এমন কি কখনো হয়েছে, স্রেফ একটা ‘ই–মেইল’ লেখার আলস্যে দারুণ একটা সুযোগ হারিয়েছেন? যদি না হয়ে থাকে, তাহলে আপনি ভাগ্যবান। কারও কারও কাছে ই–মেইল লেখার কাজটাও এত কঠিন যে মনোবিজ্ঞানে ‘ই–মেইল অ্যাংজাইটি’ নামেও একটা নতুন কথার চল শুরু হয়েছে। কী লিখব, কীভাবে লিখব, ভাষাটা কেমন হবে...লেখার আগেই এমন নানা দুশ্চিন্তায় ভোগেন অনেকে।

অবশ্য এই দুশ্চিন্তা একেবারে অমূলকও নয়। একটা ভালো ই–মেইল লিখেই আপনি হয়তো কোনো ভিনদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের মন গলিয়ে ফেলতে পারেন, তাঁর সঙ্গে গবেষণার সুযোগ পেতে পারেন। আবার উল্টোটাও হতে পারে। আপনার হয়তো যোগ্যতা আছে। কিন্তু ই–মেইলে নিজেকে ভালোভাবে উপস্থাপন করতে পারছেন না বলে কাজের সুযোগও হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। তাই পেশাদার ই–মেইল লেখার চর্চা করতে হবে আগে থেকেই।

এই নিয়েই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) অধ্যাপক খালেদ মাহমুদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। তিনি বলেন, ‘ই–মেইল একটি পেশাদার যোগাযোগের মাধ্যম। সঠিকভাবে ই–মেইল লেখার দক্ষতা আপনাকে শুধু শিক্ষাজীবনে নয়, ভবিষ্যতের পেশাগত জীবনেও এগিয়ে রাখবে। ই–মেইলে আপনার ব্যক্তিত্ব, পেশাদারত্ব ও যোগাযোগ দক্ষতা প্রকাশ করুন। ভুল বানান, অসংলগ্ন ভাষা বা অপ্রাসঙ্গিক কথা একটি নেতিবাচক ধারণা তৈরি করতে পারে।’ আরও কিছু পরামর্শ দিয়েছেন খালেদ মাহমুদ। চলুন জেনে নেওয়া যাক।

যেভাবে লিখবেন পেশাদার ই–মেইল

সঠিক সাবজেক্ট লাইন দিন: ই–মেইলের বিষয়বস্তু বোঝাতে সাবজেক্ট লাইনে সংক্ষেপে মূল কথা লিখুন। যেমন, Request for Recommendation Letter বা Query Regarding Internship।

উপযুক্ত সম্বোধন ব্যবহার করুন: যদি আপনি শিক্ষককে ই–মেইল করেন, তাহলে শুরুতে ‘Dear Professor’ বা ‘Respected Sir/Madam’ ব্যবহার করুন। নাম জানা থাকলে নাম লিখুন। যেমন: Dear Dr.

Rahman। শুধু ‘হাই’, ‘হ্যালো’ লিখবেন না।

নিজের পরিচয় দিন: প্রথমেই সংক্ষেপে আপনার পরিচয় দিন—নাম, বিভাগ, ব্যাচ বা রোল নম্বর উল্লেখ করুন। এতে ই–মেইলের প্রাপক আপনাকে সহজে চিনতে পারবেন।

তিন অনুচ্ছেদে ই–মেইল লিখুন: তিন অনুচ্ছেদের মধ্যে, ২০০-২৫০ শব্দে গুছিয়ে ই–মেইল লিখতে চেষ্টা করুন। প্রাপকের কাছে কী চাচ্ছেন, কী প্রয়োজন, কী তথ্য জানতে আগ্রহী, স্পষ্ট করে লিখুন। প্রয়োজনে বুলেট পয়েন্ট আকারে লিখুন। অপ্রয়োজনীয় তথ্য এড়িয়ে চলুন।

ভদ্রতা বজায় রাখুন: শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করুন। Thank you for your time and consideration বা I appreciate your support—এসব বাক্য লিখতে পারেন।

সঠিকভাবে ই–মেইল লেখা শেষ করুন: ই–মেইল লেখা শেষে Sincerely, Best regards, ইত্যাদি লিখে নিজের নাম দিন। প্রয়োজনে এই জায়গায় হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরও রাখতে পারেন।

প্রয়োজনে এআই-এর সাহায্য নিন: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিভিন্ন সফটওয়্যার বা ওয়েবসাইটের কল্যাণে গুছিয়ে ই–মেইল লেখা এখন অনেকটাই সহজ হয়ে গেছে। চ্যাটজিপিটির মতো প্ল্যাটফর্মকে সঠিকভাবে নির্দেশনা দিতে পারলে আপনার বক্তব্যটা গুছিয়ে লিখিয়ে নিতে পারবেন। এখন জিমেইলেও এআই-সহায়তা নিয়ে ই–মেইল লেখা যায়। চাইলে এই সহায়তা কাজে লাগাতে পারেন।

আরও পড়ুনজীবন সহজ করবে গুগল ক্রোমের এই ৫ এক্সটেনশন০৯ মার্চ ২০২৫যা এড়িয়ে চলবেন

কোনো ইংরেজি শব্দের সংক্ষিপ্ত রূপ বা চ্যাটিংয়ের ভাষা (যেমন: u, plz, tnx) এড়িয়ে চলুন। ইমোজি বা অপ্রাসঙ্গিক ছবি ই–মেইলে যুক্ত করবেন না। সঠিক বানানে ই–মেইল লিখুন। সাধারণ ব্যাকরণ ভুল করা যাবে না। ব্যক্তিগত তথ্য বা আবেগপ্রবণ ভাষা এড়িয়ে চলুন।

ই–মেইলের বডিতে কিছু না লিখে অ্যাটাচমেন্ট পাঠিয়ে দেবেন না। এটিও এক ধরনের অসৌজন্যমূলক আচরণ।

আরও পড়ুনযে ৫ কারণে শুরুতেই বাদ পড়তে পারে আপনার সিভি২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

দুই ম্যাচ করে নিষিদ্ধ রিয়ালের তিন খেলোয়াড়

লা লিগায় গত রোববার রাতে সেল্তা ভিগোর বিপক্ষে ২-০ গোলে হারে রিয়াল মাদ্রিদ। এই ম্যাচে লাল কার্ড দেখেন রিয়ালের তিন খেলোয়াড়। লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন দুই ডিফেন্ডার ফ্রান গার্সিয়া ও আলভারো ক্যারেরাস। শেষ বাঁশি বাজার পর বেঞ্চ থেকে লাল কার্ড দেখেন এনদ্রিক। লা লিগার শৃঙ্খলা কমিটি গতকাল শাস্তিস্বরূপ এনদ্রিক, ক্যারেরাস ও দানি কারবাহালকে এই প্রতিযোগিতায় দুই ম্যাচ করে নিষিদ্ধ করে।

চোটের কারণে কারবাহাল এই ম্যাচ খেলেননি। তিনি বেঞ্চে ছিলেন। ম্যাচ শেষে স্টেডিয়ামের টানেলে রেফারিদের অসম্মান করার অভিযোগে তাঁকে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এনদ্রিক নিষেধাজ্ঞা পান রেফারিদের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানানোয়। ক্যারেরাস রেফারিদের প্রতি অবজ্ঞা ও অসম্মানজনক আচরণের জন্য এই শাস্তি পেয়েছেন।

সেদিন ম্যাচের ৬৪ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন রিয়ালের লেফট ব্যাক ফ্রান গার্সিয়া। যোগ করা সময়ে লাল কার্ড দেখেন ক্যারেরাস। হারের পর রিয়াল কোচ জাবি আলোনসো রেফারির প্রতি ক্ষোভ ঝাড়েন, ‘রেফারিং ভালো লাগেনি আমার।’

স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’ জানিয়েছে, রেফারি আলেহান্দ্রো কুইন্তেরো তাঁর ম্যাচ প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যে দুটি ফাউল করায় ফ্রান গার্সিয়াকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখানোর পর ম্যাচের উত্তেজনা বেড়ে যায়। একদম শেষ দিকে রদ্রিগো, ফেদে ভালভের্দে ও ক্যারেরাস ক্ষোভ ঝেড়ে ম্যাচকে আরও উত্তপ্ত করে তোলেন। শেষ বাঁশি বাজার পর এনদ্রিক ম্যাচের চতুর্থ অফিশিয়ালের প্রতি তেড়ে যান। বেঞ্চের সতীর্থরা এ সময় তাঁকে থামান। ম্যাচ শেষে টানেলে কারবাহাল রেফারি কুইন্তেরোকে অপমানসূচক কথা বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

আরও পড়ুনসৌদি আরবের লিগ নতুন করে ডাকছে সালাহকে১ ঘণ্টা আগে

লা লিগায় আগামী রোববার আলাভেসের মাঠে নামবে রিয়াল। এই ম্যাচে এনদ্রিক, ক্যারেরাস, ফ্রান গার্সিয়া ও কারবাহালকে পাবেন না কোচ জাবি আলোনসো। গার্সিয়া লাল কার্ড দেখায় এমনিতেই এক ম্যাচ নিষেধাজ্ঞার কারণে এই ম্যাচে খেলতে পারবেন না। বাকি তিন খেলোয়াড়কে আলাভেস ম্যাচের পাশাপাশি ২১ ডিসেম্বর সেভিয়ার বিপক্ষেও মাঠের বাইরে থাকতে হবে। ১৬ ম্যাচে ৪০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা বার্সেলোনার সঙ্গে ৪ পয়েন্ট ব্যবধানে পিছিয়ে দুইয়ে রিয়াল।

আলোনসোর দলের সময়টা মোটেও ভালো যাচ্ছে না। চ্যাম্পিয়নস লিগে গতকাল রাতে ঘরের মাঠে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে ২-১ গোলে হারে রিয়াল। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সর্বশেষ ৮ ম্যাচের মাত্র ২টিতে জিতেছে আলোনসোর দল।

আরও পড়ুন৮ ম্যাচে মাত্র ২ জয় রিয়ালের, চাকরি হারানোর শঙ্কার মুখেও ‘ইতিবাচক’ আলোনসো৫ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ