-ইঙ্গিতে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সাবেক ডিফেন্ডার ওয়ারেন বার্টন, ‘ভ্যাঙ্কুভার দেখিয়ে দিল মায়ামির দুর্বলতা কোথায়। তারা তো দৌড়াতেই পারে না, ঠিকমতো রক্ষণও সামলাতে পারে না।’

আগের মতো আর ফর্মও নেই মেসিদের। এ মৌসুমে মেজর সকার লিগে এই আর্জেন্টাইনের গোল মাত্র তিনটি। আর সুয়ারেজের একটি। ভ্যাঙ্কুভারের সঙ্গে তো দৌড়িয়ে পেরে উঠতে পারেননি মেসি–সুয়ারেজরা। দুই দলের মধ্যে বড় তফাতটা বয়সের। মায়ামির নিয়মিত একাদশে তরুণের চেয়ে বুড়োদের দাপটই বেশি। যেখানে ভ্যাঙ্কুভার তরুণের গুরুত্ব দিয়েই দল সাজায়। সর্বশেষ দুই দেখায় দুই দলের গতিতেও তাই বড় হেরফের দেখা যায়।

ভ্যাঙ্কুভারের কোচ জ্যাসপার সোরেনসেন ম্যাচের পর মায়ামিকে খোঁচা মেরেছেন এভাবে, ‘আমার মনে হয় এটা বলা ঠিক হবে যে আমাদের একটি তরুণ দল আছে এবং এমন একটি দল, যারা দৌড়াতে এবং দাপটের সঙ্গে খেলতেও পারে।’

সামনে মায়ামির জন্য আরও কঠিন সময় অপেক্ষা করছে। জুনে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে খেলতে হবে মেসিদের। সেখানে মিসরের আল আহলি, পর্তুগালের পোর্তো, ব্রাজিলের পালমেইরাসের মতো ক্লাবের মুখোমুখি হতে হবে। যে মায়ামি ভ্যাঙ্কুভারের বিপক্ষে দুই ম্যাচে ৫ গোল হজম করে তারা ক্লাব বিশ্বকাপে কেমন করবে, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।

মেসিরা মায়ামিতে আসার পর থেকেই তাঁদের নিয়ে নানা আলোচনা। এমএলএসকে অনেকেই বুড়ো খেলোয়াড়দের সময় কাটানোর লিগ হিসেবে গণ্য করেন। সর্বশেষ ক্লাবটির কোচের দায়িত্ব নেন মেসির সাবেক সতীর্থ হাভিয়ের মাচেরানো। তাঁকে নিয়েও অনেক কথা হয়। কেউ এমএলএসকে মেয়াদ উত্তীর্ণ ফুটবলারদের লিগ বলেও রসিকতা করেন। এখন মেসি–সুয়ারেজদের কারণে লিগের জৌলুস বাড়লেও তাঁদের মহাদেশীয় প্রতিযোগিতার ব্যর্থতায় ‘বয়স্ক–পুনর্বাসন কেন্দ্র’ কথাটা এমএলএসের পাশে আরও জেঁকে বসতে পারে। যা লিগের ভবিষ্যৎ বিবেচনায় ক্ষতিকর দিক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মেসি–সুয়ারেজরা কি এমএলএসের বিপদ বাড়াচ্ছেন