এভারেস্ট বেজক্যাম্পে আছি। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে কয়েকটা দিন কেটে গেছে। শরীরে ১ হাজার ৪০০ কিলোমিটারের বেশি পথ হেঁটে আসার ধকল। এর মধ্যেই ঠিক হয়েছে ৬ মে রোটেশনে বের হব। একে একে ক্যাম্প থ্রি পর্যন্ত পৌঁছে আবার বেজক্যাম্পে নেমে আসব। এই পুরো রোটেশন এভারেস্ট অভিযানের মূল শৃঙ্গারোহণের প্রস্তুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রচণ্ড ঠান্ডা, পাতলা বাতাস ও প্রতিকূল আবহাওয়ার সঙ্গে লড়াই করে শরীরকে মানিয়ে নেওয়ার এ ধাপই যে পরবর্তী অভিযানকে সফল করে তোলে। মাকে এসবের কিছুই বলি না, শুধু বলি—ওপরে গিয়ে আবার আসব, এ কয়েক দিন নেটওয়ার্ক থাকবে না। মা তখন মায়েদের মতো করে জানতে চান, কী খেলাম, শরীর কেমন আছে, হিমালয়ের মানুষগুলো কেমন?
আমার মা একজন নিখাদ কৃষক। শৈশব থেকেই জমিতে বাবার সঙ্গে মাকেও কাজ করতে দেখেছি। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা কখনই তাঁকে বসে থাকতে দেখিনি। বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারের পুরো দায়িত্ব একা কাঁধে তুলে নিয়েছেন। জমি থেকে ঘর—সবকিছুই সামলেছেন।
মা যেমন মাটির গন্ধেই বোঝেন, কোন ফসল কেমন হবে, তেমনই বোঝেন আমার মনের ভাষা, আমার আবেগের জোয়ার-ভাটা।
‘সি টু সামিট’ অভিযানে মায়ের সঙ্গে দেখা.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারো বন্দুক হামলা, শিক্ষার্থী নিহত
যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকি স্টেট ইউনিভার্সিটির একটি আবাসিক হলে বন্দুকধারীর এলোপাথাড়ি গুলিতে এক শিক্ষার্থী নিহত এবং আরো একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুরে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
আরো পড়ুন:
ইউরোপীয় নেতাদের ‘দুর্বল’ বলে সমালোচনা করলেন ট্রাম্প
ওমরাহ পালন করতে সৌদিতে জায়েদ খান
প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলার পরেই সন্দেহভাজন বন্দুকধারীকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একই এলাকায় চার মাসের মধ্যে এটি দ্বিতীয় গুলিবর্ষণের ঘটনা। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।
ফ্রাঙ্কফোর্টের সহকারী পুলিশ প্রধান স্কট ট্রেসি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মঙ্গলবারের গুলিবর্ষণের ঘটনায় সন্দেহভাজন কেনটাকি স্টেট ইউনিভার্সিটির ছাত্র নয়। ট্রেসি বলেন, পুলিশ দ্রুত গুলিবর্ষণের ঘটনায় সাড়া দিয়েছে।
তিনি বলেন, “ফ্রাঙ্কফোর্ট পুলিশ বিশ্বাস করে যে, এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং এই মুহূর্তে ক্যাম্পাসে কোনো সক্রিয় নিরাপত্তা উদ্বেগ নেই।”
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আবাসিক হলে গুলিবিদ্ধ এক ছাত্রের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলেও তার অবস্থা স্থিতিশীল। কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে শিক্ষার্থীদের নাম প্রকাশ করছে না।
কেনটাকি স্টেট ইউনিভার্সিটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছি এবং তাদের জন্য কাউন্সেলিংসহ সম্ভাব্য সব সহায়তা প্রদান করছি।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক্স-এ পোস্ট করা একটি ভিডিও বার্তায় কেন্টাকির গভর্নর অ্যান্ডি বেশিয়ার বলেন, “গুলি চালানো একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মনে হচ্ছে এবং কোনো চলমান হুমকি নেই।”
তিনি বলেন, “আমাদের কমনওয়েলথ বা দেশে সহিংসতার কোনো স্থান নেই। আসুন আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও আমাদের কেএসইউ শিক্ষার্থীদের জন্য প্রার্থনা করি। আসুন এমন একটি পৃথিবীর জন্যও প্রার্থনা করি যেখানে এই ঘটনাগুলো না ঘটে।”
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তথ্যানুসারে, সপ্তাহের বাকি সময়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস, ফাইনাল পরীক্ষা ও ক্যাম্পাস কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়, “শিক্ষার্থীরা যদি ইচ্ছা করে বাড়ি ফিরে যেতে পারে। অতিরিক্ত নির্দেশিকা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জানানো হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি কফি সি আকাকপো এটিকে ‘অর্থহীন ট্র্যাজেডি’ বলে অভিহিত করেছেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিন বলেন, “আমরা আমাদের একজন ছাত্রের মৃত্যুতে শোকাহত। একজন অভিভাবক হিসেবে আমি কল্পনাও করতে পারি না যে, আজ আমি অভিভাবকদের কাছে যে ফোন করেছি তা পাব।”
এর আগে গত ১৭ আগস্ট, একই আবাসিক হলের কাছে কেউ একজন গাড়ি থেকে একাধিক গুলি চালিয়েছিল, যার ফলে দুজন আহত হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তথ্যানুসারে, হামলাকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল না।
কেনটাকি স্টেট ইউনিভার্সিটি ক্যাপিটল ভবন থেকে প্রায় ২ মাইল (৩.২ কিমি) পূর্বে অবস্থিত।
ঢাকা/ফিরোজ