খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য ড. মুহাম্মদ মাসুদের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ। বিক্ষোভ থেকে তারা ‘মার্চ ফর কুয়েট’ কর্মসূচির হুশিয়ারি দিয়েছে।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে তারা এ কর্মসূচি পালন করে।

বিক্ষোভে ‘দফা এক দাবি এক, উপাচার্য মাসুদের পদত্যাগ’, ‘২৪ এর বাংলায়, ফ্যাসিস্টের ঠাঁই নাই’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’ ইত্যাদি স্লোগান দেওয়া হয়। 

আরো পড়ুন:

ভয়হীন কুয়েট চায় ছাত্রদল

‘কুয়েট উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত অনশন চলবে’

এ সময় অন্যদের মাঝে বক্তব্য দেন, জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব গালীব ইহসান, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব মুহিব মুশফিক খান প্রমুখ।

কুয়েট উপাচার্যকে নয়া ফ্যাসিস্ট আখ্যায়িত করে গালীব ইহসান বলেন, “তিনি বহিরাগতদের দিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা করিয়ে আবার তাদের ৩৭ জনকে অবৈধভাবে বহিষ্কার করেছেন, যা বিগত ফ্যাসিবাদকেও ছাপিয়ে গেছে। যেহেতু ফ্যাসিস্ট উপচার্য পদত্যাগ করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সেহেতু তাকে আর পদত্যাগ করার মতো সম্মানের সুযোগ দেওয়া হবে না। ছাত্র জনতার রক্তে গড়া অন্তর্বর্তী সরকারের এখন একমাত্র দায়িত্ব হচ্ছে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে অনতিবিলম্বে কুয়েট উপাচার্যকে অপসারণ করা।”

তিনি শিক্ষা উপদেষ্টার সফরের সমালোচনা করে বলেন, “ছাত্রদের অনশন কর্মসূচিতে গিয়ে তাদের অনশন না ভাঙ্গিয়ে, সন্ত্রাসী উপাচার্যকে অপসারণ না করে, অন্য প্রোগ্রামে চলে যাওয়া একটি ফ্যাসিস্ট আচরণ। বাংলাদেশে আর কোনো ফ্যাসিবাদ সহ্য করা হবে না। শিক্ষা উপদেষ্টাকে ছাত্রদের সমস্যা সমাধানের জন্য বসানো হয়েছে, কারো তাবেদারি করার জন্য নয়।” 

সরকার অনতিবিলম্বে কুয়েট উপাচার্যকে অপসারণ না করলে "মার্চ ফর কুয়েট" কর্মসূচি পালনের হুশিয়ারি দেন তিনি।

আবদুল ওয়াহেদ বলেন, “আমরা দেখেছি প্রায় ৪৮ ঘণ্টা অনশন করে শিক্ষার্থীরা গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে শিক্ষা উপদেষ্টা অনশনরত শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়েছেন। কিন্তু তিনি উপাচার্যর অপসারণের বিষয়ে কোনো কথা বলেননি, এটি লজ্জাজনক। এছাড়া ছাত্রদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে ছাত্র উপদেষ্টারাও কোনো কথা বলছেন না, রক্তের সঙ্গে বেইমানি করছেন।” 

তিনি বলেন, “কুয়েটে অনশনরত শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনশন ও আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা, তাতেও সাড়া দিচ্ছেন না ইন্টেরিম সরকার। যদি কোনো শিক্ষার্থীর ক্ষতি হয়, তার দায়ভার শিক্ষা উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিতে হবে। কারো ক্ষতি হলে সংশ্লিষ্ট কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।” 

ছাত্র বিক্ষোভে আরো উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম নূর শাফায়েতুল্লাহ, সহকারী সদস্য সচিব ফারজায়ান আহসান কৃতিত্ব, বাংলাদেশ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম, ঢাকা মাদরাসা-ই-আলিয়া শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক সালমান ফারসী, সদস্য সচিব মো.

জিনাত হোসেন, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব শরীফ খান প্রমুখ।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক য় ট উপ চ র য উপদ ষ ট পদত য গ সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

৪৩তম বিসিএসে বাদ পড়া প্রার্থীরা গেজেটভুক্ত করার দাবিতে অনশনে

৪৩তম বিসিএসে দ্বিতীয় গেজেট থেকে বাদ পড়া কয়েকজন প্রার্থী গেজেটভুক্ত করা ও ভেরিফিকেশন নীতি প্রণয়নের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এ দাবিতে অনশন শুরু করেন তাঁরা।

অনশনে বসা প্রার্থীরা বলেন, ‘গেজেটের প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চলবে। কয়েকবার সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন ও পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেও সরকারের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাইনি। তাই এখন আমরণ অনশন শুরু করেছি।’

আরও পড়ুনবেসরকারি ব্যাংক নেবে অ্যাসিস্ট্যান্ট রিলেশনশিপ অফিসার, বেতন ৩০,০০০ টাকা২৭ এপ্রিল ২০২৫

আমরণ অনশনে বসা শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ পাওয়া মো. ফয়সাল চোকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘৪৩তম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত গেজেট বঞ্চিত ২২৭ প্রার্থীর গেজেট চেয়ে আমরণ অনশনে বসেছি। যত দিন না গেজেট হয়, তত দিন এ অনশন চলবে। ৪৩তম বিসিএসে গেজেটে বাদ পড়া নিরপরাধ সবার গেজেট প্রকাশ করতে হবে। পরবর্তী বিসিএসগুলোয় ভেরিফিকেশনের নামে হয়রানি বন্ধ করতে হবে এবং ভেরিফিকেশন নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।’

আমরণ অনশনে বসা প্রার্থীরা হলেন, শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ পাওয়া মো. ফয়সাল চোকদার, মো. মতিউর রহমান, এম এ হান্নান সরকার, দেবাশীষ ঘোষ ও সমরজিৎ চক্রবর্তী। আগামীকাল বুধবার তাঁদের সঙ্গে বাদ পড়া আরও কয়েকজন প্রার্থী যোগ দেবেন বলে জানান তাঁরা।

দীর্ঘ পাঁচ বছরের নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষে ৪৩তম বিসিএসের সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীরা গেজেটভুক্ত হয়ে গত ১৫ জানুয়ারি চাকরিতে যোগ দেন। কিন্তু গেজেট থেকে বাদ পড়ায় ২২৭ প্রার্থী চাকরিতে যোগ দিতে পারেননি। এরপর গেজেটভুক্ত হওয়ার দাবিতে তাঁরা গত জানুয়ারি থেকে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে আসছেন।

আরও পড়ুন৪০৪ পদে সরকারি চাকরি, আবেদন শেষ আগামীকাল১২ ঘণ্টা আগে

৪৩তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর। প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষে ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর ২ হাজার ১৬৩ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করেছিল সরকারি কর্ম কমিশন। ভেরিফিকেশন শেষে ৯৯ জনকে বাদ দিয়ে গত বছরের ১৫ অক্টোবর ২ হাজার ৬৪ জনকে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দিয়ে প্রথম গেজেট প্রকাশ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

এরপর ৩০ ডিসেম্বর ওই প্রজ্ঞাপন বাতিল করে প্রথম সুপারিশকৃত ২ হাজার ১৬৩ প্রার্থীর মধ্য থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনুপস্থিত ৪০ জন এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন বিবেচনায় সাময়িকভাবে অনুপযুক্ত ২২৭ জনসহ মোট ২৬৭ জনকে বাদ দিয়ে ১ হাজার ৮৯৬ জনকে নিয়োগের দ্বিতীয় প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

আরও পড়ুনপ্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন এক ধাপ বাড়ানোর উদ্যোগ, ভিন্নমত শিক্ষকদের২৮ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪৩তম বিসিএসে বাদ পড়া প্রার্থীরা গেজেটভুক্ত করার দাবিতে অনশনে
  • পিএসসিকে চাপ দেওয়ার মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে: উপদেষ্টা আসিফ