স্বপ্নটা ছিল ট্রেবল জয়ের। স্বপ্নটা ছিল ১০ বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফি পুনরুদ্ধারের। কোনোটাই হলো না। গতকাল রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগ ইন্টার মিলানের কাছে ৪-৩ গোলে (দুই লেগ মিলিয়ে ৭-৬) হেরে স্বপ্ন ভেঙেছে বার্সার। স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণায় মুষড়ে পড়েছেন দলের তিন তারকা লামিনে ইয়ামাল, রবার্ট লেভানডফস্কি, রাফিনিয়াও।

ব্যালন ডি’অর জয়ের সম্ভাব্য তালিকা থাকায় এই তিন ফুটবলারের জন্য এই হার বড় ধরনের ধাক্কা হয়েছে এসেছে। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর মাঠেই ভেঙে পড়তে দেখা গেছে তাঁদের। চ্যাম্পিয়নস লিগে ব্যর্থতা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খোলাচিঠিও লিখেছেন এই তিনজন।

বলেছেন, ঘুরে দাঁড়িয়ে আবার ফিরে আসবেন তাঁরা, থামবেন না চ্যাম্পিয়নস লিগ না জিতে। পাশাপাশি এখনো যে লা লিগা শিরোপা জয়ের স্বপ্ন বেঁচে আছে, সেটাও জানাতে ভোলেননি।

আরও পড়ুনইয়ামালের একের পর এক শট ঠেকিয়ে মহানাটকের নায়ক সমার৪ ঘণ্টা আগে

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে নিজের মুষড়ে পড়ার ছবি দিয়ে ইয়ামাল লিখেছেন, ‘আমরা নিজেদের সবকিছু দিয়েছি। এই বছর সম্ভব হয়নি। কিন্তু আমরা ফিরে আসব, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আমরা এই ক্লাবকে তার যোগ্য জায়গা শীর্ষে পৌঁছে না দিয়ে থামব না। আমি আমার প্রতিজ্ঞা রাখব এবং এটা (চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফি) বার্সেলোনায় ফিরিয়ে আনব। এটা অর্জনের আগপর্যন্ত থামব না। তবে রোববার আমাদের আরেকটি ফাইনাল (লা লিগায় রিয়াল মাদ্রিদে বিপক্ষে এল ক্লাসিকো) আছে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বার্সা দীর্ঘজীবী হোক।’

ম্যাচের একাধিক মুহূর্তের ছবি দেওয়ার পাশাপাশি দর্শকদের ছবিও পোস্ট করেছেন লেভানডফস্কি। আর ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘আমরা নিজেদের সবটা দিয়েছি এবং কাছাকাছি গিয়েছি। এই যাত্রা নিয়ে আমি গর্বিত। সমর্থকদের সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা। আরও অনেক কিছু আসবে। আমরা একসঙ্গে চেষ্টা করে যাব।’

ইয়ামালের মতোই ভেঙে পড়ার ছবির পাশাপাশি কান্নার ছবিও পোস্ট করেছেন রাফিনিয়া। সঙ্গে লিখেছেন, ‘আমরা আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসব। ধন্যবাদ বার্সার সব সমর্থককে। আমরা এখনো ঐক্যবদ্ধ আছি। এই মৌসুম এখনো শেষ হয়নি। যতই দিন যাচ্ছে, এই জার্সি নিয়ে আমি আরও বেশি গর্বিত হচ্ছি। এই দল নিয়ে গর্বিত হচ্ছি। বার্সা দীর্ঘজীবী হোক।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ য ম প য়নস ল গ থ মব ন

এছাড়াও পড়ুন:

ফর্দো পারমাণবিক কেন্দ্র কেন গুরুত্বপূর্ণ

নানা জল্পনা–কল্পনার অবসান ঘটিয়ে গত শনিবার রাতে ইরানের ফর্দো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। পরে ইরানের গণমাধ্যমও হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে।

ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে। এমন অভিযোগ এনে ১৩ জুন ইরানে হামলা চালায় ইসরায়েল। এরপর পাল্টা হামলা চালায় ইরানও। তখন থেকে দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে। এর মধ্যে গতকাল চলমান সংঘাতে ইসরায়েলের পক্ষ হয়ে জড়িয়ে পড়ে তার ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। এই হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ফর্দো পারমাণবিক কেন্দ্র।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের হামলা চালানো ইরানের সেই ৩ পারমাণবিক স্থাপনা কোথায়, কী আছে ২২ জুন ২০২৫

ফর্দো স্থাপনাটি সম্পর্কে এখনো অনেক তথ্য অজানা। পাহাড়ের গভীরে নির্মিত একটি সুরক্ষিত ও গোপন স্থাপনা আছে এখানে। অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট ব্যাটারির মাধ্যমে সুরক্ষিত হওয়ায় পারমাণবিক জ্বালানি সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রটিতে ইসরায়েলের পক্ষে বিমান হামলা করা সম্ভব ছিল না বলে মনে করা হতো। গতকাল ‘বাংকার বাস্টার’ বোমা ফেলে এটিকে অকার্যকর করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের বাংকারবিধ্বংসী বোমা জিবিইউ-৫৭ ব্যবহার করে এ হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। দীর্ঘদিন ধরেই ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে বাংকারবিধ্বংসী বোমা ব্যবহারের দাবি জানিয়ে আসছিল ইসরায়েল। বিশাল ওজন ও তীব্র গতিশক্তির মাধ্যমে ভূগর্ভের লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছে বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম এই বোমা। এটি শুধু যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রভান্ডারে থাকা বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমানের মাধ্যমেই নিক্ষেপ করা সম্ভব। বাংকার বাস্টার বোমা মাটির নিচে প্রায় ২০০ ফুট (৬১ মিটার) গভীরে ঢুকে বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম বলে ধারণা করা হয়।

ফর্দোকে অকার্যকর করে দেওয়ার মাধ্যমে ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্রের মালিক হওয়া থেকে বিরত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী সেখানে ৮৩ দশমিক ৭ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য ৯০ শতাংশের একেবারে কাছাকাছি।

এক মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর চালানো হামলায় বি-২ বোমারু বিমান ব্যবহার করা হয়েছিল। ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ফর্দো পারমাণিবক স্থাপনায় ছয়টি ‘বাংকারবিধ্বংসী’ বোমা নিক্ষেপ করা হয়। ইরান বারবার দাবি করে এসেছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। অপর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর আগের মূল্যায়ন অনুযায়ী, তেহরান সক্রিয়ভাবে পারমাণবিক বোমা তৈরির চেষ্টা করছে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ