ইউটিউব দেখে মোটরসাইকেল চুরি করতে গিয়ে ধরা
Published: 5th, May 2025 GMT
ইউটিউব দেখে শিখেছিলেন চুরির কৌশল। সেই কৌশল কাজে লাগিয়ে দুই যুবক যান মোটরসাইকেল চুরি করতে। তবে, তাদের সেই চেষ্টা সফল হয়নি। হাইড্রোলিক ব্রেক ভাঙার সময় এলাকাবাসীর হাতে আটক হয়েছেন তারা। পরে অভিযুক্তদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়। সোমবার (৫ মে) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঘটনাটি ঘটে।
আটক যুবকরা হলেন- ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বড় গড়িলা গ্রামের ফেটু মিয়ার ছেলে রাসেল হোসেন (২০) ও একই গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে মিজান হোসেন। তাদের মধ্যে রাসেল হোসেন কালীগঞ্জের সরকারি মাহতাব উদ্দিন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ও মিজান রাজমিস্ত্রির কাজ করেন।
এলাকাবাসী জানান, আজ সোমবার বিকেলে দারুশ শেফা প্রাইভেট হাসপাতালের পেছনে একটি লাল রঙের এ্যাপাসি মোটরসাইকেলের ঘাড়ের তালা ভেঙে ফেলেন দুই যুবক। যখন তারা মোটরসাইকেলটির হাইড্রলিক তালা ভাঙছিলেন তখন স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। এগিয়ে গেলে তারা সন্দেহজনক ব্যবহার করতে শুরু করে। এসময় এলাকাবাসী তাদের আটক করে। পরে দড়ি দিয়ে বেঁধে তাদের মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়। পুলিশ এসে ওই দুই যুবককে থানায় নিয়ে যায়। তাদের কাছ থেকে মোটরসাইকেল চুরির জন্য তৈরিকৃত বিশেষ চাবি উদ্ধার করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
জামিনে মুক্তি পেয়েই গ্রেপ্তার আ.
শিবচরে নদীতে নিখোঁজ তরুণীর মরদেহ উদ্ধার
আটক মিজান বলেন, “এই প্রথম মোটরসাইকেল চুরি করতে এসেছি। এর আগে কখনো চুরি করিনি। ইউটিউব দেখে মোটরসাইকেল চুরির কৌশল শিখেছি।”
মোটরসাইকেলটির মালিক সরকারি ভূষণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আরিফুল ইসলাম বলেন, “আমি মোটরসাইকেল রেখে কিছুটা দূরে কাজ করছিলাম। এসে দেখি মোটরসাইকেলের ঘাড়ের তালা ভাঙা। এরপর দেখি স্থানীয়রা দুই চোরকে ধরে রেখেছে।”
কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, “এলাকাবাসী দুই চোর ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/শাহরিয়ার/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আটক অভ য গ এল ক ব স
এছাড়াও পড়ুন:
জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ হলো একটু সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রূপান্তর এগিয়ে নেওয়া। এ জন্য যে ধরনের সংস্কার দরকার, সেই সংস্কার নিশ্চিত করা। আর কয়েক মাস পর নির্বাচন। নির্বাচন ভালোমতো করার জন্য যা যা করা দরকার, সেটি করার জন্য এখন মনোযোগ দেওয়া দরকার। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করা। পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ ফিরিয়ে আনা। অথচ এসব দিকে সরকারের মনোযোগ বা সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে না।
নির্বাচনের এসব বিষয়ে মনোযোগ না দিয়ে যেটিতে তাদের এখতিয়ার নেই, সেই দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতেই সরকারের যত আগ্রহ। রীতিমতো জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে। দেশের মানুষ, বিশেষজ্ঞ—কারও কথা না শুনে, জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা না করে ভয় দেখিয়ে একের পর এক চুক্তি করছে সরকার।
একটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করার কোনো এখতিয়ার এ রকম অস্থায়ী সরকারের থাকে না। এসবের জন্য নির্বাচিত সরকার দরকার হয়। শুধু নির্বাচিত সরকারও এভাবে করতে পারে না। নির্বাচিত সরকার এ ধরনের চুক্তি করলে সেগুলো সংসদে তুলতে হবে, সেখানে তর্ক-বিতর্ক হবে, দেশের মানুষ জানবে। আর কয় মাস পর নির্বাচন। এই সময় সরকারের এই ধরনের চুক্তিতে এত আগ্রহ কেন? বন্দর নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি যদি দেশের উন্নয়নের জন্যই হয়, তাহলে এত গোপনীয়তা, অস্বচ্ছতা ও তাড়াহুড়া কেন?
চুক্তি নিয়ে এই সরকারের অতি আগ্রহ বড় সন্দেহের কারণ। মনে হচ্ছে বিদেশি কোম্পানির কিছু লবিস্ট এই সরকার চালাচ্ছে। তাদের কাজ হলো কোনো না কোনোভাবে বিদেশি কোম্পানির স্বার্থ রক্ষায় গোপনে অস্বচ্ছভাবে চুক্তি করে ফেলা। সেটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি, যাতে পরবর্তী কোনো সরকার এসে কিছু করতে না পারে। কিন্তু এই চুক্তির বোঝা বাংলাদেশের মানুষকে ভোগ করতে হবে বহু বছর।
গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, স্বচ্ছতা নিয়মনীতি মেনে কাজ হবে, তার প্রতি এটা বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কিছু নয়। একই সঙ্গে যেসব রাজনৈতিক দল সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন সময় আলাপ-আলোচনা করছে, অথচ সরকারের জাতীয় স্বার্থবিরোধী তৎপরতা নিয়ে তারা যে নিশ্চুপ থাকল, সেটার দায়িত্বও তাদের নিতে হবে।
আমরা দেখেছি, এ রকম চুক্তির আগে সব সময় যুক্তি দেওয়া হয়, বিদেশি কোম্পানি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কোম্পানি। আবার মানুষের মধ্যে এই বোধ তৈরি করা হয় যে আমরা পারব না। আমাদের পক্ষে কিছুই সম্ভব নয়। বিদেশিরা এলে কাজ হবে। আবার আমরা থাকলে দুর্নীতি হবে। বিদেশিরা এলে দুর্নীতি হবে না। এই হীনম্মন্যতা তৈরি করে এবং তার ওপর ভর করে বিদেশি কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হয়। বিদেশিদের পক্ষে বিজ্ঞাপনী প্রচার চালাতে থাকে তাদের সুবিধাভোগী দেশি লোকজন। কিন্তু বিদেশিরা এলে যে দুর্নীতি হবে না, সেটার নিশ্চয়তা কীভাবে দেওয়া হয়? আন্তর্জাতিকভাবে কি দুর্নীতি হয় না? চুক্তির আগে মাশুল যে বাড়ানো হলো, এটাও তো দুর্নীতির একটা ধরন।
বিদেশি কোম্পানি যে দক্ষ, আন্তর্জাতিক যে স্বীকৃতি, সেই কোম্পানিগুলো কিন্তু এমনিতেই গড়ে ওঠেনি। জাতীয় সক্ষমতার প্রক্রিয়ার মধ্যে গড়ে ওঠেছে এসব কোম্পানি। বাংলাদেশকেও জাতীয় সক্ষমতার ওপর দাঁড়াতে হবে। সে জন্য নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। একটা দেশ শক্তভাবে দাঁড়াতে পারে, যখন নিজের সক্ষমতা তৈরি হয়। এই সরকার দেশকে বিপন্ন করে তার উল্টো দিকে যাত্রা করছে।
লেখক পরিচয়: অর্থনীতিবিদ ও সম্পাদক, সর্বজনকথা