ই–মেইল লেখার সময় যা মাথায় রাখবেন
Published: 20th, April 2025 GMT
এমন কি কখনো হয়েছে, স্রেফ একটা ‘ই–মেইল’ লেখার আলস্যে দারুণ একটা সুযোগ হারিয়েছেন? যদি না হয়ে থাকে, তাহলে আপনি ভাগ্যবান। কারও কারও কাছে ই–মেইল লেখার কাজটাও এত কঠিন যে মনোবিজ্ঞানে ‘ই–মেইল অ্যাংজাইটি’ নামেও একটা নতুন কথার চল শুরু হয়েছে। কী লিখব, কীভাবে লিখব, ভাষাটা কেমন হবে...লেখার আগেই এমন নানা দুশ্চিন্তায় ভোগেন অনেকে।
অবশ্য এই দুশ্চিন্তা একেবারে অমূলকও নয়। একটা ভালো ই–মেইল লিখেই আপনি হয়তো কোনো ভিনদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের মন গলিয়ে ফেলতে পারেন, তাঁর সঙ্গে গবেষণার সুযোগ পেতে পারেন। আবার উল্টোটাও হতে পারে। আপনার হয়তো যোগ্যতা আছে। কিন্তু ই–মেইলে নিজেকে ভালোভাবে উপস্থাপন করতে পারছেন না বলে কাজের সুযোগও হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। তাই পেশাদার ই–মেইল লেখার চর্চা করতে হবে আগে থেকেই।
এই নিয়েই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) অধ্যাপক খালেদ মাহমুদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। তিনি বলেন, ‘ই–মেইল একটি পেশাদার যোগাযোগের মাধ্যম। সঠিকভাবে ই–মেইল লেখার দক্ষতা আপনাকে শুধু শিক্ষাজীবনে নয়, ভবিষ্যতের পেশাগত জীবনেও এগিয়ে রাখবে। ই–মেইলে আপনার ব্যক্তিত্ব, পেশাদারত্ব ও যোগাযোগ দক্ষতা প্রকাশ করুন। ভুল বানান, অসংলগ্ন ভাষা বা অপ্রাসঙ্গিক কথা একটি নেতিবাচক ধারণা তৈরি করতে পারে।’ আরও কিছু পরামর্শ দিয়েছেন খালেদ মাহমুদ। চলুন জেনে নেওয়া যাক।
যেভাবে লিখবেন পেশাদার ই–মেইলসঠিক সাবজেক্ট লাইন দিন: ই–মেইলের বিষয়বস্তু বোঝাতে সাবজেক্ট লাইনে সংক্ষেপে মূল কথা লিখুন। যেমন, Request for Recommendation Letter বা Query Regarding Internship।
উপযুক্ত সম্বোধন ব্যবহার করুন: যদি আপনি শিক্ষককে ই–মেইল করেন, তাহলে শুরুতে ‘Dear Professor’ বা ‘Respected Sir/Madam’ ব্যবহার করুন। নাম জানা থাকলে নাম লিখুন। যেমন: Dear Dr.
নিজের পরিচয় দিন: প্রথমেই সংক্ষেপে আপনার পরিচয় দিন—নাম, বিভাগ, ব্যাচ বা রোল নম্বর উল্লেখ করুন। এতে ই–মেইলের প্রাপক আপনাকে সহজে চিনতে পারবেন।
তিন অনুচ্ছেদে ই–মেইল লিখুন: তিন অনুচ্ছেদের মধ্যে, ২০০-২৫০ শব্দে গুছিয়ে ই–মেইল লিখতে চেষ্টা করুন। প্রাপকের কাছে কী চাচ্ছেন, কী প্রয়োজন, কী তথ্য জানতে আগ্রহী, স্পষ্ট করে লিখুন। প্রয়োজনে বুলেট পয়েন্ট আকারে লিখুন। অপ্রয়োজনীয় তথ্য এড়িয়ে চলুন।
ভদ্রতা বজায় রাখুন: শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করুন। Thank you for your time and consideration বা I appreciate your support—এসব বাক্য লিখতে পারেন।
সঠিকভাবে ই–মেইল লেখা শেষ করুন: ই–মেইল লেখা শেষে Sincerely, Best regards, ইত্যাদি লিখে নিজের নাম দিন। প্রয়োজনে এই জায়গায় হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরও রাখতে পারেন।
প্রয়োজনে এআই-এর সাহায্য নিন: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিভিন্ন সফটওয়্যার বা ওয়েবসাইটের কল্যাণে গুছিয়ে ই–মেইল লেখা এখন অনেকটাই সহজ হয়ে গেছে। চ্যাটজিপিটির মতো প্ল্যাটফর্মকে সঠিকভাবে নির্দেশনা দিতে পারলে আপনার বক্তব্যটা গুছিয়ে লিখিয়ে নিতে পারবেন। এখন জিমেইলেও এআই-সহায়তা নিয়ে ই–মেইল লেখা যায়। চাইলে এই সহায়তা কাজে লাগাতে পারেন।
আরও পড়ুনজীবন সহজ করবে গুগল ক্রোমের এই ৫ এক্সটেনশন০৯ মার্চ ২০২৫যা এড়িয়ে চলবেনকোনো ইংরেজি শব্দের সংক্ষিপ্ত রূপ বা চ্যাটিংয়ের ভাষা (যেমন: u, plz, tnx) এড়িয়ে চলুন। ইমোজি বা অপ্রাসঙ্গিক ছবি ই–মেইলে যুক্ত করবেন না। সঠিক বানানে ই–মেইল লিখুন। সাধারণ ব্যাকরণ ভুল করা যাবে না। ব্যক্তিগত তথ্য বা আবেগপ্রবণ ভাষা এড়িয়ে চলুন।
ই–মেইলের বডিতে কিছু না লিখে অ্যাটাচমেন্ট পাঠিয়ে দেবেন না। এটিও এক ধরনের অসৌজন্যমূলক আচরণ।
আরও পড়ুনযে ৫ কারণে শুরুতেই বাদ পড়তে পারে আপনার সিভি২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের মশালমিছিল
মাদারীপুরে বিক্ষোভ ও ঝটিকা মশালমিছিল করেছে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মিছিলটি মহাসড়কে প্রায় ২০ মিনিট ধরে চলে। এ সময় মহাসড়কে চলাচল করা যানবাহন ও সাধারণ যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা প্রথম মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সারাদেশে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ ও মশালমিছিলের আয়োজন করে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা।
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মস্তফাপুর এলাকা থেকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা একটি ব্যানার হাতে নিয়ে মিছিল বের করে। পরে তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে মস্তফাপুর বাসস্ট্যান্ডের দিকে আসতে থাকে। এ সময় মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের হাতে ২০ থেকে ২২টি মশাল ছিল। এসময় কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়েও তাদের মহড়া দিতে দেখা যায়। ঝটিকা মিছিলটি মহাসড়কে ২০ মিনিট স্থায়ী হওয়ার পরে পুলিশ দেখে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। মশালমিছিলে অংশ নেওয়া সবাই মুখে মাস্ক পরা অবস্থায় ছিলেন।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল হোসেন বলেন, মহাসড়কের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এছাড়াও মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে টহল দিচ্ছে পুলিশ। কোনোপ্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা যেন কেউ না ঘটাতে পারে সে জন্য পুলিশ সার্বক্ষণিক নজরদারি চালাচ্ছে। এর ফাঁকে মহাসড়কে সন্ত্রাসী একটি গোষ্ঠী মশালমিছিল বের করেছে বলে শুনেছি। তারা মিছিল বের করার কয়েক মিনিটের মধ্যে পুলিশ চলে আসায় মিছিলকারীরা দ্রুত মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়। তাদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
এর আগে শাটডাউন কর্মসূচি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে রোববার ভোর সাড়ে ৬টায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে গোপালপুর এলাকায় একাধিক গাছ কেটে ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করা হয়। এ সময় মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভও করেন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মীরা। প্রায় চার ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর সকাল সাড়ে নয়টায় কালকিনি ও ডাসার থানার পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছ সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।