জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ডিগ্রি (পাস) ও সার্টিফিকেট ২য় বর্ষ পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে। রুটিন অনুযায়ী ২৩ জুন শুরু হবে পরীক্ষা এবং শেষ হবে ২৪ জুলাই। প্রথম দিনে বাংলা জাতীয় ভাষা এবং বাংলা জাতীয় ভাষা বিকল্পপত্র কোর্সের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা প্রতিদিন দুপুর ২টায় পরীক্ষা শুরু হবে। প্রশ্নপত্রে উল্লেখিত সময় অনুযায়ী শেষ হবে পরীক্ষা।

বুধবার (৭ মে) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এ রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে।

রুটিন প্রকাশের বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, কলেজের অধ্যক্ষগণ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব-সাইট ems.

nu.ac.bd হতে কলেজের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র ডাউনলোড ও প্রিন্ট করে বিতরণ করবেন। বিতরণের আগে প্রবেশপত্রের অধ্যক্ষের নির্ধারিত স্থানে সংশ্লিষ্ট কলেজ অধ্যক্ষ মহোদয়ের স্বাক্ষর করবেন।

পরীক্ষা শুরুর ৩ দিন আগে প্রবেশপত্র বিতরণের কাজ শেষ করতে হবে। পরীক্ষার্থীরা প্রবেশপত্রে দেয়া বিষয় কোড অনুযায়ী পরীক্ষায় অংশ নিবে । ব্যবহারিক পরীক্ষার স্থান, তারিখ ও সময় পরে জানানো হবে।

ব্যবহারিক পরীক্ষার স্থান, তারিখ ও সময় পরীক্ষার্থীবৃন্দ নিজ দায়িত্বে জেনে নিবেন। ব্যবহারিক পরীক্ষার্থীদের ব্যবহারিক বিষয়ের কেন্দ্র ফি সংশ্লিষ্ট ব্যবহারিক পরীক্ষা কেন্দ্রে জমা দিতে হবে। ওয়েব-সাইট ems.nu.ac.bd হতে কলেজ পরীক্ষার্থীর রোল বিবরণী ডাউনলোড করে ২ কপি প্রিন্ট আউট নিয়ে ১ কপি সংশ্লিষ্ট কলেজে সংরক্ষণপূর্বক ১কপি কেন্দ্র ফি বাবদ আদায়কৃত ৪৫০ টাকার মধ্যে ৩০০ টাকা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (যে কেন্দ্রে সংশ্লিষ্ট কলেজের পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে সে কেন্দ্রের) কাছে পরীক্ষার ৩ দিন আগে জমা দিতে হবে। অবশিষ্ট ১৫০ টাকা দিয়ে সংশ্লিষ্ট কলেজের পরীক্ষা সংক্রান্ত ব্যয় নির্বাহ করবেন। পরীক্ষার হলে হাজিরা নেয়ার সময় মূল রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র দেখাতে হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র ক পর ক ষ স শ ল ষ ট কল জ পর ক ষ র থ র পর ক ষ কল জ র

এছাড়াও পড়ুন:

জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ হলো একটু সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রূপান্তর এগিয়ে নেওয়া। এ জন্য যে ধরনের সংস্কার দরকার, সেই সংস্কার নিশ্চিত করা। আর কয়েক মাস পর নির্বাচন। নির্বাচন ভালোমতো করার জন্য যা যা করা দরকার, সেটি করার জন্য এখন মনোযোগ দেওয়া দরকার। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করা। পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ ফিরিয়ে আনা। অথচ এসব দিকে সরকারের মনোযোগ বা সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে না।

নির্বাচনের এসব বিষয়ে মনোযোগ না দিয়ে যেটিতে তাদের এখতিয়ার নেই, সেই দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতেই সরকারের যত আগ্রহ। রীতিমতো জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে। দেশের মানুষ, বিশেষজ্ঞ—কারও কথা না শুনে, জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা না করে ভয় দেখিয়ে একের পর এক চুক্তি করছে সরকার।

একটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করার কোনো এখতিয়ার এ রকম অস্থায়ী সরকারের থাকে না। এসবের জন্য নির্বাচিত সরকার দরকার হয়। শুধু নির্বাচিত সরকারও এভাবে করতে পারে না। নির্বাচিত সরকার এ ধরনের চুক্তি করলে সেগুলো সংসদে তুলতে হবে, সেখানে তর্ক-বিতর্ক হবে, দেশের মানুষ জানবে। আর কয় মাস পর নির্বাচন। এই সময় সরকারের এই ধরনের চুক্তিতে এত আগ্রহ কেন? বন্দর নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি যদি দেশের উন্নয়নের জন্যই হয়, তাহলে এত গোপনীয়তা, অস্বচ্ছতা ও তাড়াহুড়া কেন?

চুক্তি নিয়ে এই সরকারের অতি আগ্রহ বড় সন্দেহের কারণ। মনে হচ্ছে বিদেশি কোম্পানির কিছু লবিস্ট এই সরকার চালাচ্ছে। তাদের কাজ হলো কোনো না কোনোভাবে বিদেশি কোম্পানির স্বার্থ রক্ষায় গোপনে অস্বচ্ছভাবে চুক্তি করে ফেলা। সেটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি, যাতে পরবর্তী কোনো সরকার এসে কিছু করতে না পারে। কিন্তু এই চুক্তির বোঝা বাংলাদেশের মানুষকে ভোগ করতে হবে বহু বছর।

গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, স্বচ্ছতা নিয়মনীতি মেনে কাজ হবে, তার প্রতি এটা বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কিছু নয়। একই সঙ্গে যেসব রাজনৈতিক দল সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন সময় আলাপ-আলোচনা করছে, অথচ সরকারের জাতীয় স্বার্থবিরোধী তৎপরতা নিয়ে তারা যে নিশ্চুপ থাকল, সেটার দায়িত্বও তাদের নিতে হবে।

আমরা দেখেছি, এ রকম চুক্তির আগে সব সময় যুক্তি দেওয়া হয়, বিদেশি কোম্পানি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কোম্পানি। আবার মানুষের মধ্যে এই বোধ তৈরি করা হয় যে আমরা পারব না। আমাদের পক্ষে কিছুই সম্ভব নয়। বিদেশিরা এলে কাজ হবে। আবার আমরা থাকলে দুর্নীতি হবে। বিদেশিরা এলে দুর্নীতি হবে না। এই হীনম্মন্যতা তৈরি করে এবং তার ওপর ভর করে বিদেশি কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হয়। বিদেশিদের পক্ষে বিজ্ঞাপনী প্রচার চালাতে থাকে তাদের সুবিধাভোগী দেশি লোকজন। কিন্তু বিদেশিরা এলে যে দুর্নীতি হবে না, সেটার নিশ্চয়তা কীভাবে দেওয়া হয়? আন্তর্জাতিকভাবে কি দুর্নীতি হয় না? চুক্তির আগে মাশুল যে বাড়ানো হলো, এটাও তো দুর্নীতির একটা ধরন।

বিদেশি কোম্পানি যে দক্ষ, আন্তর্জাতিক যে স্বীকৃতি, সেই কোম্পানিগুলো কিন্তু এমনিতেই গড়ে ওঠেনি। জাতীয় সক্ষমতার প্রক্রিয়ার মধ্যে গড়ে ওঠেছে এসব কোম্পানি। বাংলাদেশকেও জাতীয় সক্ষমতার ওপর দাঁড়াতে হবে। সে জন্য নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। একটা দেশ শক্তভাবে দাঁড়াতে পারে, যখন নিজের সক্ষমতা তৈরি হয়। এই সরকার দেশকে বিপন্ন করে তার উল্টো দিকে যাত্রা করছে।

লেখক পরিচয়: অর্থনীতিবিদ ও সম্পাদক, সর্বজনকথা

সম্পর্কিত নিবন্ধ