এখনই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কথা ভাবছে না পাকিস্তান: খাজা আসিফ
Published: 10th, May 2025 GMT
পাকিস্তান এখনো পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কথা ভাবছে না বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। তিনি বলেন, পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার দেখভালের দায়িত্বে থাকা ন্যাশনাল কমান্ড অথরিটির কোনো বৈঠক হয়নি বা হবে বলেও নির্ধারিত নেই।
ভারতের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি হামলা ও উত্তেজনার মধ্যে আজ শনিবার জিও নিউজকে তিনি এ কথা বলেন।
খাজা আসিফ বলেন, ‘বিশ্বকে বলতে চাই যে (তেমন পরিস্থিতি হলে) তা কেবল অঞ্চলের মধ্যে আবদ্ধ থাকবে না, আরও বিস্তৃত এলাকায় ধ্বংসযজ্ঞ হতে পারে। ভারত যে পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে, তাতে আমাদের হাতে বিকল্প সীমিত হয়ে আসছে।’
এদিকে আরি টিভিকে দেওয়া খাজা আসিফের মন্তব্য তুলে ধরেছে রয়টার্স। সেখানে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আপনি যেটার কথা বলছেন (পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার), সেটা তো হাতে রয়েছেই— কিন্তু চলুন আমরা সেটা নিয়ে কথা না বলি। আমরা এটাকে খুব দূরবর্তী একটা সম্ভাবনা হিসেবে বিবেচনা করি; বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটা নিয়ে আলোচনা করাও ঠিক নয়।
তিনি আরও বলেন, ‘ওই পর্যায়ে যাওয়ার আগে আমার মনে হয়, উত্তেজনা কমে আসবে। ন্যাশনাল কমান্ড অথরিটির কোনো বৈঠক হয়নি, এমন কোনো বৈঠক ডাকাও হয়নি।’
এদিকে আজ শনিবার দুপুরে কয়েকটি পাকিস্তানি ও ভারতীয় গণমাধ্যম দুই দেশের সামরিক কর্মকর্তা পর্যায়ে ফোনে কথা হয়েছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়লেও পরে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার জানান, তারা জানামতে এমন কোনো আলাপচারিতা হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নানা দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। কিন্তু আমার জানামতে ভারতের কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে এখনও সরাসরি কোনো কথা হয়নি। সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র এ ব্যাপারে আপনাদের আপডেট জানাতে পারবেন।’
ন্যাশনাল কমান্ড অথরিটিতে পাকিস্তানের সামরিক-বেসামরিক শীর্ষ নেতারা থাকেন, তারাই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবস্থাপনা ও এ সংক্রান্ত নীতিগত সিদ্ধান্ত নেন।
ভারতের বিরুদ্ধে শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয় ইসলামাবাদ, যার নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুস’।
এর পরপরই প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ কমান্ড অথরিটির বৈঠক ডেকেছেন বলে খবর প্রকাশ হয়। তবে রয়টার্স পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রীর মন্তব্য চেয়েও কোনো সাড়া পায়নি।
পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর মধ্যে ১৯৯৯ সালের পর হওয়া সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী এই সংঘাত এরই মধ্যে উভয় পক্ষে কয়েক ডজন মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।
উত্তেজনা কমাতে যুক্তরাষ্ট্র বারবার নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, শনিবার তাদের সঙ্গে শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭ও যুক্ত হয়েছে।
একইদিন পাকিস্তান জানিয়েছে, শুক্রবার রাত থেকে শনিবার পর্যন্ত ভারতীয় বাহিনীর গোলায় আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরে অন্তত ১৩ জন নিহত ও অর্ধশত আহত হয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। শুরু থেকে এই হামলার দায় পাকিস্তানের ওপর চাপায় ভারত। তবে পাকিস্তান এই অভিযোগ সব সময় অস্বীকার করে আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করে। ওই ঘটনার জেরে পাল্টাপাল্টি বিভিন্ন পদক্ষেপও নিয়েছে দেশ দুটি। এমন উত্তেজনার মধ্যে গত মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতে পাকিস্তান ও পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে হামলা চালায় ভারত। এর জবাবে শুক্রবার রাত থেকে পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুস’ শুরু করেছে।
এমন অবস্থার মধ্যে আজ শনিবার উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
খানপুর হাসপাতালে বাড়ছে চুরি ছিনতাই, চরম নিরাপত্তাহীনতায় রোগীরা
নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে সম্প্রতি চুরি-ছিনতাই বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। কিন্তু এখানে দেখার কেউ নেই, বলার কেউ নেই। যার ফলে অপরাধীরা নির্বিঘ্নে তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, হাসপাতালের গাইনী বিভাগের পিছন দিকের জানালা দিয়ে প্রতি রাতে রোগী ও তাদের স্বজনদের মোবাইল ও টাকা পয়সা চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে সংঘবদ্ধ চোরের দল। এতে কেউ বাধা দিতে গেলে চোরেরা ছুরি দিয়ে আঘাত করে।
যার ফলে ভুক্তভোগীরা ছুরির ভয়ে কিছু করতে পারছে না। ঘটনার বিষয়গুলো কর্তব্যরত ডাক্তারদের জানালেও তারা ভয়ে কোন পদক্ষেপ নিতে পারছেনা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অত্র হাসপাতলের রেজিস্ট্রার-শিশু বিভাগ ডাঃ এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রতিদিনই রাতে কারো না কারো মোবাইল, স্বর্ণের চেইন ও টাকা পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে চোরেরা। কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আমার চেম্বারের এসির তার খুলে নিয়ে গেছে চোরেরা। তাদের ভয়ে কেউ কিছু করতে পারছে না। চোরেরা চুরি করে পিছনের দেওয়াল টপকে নির্বিঘ্নে বাহিরে বের হয়ে যায়।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়ে জানালেও কোন প্রকার প্রতিকার পায়নি অত্র হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনেরা। তাই এখনই এই বিষয়ে কোন পদক্ষেপ না নিলে বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশংকা রয়েছে বলে তিনি জানান।
হাসপাতালে সেবা নিতে আসা প্রসূতি বিভাগের রোগী ও তাদের স্বজনেরা বলেন, আমরা খুব ভয়ে রাত্রি যাপন করি কেননা জানালার পাশে যাদের সিট তাদের উপর চোরেরা আক্রমণ করে বেশি। পিছনের জানালা দিয়ে অনায়াসেই চোরেরা সবকিছু হাতিয়ে নিয়ে যায়। বাধা দিতে গেলে অনেক বড় ছুরি দিয়ে আঘাত করে। ভয়ে আমরা নিজেদের রক্ষা করতে গিয়ে স্বর্বস্ব হারাতে হচ্ছে।
তবে এখনই যদি এই চোরদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ না নেওয়া হয় তাহলে হয়তো চোরদের ছুরির আঘাতে কোন রোগী অথবা তাদের স্বজন প্রাণ হারাতে পারে।
তবে স্থানীয়রা জানায় চোর ও ছিনতাইকারিরা এখানকার চিহ্নিত মাদকসেবী ও মাদক বিক্রেতা। মাদকের ছড়াছড়ির কারণে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। তার মধ্যে আবার কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাৎতো রয়েছেই।
হাসপাতালের স্টাফরা জানান, হাসপাতালের পিছনের দুই পাশের রাস্তায় সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগ করা হয়। কেননা চোরেরা মেইন রাস্তার ওয়াল টপকে হাসপাতালের ভিতরে ঢুরে এই চুরির ঘটনা ঘটিয়ে নির্বিঘ্নে আবার ওয়াল টপকে বাহিরে বের হয়ে যায়। এ ব্যপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন তড়িৎ গতিতে ব্যবস্থা নিবে বলে সচেতন মহল আশাবাদী।