‘মার্চ ফর কুয়েট’ এর হুশিয়ারি বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের
Published: 23rd, April 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য ড. মুহাম্মদ মাসুদের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ। বিক্ষোভ থেকে তারা ‘মার্চ ফর কুয়েট’ কর্মসূচির হুশিয়ারি দিয়েছে।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে তারা এ কর্মসূচি পালন করে।
বিক্ষোভে ‘দফা এক দাবি এক, উপাচার্য মাসুদের পদত্যাগ’, ‘২৪ এর বাংলায়, ফ্যাসিস্টের ঠাঁই নাই’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’ ইত্যাদি স্লোগান দেওয়া হয়।
আরো পড়ুন:
ভয়হীন কুয়েট চায় ছাত্রদল
‘কুয়েট উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত অনশন চলবে’
এ সময় অন্যদের মাঝে বক্তব্য দেন, জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব গালীব ইহসান, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব মুহিব মুশফিক খান প্রমুখ।
কুয়েট উপাচার্যকে নয়া ফ্যাসিস্ট আখ্যায়িত করে গালীব ইহসান বলেন, “তিনি বহিরাগতদের দিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা করিয়ে আবার তাদের ৩৭ জনকে অবৈধভাবে বহিষ্কার করেছেন, যা বিগত ফ্যাসিবাদকেও ছাপিয়ে গেছে। যেহেতু ফ্যাসিস্ট উপচার্য পদত্যাগ করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সেহেতু তাকে আর পদত্যাগ করার মতো সম্মানের সুযোগ দেওয়া হবে না। ছাত্র জনতার রক্তে গড়া অন্তর্বর্তী সরকারের এখন একমাত্র দায়িত্ব হচ্ছে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে অনতিবিলম্বে কুয়েট উপাচার্যকে অপসারণ করা।”
তিনি শিক্ষা উপদেষ্টার সফরের সমালোচনা করে বলেন, “ছাত্রদের অনশন কর্মসূচিতে গিয়ে তাদের অনশন না ভাঙ্গিয়ে, সন্ত্রাসী উপাচার্যকে অপসারণ না করে, অন্য প্রোগ্রামে চলে যাওয়া একটি ফ্যাসিস্ট আচরণ। বাংলাদেশে আর কোনো ফ্যাসিবাদ সহ্য করা হবে না। শিক্ষা উপদেষ্টাকে ছাত্রদের সমস্যা সমাধানের জন্য বসানো হয়েছে, কারো তাবেদারি করার জন্য নয়।”
সরকার অনতিবিলম্বে কুয়েট উপাচার্যকে অপসারণ না করলে "মার্চ ফর কুয়েট" কর্মসূচি পালনের হুশিয়ারি দেন তিনি।
আবদুল ওয়াহেদ বলেন, “আমরা দেখেছি প্রায় ৪৮ ঘণ্টা অনশন করে শিক্ষার্থীরা গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে শিক্ষা উপদেষ্টা অনশনরত শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়েছেন। কিন্তু তিনি উপাচার্যর অপসারণের বিষয়ে কোনো কথা বলেননি, এটি লজ্জাজনক। এছাড়া ছাত্রদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে ছাত্র উপদেষ্টারাও কোনো কথা বলছেন না, রক্তের সঙ্গে বেইমানি করছেন।”
তিনি বলেন, “কুয়েটে অনশনরত শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনশন ও আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা, তাতেও সাড়া দিচ্ছেন না ইন্টেরিম সরকার। যদি কোনো শিক্ষার্থীর ক্ষতি হয়, তার দায়ভার শিক্ষা উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিতে হবে। কারো ক্ষতি হলে সংশ্লিষ্ট কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
ছাত্র বিক্ষোভে আরো উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম নূর শাফায়েতুল্লাহ, সহকারী সদস্য সচিব ফারজায়ান আহসান কৃতিত্ব, বাংলাদেশ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম, ঢাকা মাদরাসা-ই-আলিয়া শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক সালমান ফারসী, সদস্য সচিব মো.
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক য় ট উপ চ র য উপদ ষ ট পদত য গ সহক র
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশিদের বন্দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হবে
নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ চট্টগ্রাম বন্দরের স্থাপনা দেশি বা বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালন করছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে শুরু হওয়া অনশন চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
সকালে শতাধিক শ্রমিক প্রেসক্লাব চত্বরে জড়ো হন। একে একে বক্তব্য দেন শ্রমিক সংগঠনের বিভিন্ন নেতা-কর্মী। তাঁরা দাবি করেন, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব সক্ষমতায় সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এখানে বিদেশি অপারেটরের প্রয়োজন নেই।
স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক রিজওয়ানুর রহমান খান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব ব্যবস্থাপনাতেই ভালোভাবে চলছে। বছরে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করে এই প্রতিষ্ঠান। এমন একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। ফলে সরকারকে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।
কর্মসূচিতে বক্তারা অভিযোগ করেন, লাভজনক প্রতিষ্ঠান হয়েও নিউমুরিং টার্মিনাল ও লালদিয়া চর বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তাঁরা বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ কোনোভাবেই এটি সফল হতে দেবে না। বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া মানে দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে খেলা।
অনশন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বাম গণতান্ত্রিক জোট চট্টগ্রাম জেলা পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক শফি উদ্দিন কবির বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার কাউকে না জানিয়ে বিদেশিদের হাতে বন্দর তুলে দেওয়ার চুক্তি করেছিল। বর্তমান সরকারও সেটি পর্যালোচনা না করে বাস্তবায়ন করছে। এটি দেশের মানুষের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
চট্টগ্রাম বন্দরের চারটি কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ ও পরিচালনার জন্য বিদেশি অপারেটর নিয়োগ নিয়ে দেশে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদে শুরু হওয়া সেই প্রক্রিয়া বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও এগিয়ে নিচ্ছে।
এর আগে গত ২২ অক্টোবর ইজারা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে স্কপ। সমাবেশ শেষে বন্দর এলাকার দিকে মিছিল নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। ওই কর্মসূচি থেকেই আজকের গণ–অনশনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ২৭ অক্টোবর ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা।