প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল কর্মী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যার প্রতিবাদে মশাল মিছিল করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রদলের একাংশ।

রোববার (২০ এপ্রিল) রাতে বিশ্ববিদ্যালয় বিজ্ঞান ভবন থেকে শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন সরদারের নেতৃত্বে এ মিছিল করা হয়েছে। মিছিলটি ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে বাহাদুর শাহ উদ্যানে প্রদক্ষিণ করে পুনরায় সেখানে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

এ সময় তারা ‘বৈষম্যের খুনিরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘তুমি কে, আমি কে, পারভেজ পারভেজ’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।

সমাবেশে সুমন সরদার বলেন, “আমাদের ভাই পারভেজকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজে স্পষ্ট এর প্রমাণ রয়েছে। সেখানে থাকা চারজন বৈষম্যবিরোধীর ব্যানারে রাজনীতি করেন।”

তিনি বলেন, “আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে বিচার সুনিশ্চিত করতে হবে।”

প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “আপনি যদি এর বিচার করতে না পারেন, আপনাকে পদত্যাগ করতে হবে। আমরা হাসিনাকে হটিয়েছি। আপনি পদক্ষেপ নিতে না পারলে আপনাকেও চেয়ার থেকে নেমে যেতে হবে।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল

এছাড়াও পড়ুন:

এনবিআর বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিল চেয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি

সংস্কারবিরোধী দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে সংস্কার অধ্যাদেশ বাতিল, এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণসহ চার দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন আন্দোলনরত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন সহকারী একান্ত সচিব শাব্বীর আহমদ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতারা।

আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, সরকার সম্প্রতি একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্ব আদায়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে দুটি নতুন বিভাগ গঠনের উদ্যোগ নেয়। এতে প্রশাসন ক্যাডারের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণে রাজস্ব ব্যবস্থা চলে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

আরো পড়ুন:

‘বিভাজনমূলক’ বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ উপদেষ্টা মাহফুজের

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ ৫ সিদ্ধান্ত

স্মারক লিপিতে বলা হয়, ‘দেশের উন্নয়নের অক্সিজেন রাজস্ব আহরণের প্রাণভোমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিলুপ্তির অধ্যাদেশটি অত্যন্ত গোপনে, অতি দ্রুততার সঙ্গে এবং প্রত্যাশী সংস্থা, ব্যবসায়ী সংগঠন, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনকে অজ্ঞাত রেখে জারি করা হয়েছে। উক্ত অধ্যাদেশে জাতীয় স্বার্থকে ক্ষুণ্ন করে নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বা প্রভাবশালী মহলের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। অধ্যাদেশে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাংগঠনিক স্বাতন্ত্র্য ও পেশাগত স্বকীয়তাকে অস্বীকার করা হয়েছে এবং রাষ্ট্রের অর্থনীতির মূল কাঠামো বিনষ্ট করে রাজস্ব আহরণের প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেওয়া হয়েছে। কার্যক্রমটি বিদ্যমান সাংবিধানিক কাঠামোর সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। পাশাপাশি রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় অযাচিত হস্তক্ষেপের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় রাজস্ব ব্যবস্থাপনার সার্বিক কার্যকারিতা বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, গত ২০ মে অর্থ উপদেষ্টার আমন্ত্রণে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’ এর ১৩ জন প্রতিনিধি অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি আলোচনা সভায় অংশ নেয়। আমাদেরকে উক্ত আলোচনা সভায় নিজেদের মতামত ও উদ্বেগ প্রকাশ এবং তার সপক্ষে যুক্তি উপস্থাপনের যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হবে বলে সভার আগে আশ্বস্ত করা হলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যায়নি। অনাকাঙ্খিত স্বল্প সময়ের মধ্যে আমাদের কথা বলার সুযোগ দেওয়া এবং সেই মতামত অর্থ উপদেষ্টা আমলে না নেওয়ায় দুঃখজনক হলেও জানাতে হচ্ছে যে, অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে প্রতিনিধি দলের বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি।’

এতে বলা হয়, ‘এই নতুন বাংলাদেশ তরুণদের আকাঙ্ক্ষার ওপর দাঁড়িয়ে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করেছে। প্রধান উপদেষ্টা বরাবরই তরুণদের ওপর আস্থা রেখেছেন। আমরা অনুরোধ করছি, তারই প্রতিফলন হিসেবে রাজস্ব সংস্কার নিয়ে এনবিআরের এই তরুণ অফিসারদের আকাঙ্ক্ষার কথা, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজস্ব কাঠামো নিয়ে আমাদের স্বপ্নের কথা শুনেন।’

স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, ‘জুলাই বিপ্লব-পরবর্তী নতুন বাংলাদেশের একজন দায়িত্বশীল অভিভাবক হিসেবে আমরা আশা করি, আপনি দেশ, জনগণ ও অর্থনীতির বৃহত্তর স্বার্থে বাংলাদেশের মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার প্রেক্ষাপটে উন্নয়নের ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম, বাস্তব জ্ঞাননির্ভর, দক্ষ ও কার্যকর একটি রাজস্ব ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সদ্য জারিকৃত অধ্যাদেশটি বাতিলসহ আমাদের দাবিগুলো বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর উদ্যোগ নিবেন।’

আরো বলা হয়, ‘আমরা প্রত্যাশা করি, আপনি এনবিআরের ইতিবাচক ও টেকসই সংস্কারের লক্ষ্যে আমাদের পক্ষ থেকে যুক্তিপূর্ণ বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ নিশ্চিত করবেন এবং এই প্রক্রিয়ায় কর, কাস্টমস ও ভ্যাট কর্মকর্তাদের অভিজ্ঞতা ও অবদানকে যথাযথ মর্যাদা দিয়ে তাদের হৃত পেশাগত সম্মান পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবেন।’

স্মারকলিপিতে সবশেষ বলা হয়, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি-আপনার নেতৃত্বে দেশ একটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উপযুক্ত, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক এবং অংশগ্রহণমূলক রাজস্ব ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাবে, যা জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবে এবং জাতীয় অর্থনীতিকে একটি শক্তিশালী ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করবে।’

আন্দোলনরত এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে স্মারকলিপি পৌঁছে দেন অতিরিক্ত কর কমিশনার সেহেলা সিদ্দিকা অতিরিক্ত কমিশনার (কাস্টমস) হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার, উপ কর কমিশন শিহাবুল ইসলাম কুশল, কর পরিদর্শক মুতাসিম বিল্লাহ ও রাজস্ব কর্মকর্তা মো. শফিউল বসর।

ঢাকা/হাসান/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ