খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবি এবং শিক্ষার্থীদের চলমান আমরণ অনশন কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে ক্লাস বর্জন ও মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকল বর্ষের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও এসেসমেন্ট বর্জনের পাশাপাশি দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদি চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। যা নগরীর জিরো পয়েন্টে গিয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচিতে রূপ নেয়। তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪তম ব্যাচের পূর্বনির্ধারিত পরীক্ষা যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

খুবি শিক্ষার্থীরা জানান, কুয়েটের ঘটনাবলী শুধু একটি প্রতিষ্ঠানের বিষয় নয়। এটি দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার নিরাপত্তা, স্বচ্ছতা ও সম্মানজনক পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন।

এক শিক্ষার্থী বলেন, “কুয়েট শিক্ষার্থীদের দাবি আমাদেরও দাবি। আমরা চাই শিক্ষাঙ্গনে হয়রানি, দমনপীড়ন ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অবসান হোক।”

উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মিছিলে বহিরাগতদের হামলার অভিযোগ উঠে। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট জরুরি সভা ডেকে একাডেমিক কার্যক্রম ও আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে। ১৩ এপ্রিল ক্যাম্পাসে ঢুকে হল খুলে দেওয়ার জন্য দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। ১৪ এপ্রিল রাতে সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয় এবং ২ মে হল ও ৪ মে ক্লাস চালু করার ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে, শিক্ষার্থীরা সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন এবং ১৫ এপ্রিল হলের তালা ভেঙে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। সর্বশেষে গত ২১ এপ্রিল কুয়েটের ৩২ জন শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে বসেছেন। উপাচার্যের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

ঢাকা/হাসিব/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৫ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ

সম্পূরক বৃত্তি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ তিন দফা দাবিতে অনশনে বসা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন তাঁরা।

এর আগে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়।

তিন দফা দাবির অন্যটি হলো ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি প্রদান ও স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা চালু।

আজ বুধবার দুপুরে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে তিন দফা দাবিতে অনশন চালিয়ে যেতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনশনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে তাঁদের খোঁজখবর নিতে দেখা যায়।

অনশনে বসা পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন উদ্ভিদবিজ্ঞানের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফয়সাল মুরাদ ও ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ফেরদৌস শেখ, ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শাহীন মিয়া এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের অপু মুন্সী।

অনশনকারীদের মধ্যে ফয়সাল মুরাদ ও এ কে এম রাকিব অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের পেটে ব্যথা, রক্তচাপ কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে।

অনশনকারী অপু মুন্সী বলেন, পারিবারিক কারণে তাঁকে গ্রামে চলে যেতে হয়েছে। তাই গতকাল রাতে তিনি অবস্থান করতে পারেননি।

আজ অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।

এদিকে অনশনকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করবেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ কারণে শিক্ষার্থীদের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

অনশনে অংশ নেওয়া শাহীন মিয়া বলেন, প্রশাসন আগের মতোই বাহানা করে যাচ্ছে। হচ্ছে, হবে এ বক্তব্য থেকে বের হতে পারেনি প্রশাসন। আর কোনো টালবাহানা তাঁরা শুনবেন না। তাঁদের দাবি অবশ্যই মানতে হবে। তা না হলে প্রশাসনকে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে।

আরেক অনশনকারী ফয়সাল মুরাদ বলেন, প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চলছে, কিন্তু প্রশাসন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ইতিমধ্যে তিনিসহ আরও একজন অনশনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

অনশনকারী এ কে এম রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা অবস্থানসহ বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করেছি, কিন্তু তাতে প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। তাই অনশনে যেতে বাধ‍্য হয়েছি। এ ছাড়া আমাদের উপায় ছিল না। এই নখদন্তহীন প্রশাসন হয়তো আমাদের দাবি মেনে নেবে, নয়তো তাদের নিজেদের রাস্তা মাপতে হবে।’

আরও পড়ুনসম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ তিন দাবিতে অনশনে ৫ শিক্ষার্থী১৯ ঘণ্টা আগে

যতক্ষণ তিন দফা দাবি আদায় না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত অনশন চলবে জানিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যতক্ষণ শরীরে শেষ রক্তবিন্দু আছে ততক্ষণ তাঁরা অনশন চালিয়ে যাবেন। ক্লাস-পরীক্ষা শেষ করে অনেকেই এসে সংহতি প্রকাশ করছেন। সকাল থেকে এ সংখ্যা বাড়ছে।

এদিকে গতকাল রাতে অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হন। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম ডিসেম্বরের মধ্যে জকসু নির্বাচন আয়োজনের এবং জানুয়ারি মাস থেকে সম্পূরক বৃত্তি দেওয়ার আশ্বাস দেন।

তবে সুস্পষ্ট রূপরেখা ছাড়া ও প্রশাসন থেকে লিখিত না পাওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে উপাচার্যকে জানিয়েছেন অনশনকারী শিক্ষার্থীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা
  • ৩ দাবিই পূরণ চান অনশনরত জবি শিক্ষার্থীরা
  • টানা ৩০ ঘণ্টা অনশনে তিন জবি শিক্ষার্থী অসুস্থ
  • তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৫ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ
  • তিন দাবিতে অনশনে জবি শিক্ষার্থীরা
  • ডিসেম্বর মধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আশ্বাস জবি উপাচার্যের
  • জকসুর রোডম্যাপসহ ৩ দাবিতে অনশনে জবি শিক্ষার্থীরা
  • সম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ তিন দাবিতে অনশনে ৫ শিক্ষার্থী