কিছু মিডিয়া স্বেরাচারী শাসকের টুলস ছিল: শফিকুল আলম
Published: 10th, May 2025 GMT
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, “বিগত সময়ে কিছু কিছু মিডিয়া মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। বিরোধীদলের অধিকার কেঁড়ে নিয়েছিল। অনেক মিডিয়া আওয়ামী লীগের টুলস হিসেবে কাজ করেছে।”
তিনি বলেন, “আমরা চাই, আমাদের সাংবাদিকরা দায়িত্বশীল ও প্রশংসনীয় হোক। যাতে মিডিয়ার লাভ। কেননা সামনে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসবে, তখন স্বাধীন সাংবাদিকতা করতে পারবেন। এখনই আপনারা আপনাদের জায়গা গড়ে নেন।”
শনিবার (১০ মে) বিকেলে যশোরের কেশবপুর পাথরা পল্লী উন্নয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪২ বছর পূর্তি উপলক্ষে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, “আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে আমরা আমাদের সরকারের বিবৃতি দিয়েছি। আজ রাতে মিটিং আছে। আইসিটি অ্যাক্টের অধ্যাদেশ প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা করতেই আজ রাতে উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি মিটিং।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ফ্যাসিস্টের পতনে তাদের (ভারতের) মাথা খারাপ হয়ে গেছে। যে কারণে তারা আমাদের কয়েকটি মিডিয়ার সম্প্রচার সেদেশে বন্ধ করেছে। আমরা তা করতে চাই না। আমরা অনেক দিন থেকে দেখছি, তারা আমাদের নিয়ে প্রোপান্ডা ছড়াচ্ছে। ভারতীয় গণমাধ্যমে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা নেই, বরং জোরে কথা বলে নাটক করে বিনোদন দেওয়াটা যেন তাদের সাংবাদিকতা। সেক্ষেত্রে আমাদের সাংবাদিকতা অনেক দায়িত্বশীল ও প্রশংসনীয়। পক্ষান্তরে বাংলাদেশের যে মিডিয়াগুলো বন্ধ করা হয়েছে তারা অনেক ভালো নিউজ করে। এটা দুর্ভাগ্যজনক।”
ভুয়া মামলা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, “আমরা কাউকে কোনো মামলা দিয়ে হয়রানি করায় বিশ্বাসী না। আমরা কি কোনো মামলা দিচ্ছি, মামলা তো দিচ্ছে রাজনৈতিক দল। আমাদের সরকার বলে দিয়েছে, তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। কাউকে হয়রানি করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়।”
শফিকুল আলম বলেন, “সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের দেশ ত্যাগের ঘটনায় কারা জড়িত সে ব্যাপারে অনুসন্ধান চলছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, বাকি জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।”
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং-এর সদস্য ও পাথরা পল্লী উন্নয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি এস এম রাশিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম, পুলিশ সুপার রওনক জাহান, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আছাদুজ্জামান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রেকসোনা খাতুন।
ঢাকা/রিটন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র স উপদ ষ ট ব দ কত
এছাড়াও পড়ুন:
তফসিলকে স্বাগত জানিয়েছে জামায়াত, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। একই সঙ্গে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সন্ত্রাসী গ্রেপ্তারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসংক্রান্ত জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে দলটি।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মগবাজারে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান জামায়াতের কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।
এর আগে সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোটও হবে একই দিন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নির্বাচন নিয়ে যে অনিশ্চয়তা ও শঙ্কা ছিল, তার অবসান হয়েছে বলে মন্তব্য করেন এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। তিনি বলেন, ‘আমরা তফসিলকে স্বাগত জানাই এবং দেশবাসীকেও মোবারকবাদ জানাই।’
তফসিলের মাধ্যমে নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে নির্বাচন কমিশনের ওপর বড় দায়িত্ব বর্তেছে উল্লেখ করে জামায়তের এই নেতা বলেন, ‘সব দলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার এবং প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে।’
এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, অতীতের তিনটি নির্বাচন—২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন জাতির প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। এবার যেন সেই পুনরাবৃত্তি না ঘটে। একটি উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চান দেশবাসী।
বর্তমান পরিস্থিতিতে আদৌ সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘আমরা কয়েক দিন আগে ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল নিয়ে ইসির (নির্বাচন কমিশন) সঙ্গে বৈঠক করেছি। সেখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের উদ্বেগ জানিয়েছি। ইসি আমাদের আশ্বস্ত করেছে। এখন আমরা দেখতে চাই, তারা বাস্তবে কী পদক্ষেপ নেয়।’
তফসিল ঘোষণার পরও পাঁচ দফা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি আমরা পেয়েছি। তবে গণভোটের দাবিটি (জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট) বহাল আছে। গণভোটে সংস্কারসমূহের পক্ষে জনগণকে “হ্যাঁ” ভোট দেওয়ার আহ্বান আমরা অব্যাহত রাখব।’
শরিকদের সঙ্গে আসন সমঝোতা শিগগিরই
জামায়াতে ইসলামীসহ আট দলের জোটের আসন সমঝোতা প্রসঙ্গে এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ‘আমরা ৩০০ আসনেই প্রাথমিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। কিছু পরিবর্তন হয়েছে। তবে আট দলের শীর্ষ নেতারা আলোচনায় বসবেন। খুব শিগগিরই আমরা যৌথভাবে প্রার্থী চূড়ান্ত করব। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই ঘোষণা দিতে পারব।’
সর্বাধিক আসনে জয়ের লক্ষ্যে যেসব আসনে যাঁদের জয়ের সম্ভাবনা বেশি, তাঁকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে বলে জানান জামায়াতের এই নেতা। তিনি বলেন, আট দলের শীর্ষ নেতারা এবং বিভিন্ন দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদেরও মনোনয়ন বিবেচনায় রাখা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসাইন, ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।