অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, “বিগত সময়ে কিছু কিছু মিডিয়া মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। বিরোধীদলের অধিকার কেঁড়ে নিয়েছিল। অনেক মিডিয়া আওয়ামী লীগের টুলস হিসেবে কাজ করেছে।”

তিনি বলেন, “আমরা চাই, আমাদের সাংবাদিকরা দায়িত্বশীল ও প্রশংসনীয় হোক। যাতে মিডিয়ার লাভ। কেননা সামনে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসবে, তখন স্বাধীন সাংবাদিকতা করতে পারবেন। এখনই আপনারা আপনাদের জায়গা গড়ে নেন।” 

শনিবার (১০ মে) বিকেলে যশোরের কেশবপুর পাথরা পল্লী উন্নয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪২ বছর পূর্তি উপলক্ষে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন। 

শফিকুল আলম বলেন, “আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে আমরা আমাদের সরকারের বিবৃতি দিয়েছি। আজ রাতে মিটিং আছে। আইসিটি অ্যাক্টের অধ্যাদেশ প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা করতেই আজ রাতে উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি মিটিং।”

তিনি  বলেন, “বাংলাদেশে ফ্যাসিস্টের পতনে তাদের (ভারতের) মাথা খারাপ হয়ে গেছে। যে কারণে তারা আমাদের কয়েকটি মিডিয়ার সম্প্রচার সেদেশে বন্ধ করেছে। আমরা তা করতে চাই না। আমরা অনেক দিন থেকে দেখছি, তারা আমাদের নিয়ে প্রোপান্ডা ছড়াচ্ছে। ভারতীয় গণমাধ্যমে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা নেই, বরং জোরে কথা বলে নাটক করে বিনোদন দেওয়াটা যেন তাদের সাংবাদিকতা। সেক্ষেত্রে আমাদের সাংবাদিকতা অনেক দায়িত্বশীল ও প্রশংসনীয়। পক্ষান্তরে বাংলাদেশের যে মিডিয়াগুলো বন্ধ করা হয়েছে তারা অনেক ভালো নিউজ করে। এটা দুর্ভাগ্যজনক।”

ভুয়া মামলা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, “আমরা কাউকে কোনো মামলা দিয়ে হয়রানি করায় বিশ্বাসী না। আমরা কি কোনো মামলা দিচ্ছি, মামলা তো দিচ্ছে রাজনৈতিক দল। আমাদের সরকার বলে দিয়েছে, তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। কাউকে হয়রানি করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়।” 

শফিকুল আলম বলেন, “সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের দেশ ত্যাগের ঘটনায় কারা জড়িত সে ব্যাপারে অনুসন্ধান চলছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, বাকি জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।” 

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং-এর সদস্য ও  পাথরা পল্লী উন্নয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি এস এম রাশিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম, পুলিশ সুপার রওনক জাহান, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আছাদুজ্জামান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রেকসোনা খাতুন। 

ঢাকা/রিটন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র স উপদ ষ ট ব দ কত

এছাড়াও পড়ুন:

অপরাধীদের ধরতে সারা দেশে চিরুনি অভিযানের ঘোষণা

অপরাধীদের ধরতে এখন থেকেই দেশজুড়ে বিশেষ অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

রবিবার (১৩ জুলাই) সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। 

তিনি বলেন, “পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার যেকোনো সময় চিহ্নিত অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের ধরতে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করবে।” 

কবে থেকে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে জানতে চাইলে তি‌নি জানান, ‘“এটা এখন থেকেই।”

তিনি আরো বলেন, “খুন, চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, সন্ত্রাস, অপহরণ, নারী নির্যাতন, মব সহিংসতা, মাদক চোরাচালানসহ সব ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। এই কাজে সাধারণ জনগণসহ সবার সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। সরকার জনশৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী যেকোনো কার্যক্রম কঠোরভাবে দমন করবে।”

সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।

বৈঠকে আলোচনার প্রধান বিষয় ছিল সম্প্রতি ঢাকার মিটফোর্ডে ঘটে যাওয়া ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যা। 

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “আজ‌কের বৈঠ‌কে মিটফোর্ডের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এ ধর‌নের ঘটনা একটা সভ‌্য সমা‌জে কো‌নো অবস্থায় মে‌নে নেওয়া যায় না।”

তিনি জানান, শুধু মিডফোর্ড নয়—সম্প্রতি দেশজুড়ে যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সেগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিষয়ে সরকার বদ্ধপরিকর। এসব ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে, দ্রুতই তারা অ্যাকশনে যাচ্ছে এবং অপরাধীদের গ্রেপ্তার করছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, বৈঠকে সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, চোরাচালান ও সন্ত্রাস দমন, সংঘবদ্ধ চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, উস্কানিমূলক সাইবার প্রচারণা রোধ, নারী ও শিশু নির্যাতন এবং ধর্ষণের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা, মাদকের অপব্যবহার রোধ, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান, গার্মেন্টস শিল্প এলাকায় নিরাপত্তা, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা—সবই আলোচনায় এসেছে।

এছাড়া, জুলাই মাসে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের শহীদদের মামলা ও তদন্ত অগ্রগতির বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। তবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে মিটফোর্ডের ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যাকাণ্ড।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ