দুদকের সামনে জিএম কাদেরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন
Published: 20th, April 2025 GMT
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন জাতীয় পার্টির এক অংশের নেতাকর্মীরা।
রবিবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কার্যালয়ের সামনে পার্টির নেতাকর্মীরা এই কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় তাদের হাতে জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে নানা শ্লোগান সম্বলিত ব্যানার ফেস্টুন দেখা যায়।
মানববন্ধনে বক্তারা জিএম কাদেরকে ‘সুবিধাভোগী আওয়ামী ফ্যসিস্টের দোসর’ উল্লেখ করে বলেন, “জিএম কাদের সরকারি সুবিধা নিয়ে আওয়ামী লীগের কাছে শুধু জাতীয় পার্টিকে বিক্রি করেনি, নেতাকর্মীদের মনোনয়নও বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন। বিগত নির্বাচনে তার প্রত্যক্ষ মদদে আওয়ামী লীগ নির্বাচন করার বৈধতা পায়, আর এ কারণে বিরোধীদলের নেতা, উপনেতাসহ সব ধরনের সরকারি সুবিধা উপহার হিসেবে পেয়েছেন। আওয়ামী লীগের পতনের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি সংসদ থেকে পদতাগ করেননি বরং সংসদ বিলুপ্ত হওয়া পর্যন্ত বিরোধীনেতার সুবিধা ভোগ করে তিনি যে ফ্যসিস্টের দোসর ছিলেন তা প্রমাণ করেছেন।”
আরো পড়ুন:
জিএম কাদেরকে গ্রেপ্তার দাবি রওশন গ্রুপের
আ.
মানববন্ধনে জাপা নেতারা বলেন, “জাতীয় পার্টি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের হাতেগড়া সন্তান। যা সাবেক রাষ্ট্রপতির অসুস্থতার সুযোগে চেয়ারম্যানের পদ দখল করে মনোনয়ন বাণিজ্য, ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে মিলে দুর্নীতি ও নানা অপকর্ম করে জিএম কাদের নিজ হাতে এই সন্তানকে হত্যা করেছেন। আমরা পার্টির নেতাকর্মীরা তার কবল থেকে জাতীয় পার্টির মুক্তি চাই। সততার আড়ালে ভণ্ড রাজনীতিক জিএম কাদেরের শাস্তি চাই।”
তারা বলেন, “দুর্নীতিবাজ জিএম কাদের ও তার স্ত্রী শেরিফা কাদেরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান চলছে। তাছাড়া জিএম কাদের ফ্যসিস্টের দোসর হিসেবে একাধিক হত্যা মামলারও আসামি। এসব মামলায় আসামিরা জেলে থাকলেও ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। তাই আমরা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও দুদকের প্রতি অবিলম্বে জি এম কাদেরকে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।”
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কো- চেয়ারম্যান সুনীল শুভ রায়, প্রেসিডিয়াম সদস্য খন্দকার মনিরুজ্জামান টিটু, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক খোরশেদ আলম খুশু, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ইদ্রিস আলীসহ ঢাকা মহানগর ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ এম ক দ র এম ক দ র ন ত কর ম জ এম ক আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
এক ডাক্তারের বদলি বাতিল, আরেকজনের অপসারণ চাইলেন চাটমোহরবাসী
পাবনার চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ‘গরিবের ডাক্তার’ হিসেবে পরিচিত আলমগীর হোসেনের বদলি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন সাধারণ মানুষ।
একইসঙ্গে নানা অনিয়ম, চিকিৎসা বাণিজ্য এবং রোগী হয়রানির অভিযোগে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ওমর ফারুক বুলবুলকে অপসারণের দাবি জানান তারা। এ সময় দাপ্তরিক কাজে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা পাবনার সিভিল সার্জনকে অবরুদ্ধ করে রাখেন বিক্ষোভকারীরা।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল দশটায় চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ফটকের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, হাসপাতালে জরুরি রোগীরা যথাযথ চিকিৎসা না পেয়ে পাবনা সদর হাসপাতাল বা রাজশাহী মেডিকেলে যেতে বাধ্য হয়। ভর্তি হওয়া রোগীরাও সঠিক সেবা পাচ্ছেন না। এ ছাড়া হাসপাতালে দুর্নীতি, চিকিৎসা বাণিজ্য ও প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচারিতা এখন নিয়মিত চিত্র হয়ে উঠেছে।
বক্তারা বলেন, ডা. আলমগীর হোসেন দীর্ঘদিন ধরে গরিব ও অসহায় রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন। তিনি অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা লিখতেন না এবং কোনো কমিশনভিত্তিক সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। যে কারণে তিনি গরীবের ডাক্তার হিসেবে সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। হাসপাতালের কিছু চিকিৎসক এবং টেস্ট সিন্ডিকেটের স্বার্থে তিনি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। সে কারণে তাকে মাত্র এক বছরের মাথায় সুজানগর হাসপাতালে বদলি করা হয়েছে।
বক্তারা বলেন, এ সবের পেছনে কলকাঠি নাড়ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ওমর ফারুক বুলবুল। তিনি দীর্ঘদিন হাসপাতালে থাকায় সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। তিনি নানা অনিয়ম দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছেন। তার কারণে ভালো কোনো চিকিৎসক এখানে বেশি দিন থাকতে পারেন না। তিনি পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতার আত্মীয় পরিচয় দিয়ে সবসময় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে চলেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরও তিনি তার ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে চলছেন।
এ কারণে বিক্ষোভকারীরা আলমগীর হোসেনের বদলি বাতিল করে বর্তমান কর্মস্থলে বহাল এবং ওমর ফারুক বুলবুলকে অপসারণের দাবি জানান।
এ দিন দাপ্তরিক কাজে চাটমোহর হাসপাতালে যান পাবনার সিভিল সার্জন ডা. আবুল কালাম আজাদ। এক পর্যায়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কক্ষে বসে থাকা সিভিল সার্জন ক্ষুব্ধ ছাত্রজনতার তোপের মুখে পড়েন।
বিক্ষোভকারীদের দাবির মুখে ডা. আবুল কালাম আজাদ তাদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘‘তিন কার্যদিবসের মধ্যে আলমগীর হোসেনকে চাটমোহর হাসপাতাল ফেরানো হবে। এ ছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ওমর ফারুক বুলবুলের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত প্রতিবেদন পাঠানো হবে। তিনি আপাতত চাটমোহর হাসপাতালে প্রবেশ করতে পারবেন না।’’
এ বিষয়ে ওমর ফারুক বুলবুল বলেন, ‘‘সকালে আমি হাসপাতালে ছিলাম না। বিকেলে ডিউটি ছিল আমার। ওই সময় না থাকার কারণে আসলে কী হয়েছে আমি তেমন কিছু জানি না। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ বলা হয়েছে তা সঠিক নয়। আলমগীরকে বদলির বিষয়ের সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নাই।’’
ঢাকা/শাহীন//